ছিল ঢিল, হল খাদায় সম্মান

ভানুভক্তের জন্মদিন পালন করতে গত ১৩ জুলাই সকালে পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব পানিঘাটা বাজারে ঢোকার চেষ্টা করতেই ঢিল উড়ে এসেছিল। বোল্ডার ফেলে টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ করেছিল বিক্ষোভকারীরা। রবিবার বিকেলে গৌতমবাবু যখন সেই পানিঘাটা বাজারে পৌঁছলেন, তখন খাদা দিয়ে তাঁকে বরণ করলেন দলের কর্মী-সমর্থকরা!

Advertisement

অনির্বাণ রায়

পানিঘাটা (কার্শিয়াং) শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:৪৭
Share:

সাহায্য: পানিঘাটায় খাবার বিলি করছেন পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

জুলাইয়ের ১৩ থেকে সেপ্টেম্বরের ১০।

Advertisement

ভানুভক্তের জন্মদিন পালন করতে গত ১৩ জুলাই সকালে পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব পানিঘাটা বাজারে ঢোকার চেষ্টা করতেই ঢিল উড়ে এসেছিল। বোল্ডার ফেলে টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ করেছিল বিক্ষোভকারীরা। রবিবার বিকেলে গৌতমবাবু যখন সেই পানিঘাটা বাজারে পৌঁছলেন, তখন খাদা দিয়ে তাঁকে বরণ করলেন দলের কর্মী-সমর্থকরা! তৃণমূলের মিছিলে সামিল না হলেও, বন্‌ধ-বিরোধী স্লোগান শুনে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এলেন বাসিন্দাদের অনেকেই। খুলল দোকানপাট। দমবন্ধ করা বন্‌ধের পরিস্থিতি ছেড়ে পাহাড়বাসীর একাংশ এখন যে ছন্দে ফিরতে মরিয়া, তাই বুঝিয়ে দিল পানিঘাটা।

সকালেই লোহাগড় চা বাগানে ত্রাণ বিলি করেছেন গৌতমবাবু। দু’জায়গাতেই ভিড় উপচে পড়েছিল। বাসিন্দাদের একাংশের মেজাজ বুঝেই পানিঘাটার সভা থেকে বন্‌ধ নিয়ে সরাসরি মোর্চাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন পর্যটনমন্ত্রী। গৌতমবাবু জানান, আগামী মঙ্গলবার পাহাড় নিয়ে সর্বদল বৈঠক হবে উত্তরকন্যায়। সেই বৈঠকের পরেই পাহাড়ে বন্‌ধ উঠে যাবে বলে মন্ত্রীর দাবি। তিনি বলেন, ‘‘পাহাড়ের স্বাভাবিক ছন্দ ফিরিয়ে আনবেন সাধারণ বাসিন্দারাই। ৮৮ দিন ধরে বন্‌ধ চলছে। স্কুল বন্ধ, মানুষের রোজগার নেই। কেউ আর এ সব বরদাস্ত করবে না।’’ বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, চোরাগোপ্তা দোকান-বাজার বেশ কিছু দিন ধরেই খুলছে। কিন্তু মোর্চার একাংশ ক্রমাগত হুমকি দিচ্ছে। পানিঘাটার সভা থেকে মন্ত্রী আশ্বাস দেন, ‘‘দোকান খুলুন, কাজে যান। কেউ ধমকালে পুলিশ পদক্ষেপ করবে।’’ পরে তৃণমূলের পাহাড় কমিটির সভাপতি রাজেন মুখিয়াও দাবি করেন, সোমবার থেকেই গোটা এলাকার সব স্কুল খুলে দেওয়া হবে। যা শুনে এলাকার এক প্রবীণ বাসিন্দা বলেন, ‘‘উত্তরকন্যার বৈঠকে যাই হোক, বন্‌ধ আর বেশি দিন চলবে বলে মনে হচ্ছে না।’’ তৃণমূল সূত্রের দাবি, মোর্চাকে বার্তা দিতেই মন্ত্রী এ দিন দীর্ঘক্ষণ পানিঘাটায় ছিলেন।

Advertisement

লোহাগড়ের প্রায় একই দৃশ্য। সেখানে চা বাগানে একটি দোকানের দরজা আর্ধেক খোলা দেখে মিছিল থেকে মন্ত্রী সামনে চলে যান। পুলিশ নিয়ে মন্ত্রীকে ঢুকতে দেখে ঘাবড়ে যান দোকানের মালিক যুবক প্রশান্ত সুব্বা। হাত জোড় করে দাঁড়িয়ে পড়েন। মন্ত্রী বলেন, ‘‘দোকান পুরো খুলে দিন। নিশ্চিন্তে ব্যবসা করুন। পুলিশ-প্রশাসন রয়েছে কোনও ভয় নেই।’’ মিছিল চলে যাওয়ার পরে দোকানের দরজা পুরো খুলে যায়। বাগানের শ্রমিক অঞ্জলি পরজা, লক্ষ্মী তাঁতি-রা বলেন, ‘‘বন্‌ধের ফলে শাক-কচু খেয়ে ছিলাম। আর এমন চলবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন