প্রতীকী ছবি।
চাষের ক্ষতিপূরণের ফর্ম বিলিকে কেন্দ্র করে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে জখম হল দু’পক্ষের ছ’জন। শনিবার দাঁতন-১ ব্লকের তররুই গ্রাম পঞ্চায়েতের পালষণ্ডপুর ও তররুই শিবালয় মন্দির সংলগ্ন এলাকার ঘটনা। জখমদের দাঁতন গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তররুই গ্রাম পঞ্চায়েতের ছ’টি বুথ এলাকার কৃষকদের চাষের ক্ষতিপূরণের ফর্ম বিলি করা হচ্ছিল। তালিকায় ছিল নিভাইপুর পাটনা, খানিপুর,কুস্তুড়িয়া, পালানিয়া, পানশোলা, পলাশিয়া। ফর্ম দেওয়ার তালিকায় ছিল না জ্যোতি, খরাখাই, তররুই, বাকুড়পাদা, পুন্দড়া, কোটপাদা, দক্ষিণ আমডিহার নাম। এই ঘটনার জেরে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপির সমর্থকরা। এরপরেই তৃণমূল-বিজেপির সংঘর্ষ বাধে।
তৃণমূলের অভিযোগ, ফর্ম দেওয়ার সময় হঠাৎ অন্য বুথ থেকে বিজেপির কিছু লোকজন গ্রাম পঞ্চায়েতের সামনে এসে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে। পুলিশ ও তৃণমূলকর্মীরা তাদের গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের সামনে থেকে সরিয়ে দেয়। তৃণমূলের অভিযোগ, পরে এলাকায় ফিরে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের মারধর করে। আহত হন চার জন। মারধরের পাল্টা অভিযোগ জানায় বিজেপিও। মারধরে তাদের দু’জন আহত হয়েছেন বলে বিজেপির দাবি। বিজেপির অভিযোগ, এই ঘটনার পরেও তৃণমূল বাইরে থেকে লোক এনে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। দলের সমর্থকদের বাড়িতেও ভাঙচুর চালানো হয়। ঘটনায় বিজেপির তররুই বুথের সভাপতি রবীন্দ্র মিশ্র, চিত্তরঞ্জন মাইতি আহত হয়েছেন। তাদের বক্তব্য, ‘‘ফর্ম তুলতে গিয়ে দেখি আমাদের বুথের নাম নেই। পঞ্চায়েত অফিসে জানতে গেলে অতর্কিতে মারধর করা হয়। প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে অশ্লীল মন্তব্য করা হয়।’’ অভিযোগ, সংঘর্ষে তৃণমূলের তররুই পশ্চিম বুথের সভাপতি ধীরেন ভুঁইয়া, কেদার মান্না, চঞ্চল শীট, ধীরেন ভুঁইয়া আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে দু’জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহত কেদার মান্না, হরিনারায়ণ খাটুয়ার বক্তব্য, ‘‘বাজার করে বাড়ি ফেরার পথে হঠাৎ বিজেপির লোকেরা মারধর করে।’’
বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূলের লোকেরা তাদের চিকিৎসার জন্য বাইরে বেরতে দেয়নি। এলাকায় পৌঁছয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। বিজেপির দাঁতন-১ ব্লকের দক্ষিণ মণ্ডলের সভাপতি মোশাফ মল্লিক বলেন, ‘‘দু’দিন ধরে গত বোরো মরসুমের চাষের ক্ষতিপূরণের ফর্ম বিলির জন্য ডাকা হয়েছিল। আমাদের লোকজন যেতেই মারধর শুরু করে তৃণমূলের লোকজন।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘ঘটনার পর বহিরাগতদের নিয়ে গিয়ে বেশ কয়েকটি ঘরে ভাঙচুর চালিয়েছে তারা।’’ এ নিয়ে তররুই গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান প্রতুল দাস বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট কয়েকটি মৌজা ধরে এ দিন কৃষকদের ফর্ম বিলির সিদ্ধান্ত হয়। বাকি মৌজাগুলিতে পরে দিন ধার্য করা হবে বলে জানানো হয়েছে। বিজেপি এসে উত্তেজনা ছড়ায়।’’
ব্লক তৃণমূল সভাপতি তথা বিধায়ত বিক্রমচন্দ্র প্রধানের অভিযোগ, ‘‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে বিজেপির কয়েকজন এসে ঝামেলার সৃষ্টি করে। ওদের এলাকায় এ দিন ফর্ম দেওয়ার নির্দেশ ছিল না। পরে লোকজন এসে মারধর করে। সাধারণ কয়েকজন তাতে আহত হয়েছেন। আমাদের কেউ মারতে যায়নি।’’