পরিযায়ীদের আয়ের দিশা
Migrant Workers

১০০ দিনের কাজে এ বার ফলের বাগান

আয় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন অধিকাংশ পরিযায়ী শ্রমিক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০২০ ০১:১৫
Share:

প্রতীকী ছবি

করোনা মোকাবিলায় লকডাউনের কারণে কাজ হারিয়ে ভিন্ রাজ্য থেকে ফিরে এসেছেন বহু পরিযায়ী শ্রমিক। ওই পরিযায়ী শ্রমিকদের খাবারের সমস্যা মেটাতে রেশনের মাধ্যমে খাদ্যসামগ্রী দিতে ‘ফুড কুপন’ দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে রাজ্য সরকার।

Advertisement

তবে আয় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন অধিকাংশ পরিযায়ী শ্রমিক। এই পরিস্থিতিতে একশো দিনের কাজের প্রকল্পের মাধ্যমে তাঁদের আয়ের ব্যবস্থা করতে জোর দিয়েছে রাজ্য সরকার। প্রশাসন সূত্রে খবর, যে সব পরিযায়ী শ্রমিক একশো দিনের কাজের প্রকল্পে কাজ করতে চান তাঁদের পঞ্চায়েতের মাধ্যমে এলাকার নিকাশি খাল, জলাশয় খনন ও সামাজিক বনসৃজনের মতো কাজে নিয়োগের ব্যবস্থা হচ্ছে। পাশাপাশি, যাঁরা ভারী ও কায়িক পরিশ্রমের কাজ করতে আগ্রহী নন তাঁদের যদি নিজস্ব জমি থাকে তাহলে ওই জমিতে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে ফলের বাগান তৈরির মাধ্যমে আয়ের সংস্থানের পরিকল্পনা করেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন।

একশো দিনের কাজে আইবিএস (ইন্ডিভিজুয়াল বেনিফিশিয়ারি স্কীম ) প্রকল্পে কলা, লেবু, আম, পেয়ারা ও মুসাম্বি ইত্যাদি ফলের বাগান তৈরির জন্য পরিযায়ী শ্রমিকদের সাহায্য করা হবে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (ট্রেজারি) শেখর সেন বলেন, ‘‘ভিন্ রাজ্য থেকে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের একাংশ ইতিমধ্যে পঞ্চায়েতের মাধ্যমে এলাকার নিকাশি খাল, জলাশয় খনন প্রভৃতি কাজে যুক্ত হয়েছেন। যাঁরা এই ধরনের কাজ করতে আগ্রহী নন এবং নিজস্ব জমি রয়েছে, তাঁদের ফলের বাগান তৈরির মাধ্যমে আয়ের সংস্থানের পরিকল্পনা করা হয়েছে।’’

Advertisement

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুরে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩১ হাজার পরিযায়ী শ্রমিক ভিন্ রাজ্য থেকে ফিরে এসেছেন। এই শ্রমিকেরা নিভৃতাবাসে ছিলেন। স্বাস্থ্য দফতরের আশাকর্মীদের সাহায্য নিয়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের তালিকা তৈরি করেছে পঞ্চায়েত ও ব্লক প্রশাসন। এই পরিযায়ী শ্রমিকদের একাংশের আগে থেকেই জব কার্ড রয়েছে। যাঁদের জব কার্ড নেই তাঁরা আবদেন করলে দ্রুত জব কার্ড দেওয়া হচ্ছে। যে পরিযায়ী শ্রমিকেরা নিজেদের জমিতে ফলের বাগান তৈরিতে আগ্রহী তাঁদের সাহায্য করা হবে। এই প্রকল্পে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিজস্ব বা পরিবারিক ৫ থেকে ১০ ডেসিমাল জমি থাকলেই হবে। ওই জমিতে ফলের বাগান তৈরিতে সাহায্য করা হবে। বাগানের জন্য সরকারিভাবে বিনামূল্যে ফলের চারাগাছ দেওয়া হবে।

কলাবাগান তৈরির জন্য ৯৮টি শ্রমদিবসের পারিশ্রমিক দেওয়া হবে। লেবু, আম, পেয়ারা, মুসাম্বি প্রভৃতি মিলিয়ে মিশ্র ফলের বাগান তৈরির জন্য ৯৯টি শ্রমদিবসের পারিশ্রমিক দেওয়া হবে। অর্থাৎ ফলের বাগান তৈরির জন্য একজন পরিযায়ী শ্রমিক প্রায় ২০ হাজার টাকা পারিশ্রমিক পাবেন। এ ছাড়া বাগানে উৎপাদিত ফল বিক্রি করেও আয় করতে পারবেন তিনি। ইতিমধ্যে পঞ্চায়েতগুলিতে আবেদন জমা শুরু হয়েছে। জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই প্রকল্পের রূপায়ণ শুরু হবে।

তমলুকের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের বল্লুক-১ পঞ্চায়েতের প্রধান শরৎ মেট্যা বলেন, ‘‘পরিযায়ী শ্রমিকদের ফলের বাগান তৈরির স্কীমে মঙ্গলবার থেকে আবেদন জমা নেওয়া শুরু হয়েছে। এদিন বিভিন্ন গ্রাম থেকে ৭০টি আবেদন জমা পড়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন