ব্যাগের এই ট্যাগেই বিতর্ক। —নিজস্ব চিত্র
নয়া ‘ব্যাকপ্যাক’ থেকে ঝুলছে ট্যাগ। তাতে বড় করে লেখা, ‘মোদী ব্যাগ’। পাশে ছোট্ট ট্যাগলাইন, ‘বাস্ নাম হি কাফি হ্যায়’।
মঙ্গলবার মেদিনীপুরে জেলা পরিষদের সভাঘরে ছিল পঞ্চায়েত বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা। সেখানে উপস্থিত সকলকেই দেওয়া হয় পিঠে ঝোলানো ওই ব্যাগ। কর্মশালা শেষ হতেই ব্যাগ ঘিরে শোরগোল। প্রশাসন সূত্রের খবর, এক পদস্থ আধিকারিকে সটান ফোন করেন জেলা পরিষদের এক কর্মাধ্যক্ষ। শেষে কি না মমতার প্রশাসনের কর্মশালায় মোদী ব্যাগ! এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে মশকরাও হয় কিছু ক্ষণ।
নাম, ট্যাগলাইন ছাড়াও মশকরার আরও উপাদান রয়েছে ওই ব্যাগে। সেখানে লেখা, ‘মোদী ব্যাগ’, ‘দ্য মার্ক অব ট্রাস্ট’, ‘রয়্যাল কালেকশন’। কর্মশালায় উপস্থিত এক পঞ্চায়েত প্রধান তো বলেই ফেললেন, ‘‘মোদী-ব্যাগটা ঠিক মানাচ্ছে না! কেমন কেমন লাগছে!’’ আর এক প্রধানের মন্তব্য, ‘‘বাজারে কি মমতা-ব্যাগ নেই! একটু খুঁজলে নিশ্চয়ই মিলত।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, ‘গ্রাম পঞ্চায়েত ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান’ বা জিপিডিপি বিষয়ক এই কর্মশালায় ডাকা হয়েছিল ব্লকের বিডিও, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, পঞ্চায়েত পিছু দু’জন করে কর্মচারীকে। কী ভাবে পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে, সে নিয়েই এই কর্মশালার আয়োজন। সে বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিতে এসেছিলেন পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের পদস্থ আধিকারিকেরা। ছিলেন জেলাশাসক রশ্মি কমল, জেলা সভাধিপতি উত্তরা সিংহ-সহ আরও অনেকে।
জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক (পঞ্চায়েত) প্রতিমা দাস অবশ্য বলেন, ‘‘কর্মশালায় ব্যাগ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে কোনও বিতর্ক হয়েছে বলে শুনিনি।’’ তবে জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের বক্তব্য, ‘‘সব ব্যাগ ওই রকম ছিল না। কিছু ব্যাগ ছিল। এটা বলতে পারি, এর পিছনে কোনও উদ্দেশ্য ছিল না। ইচ্ছাকৃত ভাবে ওই ব্যাগ দেওয়া হয়নি।’’ জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, ব্যাগ সরবরাহের জন্য নিয়মমাফিক এক জনকে বরাত দেওয়া হয়েছিল। তিনিই প্রয়োজনীয় সংখ্যক ব্যাগ সরবরাহ করেছেন। কিছু ব্যাগে যে ‘মোদী ব্যাগ’ লেখা রয়েছে, তা খেয়ালই করেননি জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরা। পরে বিষয়টি তাঁদের নজরে আসে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘ব্যাগে কী লেখা রয়েছে তা আমরা দেখি না। আর ব্যাগ তো কোনও না কোনও কোম্পানিরই হবে!’’
পাকেচক্রে ব্যাকপ্যাকে মোদীর নাম। তা-ও এমন দিনে যখন পাশের জেলায় রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কর্মশালা শেষে জেলা পরিষদের এক কর্মাধ্যক্ষ বলছিলেন, ‘‘ভাগ্যিস দিদির অনুষ্ঠানে এমনটা হয়নি।’’