Coronavirus

চাল বিলি ঘিরে বিজেপির মধ্যে দ্বন্দ্ব, অভিযোগ

বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাক্তন বুথ সভাপতির পাশে দাঁড়িয়ে শক্তি প্রমুখ এবং সংশ্লিষ্ট বুথ সভাপতিদের অপসারণের দাবি তুলেছেন দলেরই নেতা-কর্মীদের একাংশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শান্তিপুর শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২০ ০২:৩১
Share:

প্রতীকী ছবি

দুঃস্থদের মধ্যে চাল বিলিকে ঘিরে বিজেপির কোন্দল প্রকাশ্যে এল ফুলিয়ায়। এর জেরে দলের এক প্রাক্তন বুথ সভাপতি নিমাই দাস তাঁর উপর হামলার অভিযোগ তুলেছেন দলের স্থানীয় শক্তি প্রমুখ এবং কয়েকজন বুথ সভাপতির বিরুদ্ধে। যদিও দলের একাংশের দাবি, প্রাক্তন ওই বুথ সভাপতি এখন দলের সঙ্গে সে ভাবে যোগাযোগ রাখেন না। তিনি এখন আরএসএস-এর ঘনিষ্ঠ।

Advertisement

বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাক্তন বুথ সভাপতির পাশে দাঁড়িয়ে শক্তি প্রমুখ এবং সংশ্লিষ্ট বুথ সভাপতিদের অপসারণের দাবি তুলেছেন দলেরই নেতা-কর্মীদের একাংশ। দলের মণ্ডল সভাপতির কাছে এই মর্মে তাঁরা লিখিত আবেদনও জানিয়েছেন। তবে হামলার ঘটনায় শনিবার বিকেল পর্যন্ত পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।

স্থানীয় সূত্রের খবর, বিভিন্ন জায়গায় বিজেপির তরফে স্থানীয় স্তরে দলের দুঃস্থ কর্মীদের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরণের উদ্যোগ শুরু হয়েছে। শান্তিপুর ব্লকের বেলগড়িয়া ১ পঞ্চায়েতের মাঠপাড়া এলাকায় তা নিয়েই সমস্যা তৈরি হয়েছে।

Advertisement

বিজেপির ওই প্রাক্তন বুথ সভাপতি নিমাই বলেন, “শুক্রবার রাতে স্থানীয় শক্তি প্রমুখ এবং আরও দুই বুথ সভাপতি আমার বাড়িতে আসেন। আমাকে বলেন, আমি নাকি তাঁদের নামে বলে বেড়াচ্ছি, যে চাল এসেছে তা বিতরণ না করে তাঁরা সরিয়ে ফেলছেন। তাঁরা আমার কাছে এই মন্তব্যের জন্য কৈফিয়ত চান। এরপরে আমাকে মারধর করেন, বাড়ির মহিলাদেরও গায়ে হাত দেন।” নিমাইয়ের সঙ্গে এখন দলের যোগ নেই, তিনি আরএসএস ঘনিষ্ঠ বলে দাবি দলের একাংশের।

আরএসএস সূত্রে অবশ্য জানা গিয়েছে, নিমাই কয়েকদিন তাঁদের শাখায় গেলেও কোনও প্রশিক্ষণ শিবিরে যোগ দেননি। তিনি এখনও স্বয়ংসেবক নন।

শনিবার সকালে নিমাইয়ের বাড়িতে যান বিজেপির ২৯ নম্বর মণ্ডলের সভাপতি। সেখানে স্থানীয় কিছু বুথ স্তরের নেতা-কর্মীও ছিলেন। সেখানে তাঁরা শক্তি প্রমুখ দুলাল বসাকের বিরুদ্ধে ক্ষোভের কথা জানান। তাঁদের দাবি, দুলাল এবং তাঁর সঙ্গী জনা তিনেক বুথ সভাপতিকে অপসারণ করতে হবে। তাঁরা দলবিরোধী এবং অনৈতিক কাজের সাথে যুক্ত বলে তাঁদের অভিযোগ। তাঁদের অপসারণ না করা হলে তাঁরা সকলেই দল ছাড়বেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন মণ্ডল সভাপতি। তাঁর কাছে শক্তি প্রমুখের বিরুদ্ধে লিখিতভাবে অভিযোগ জানান কর্মীরা।

যে শক্তি প্রমুখের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি বলেন, “নিমাই আমার নামে কিছু কথা রটাচ্ছিল জানতে পেরে ওর সাথে কথা বলতে যাই। সেখানে মারধরের ঘটনা ঘটেনি। আর দুর্নীতির অভিযোগ আসায় নিমাই এবং আরও কয়েকজনকে দল আগে সরিয়ে দিয়েছে। যাঁরা অভিযোগ করছেন তাঁরা দুর্নীতিগ্রস্ত, অনেককেই দলের কর্মসূচিতে পাওয়া যায় না। নিজেদের দুর্নীতিতে বাধা পড়ায় এখন এসব অভিযোগ করছেন।”

বিজেপির ২৯ নম্বর মণ্ডলের সভাপতি ব্রজগোপাল দাস পরে বলেন, “একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। কিছু পরিমাণ চাল এসেছে দলের তরফে। সেটাই তৃণমূলের তরফে অনেক বেশি পরিমাণ বলে রটানো হয়েছে। তাতে দলের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছে। আমরা সকলের সাথেই কথা বলছি।”

এ দিন তাঁকে দেওয়া অভিযোগ প্রসঙ্গে ব্রজগোপাল বলেন, “একটা অভিযোগ দিয়েছেন ওঁরা। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।”

শান্তিপুর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি তপন সরকার বলেন, “এটা ওদের নিজেদের ঝামেলা। তা চাপা দিতে এখন তৃণমূলকে টানা হচ্ছে। এর সাথে আমাদের কোনও যোগ নেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন