Coronavirus

বাড়ি ফিরবে কবে, ভয়ে কাঁটা পরিবার 

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি করোনাভাইসার (কোভিড১৯) থাবা বসিয়েছে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে।

Advertisement

কল্লোল প্রামাণিক 

করিমপুর শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২০ ০৫:২২
Share:

ফাইল চিত্র

ভিন্‌ রাজ্যে বা বিদেশে কর্মরত মানুষদের একাংশ বাড়ি ফিরে এসেছেন। কিন্তু কাজের জন্য থাকা বহু মানুষ এখনও বাড়িতে না ফেরায় চিন্তিত তাঁদের পরিবার।

Advertisement

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি করোনাভাইসার (কোভিড১৯) থাবা বসিয়েছে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে। করিমপুর ও আশেপাশের এলাকার বহু মানুষ কাজের সূত্রে কেরালা, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু বা দিল্লিতে থাকেন। কেউ থাকেন কাতার, সৌদি বা ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। সর্বত্র নোভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই সব জায়গা থেকে নিজের বাড়িতে ফিরছেন। প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর থেকে তাঁদের কাউকে কাউকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা কিংবা কাউকে নিজের বাড়িতে কোয়রান্টিনে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

যাঁরা এখনও বাইরের দেশে রয়েছেন তাঁদের ফোনে নিয়মিত খোঁজ খবর রাখছেন পরিবারের লোকজন। কিন্তু তাতেও কাটছে না দুশ্চিন্তা।

Advertisement

দুবাইয়ে আটকে রয়েছেন করিমপুরের বিভাস ধর। তিনি ফোনে জানান, এক টানা চার সপ্তাহ কাজ হয় আর পরের চার সপ্তাহ ছুটি থাকে। তাই প্রতি এক মাস অন্তর ছুটির সময় বাড়িতে আসেন। এ বারও ১৭ মার্চ মঙ্গলবার বিমানে তাঁর বাড়ি ফেরার টিকিট ছিল। কিন্তু করোনভাইরাসের কারণে ওখানে আটকে গিয়েছেন। তাদের যে অফিসার ছুটি দেবেন সে ১৪ দিনের জন্য কোয়ারিন্টিনে আছেন। তাছাড়া আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবা এখন বন্ধ। তাই পরিস্থিতি বদল হলে ৩১ মার্চের পরে আসার চেষ্টা করবেন।

বিভাসের কথায়, “বাড়িতে স্ত্রী ও বাবা অসুস্থ হলেও ফোনে কথা বলা ছাড়া বাড়ি ফেরার কোনও উপায় নেই।” বিভাস ধরের স্ত্রী মৌসুমি ধর বিশ্বাস বলেন, ‘‘প্রতিদিন ফোনে যোগাযোগ হচ্ছে। তবুও চিন্তা তো থাকছেই।’’

ইতালির পার্শ্ববর্তী দেশ মাল্টায় কাজ করেন মুরুটিয়ার দিঘলকান্দির অবিনাশ বালা। তিনি জানান, বছর দেড়েক আগে সেখানকার একটি সংস্থার কাজছেন। ইতালিতে করোনাভাইসারের আক্রমণের জেরে গত চার দিন কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বাঙালি, বিহারী ও গুজরাতি মিলিয়ে প্রায় দেড়শো জন ভারতীয় একটি বাড়িতে রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘এক একটি ঘরে চার জন করে আছেন এবং গেটের তালা বন্ধ। রাস্তা, বাজার ঘাট কিংবা কাজে বাইরে যাওয়া পুরোপুরি নিষেধ। ভিতরেই রান্না খাওয়া চলছে। খাবারের মধ্যে আনাজ আর ফল রয়েছে। এই মুহূর্তে বাড়ি ফেরার কোনও সুযোগ নেই। কবে বাড়ি ফিরতে পারব জানা নেই।’’

এ দিকে দিঘলকান্দির বাড়িতে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তাঁর বৃদ্ধা মা মালতি বালা। তাঁর কথায়, “ছেলেদের কেউ মালটায় কেউ দুবাই রয়েছে। ফোন মারফত কথা হয়েছে। তারা সকলেই নিজের জায়গায় ঘরের মধ্যেই রয়েছে।”

বেঙ্গালুরুতে কাজে গিয়ে আটকে পড়েছেন এলাকার প্রসেনজিৎ বিশ্বাস। তিনি ফোনে জানান, গত সাত দিন থেকেই তাঁদের সমস্ত কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কয়েকজন একটি জায়গায় গৃহবন্দি হয়ে আছেন। বিমান বা ট্রেন পরিষেবা বন্ধ হওয়ায় এখন বাড়িতে আসার ইচ্ছে থাকলেই কোনও উপাই নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন