Nadia

Murder: মালার মেয়ে দিল গোপন জবানবন্দি

গোঘাটার যে ইটভাটায় সাফাইকর্মী হিসেবে কাজ করত কৃষ্ণ, রবিবার সকালে সেখানে গিয়ে তার সঙ্গে কাজ করা আরও চার জনের দেখা মেলে।

Advertisement

সাগর হালদার  

পলাশিপাড়া  শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০২২ ০৪:৫১
Share:

বিজেপির লিগ্যাল সেলের প্রতিনিধি দল। রবিবার। নিজস্ব চিত্র।

যে রাতে তার দাদু-ঠাকুমা আর মা খুন হন, সাত বছরের মেয়েটি কিছু দেখেছিল। পরে সে আত্মীয়-পড়শিদের তা বলেছে, পুলিশকেও জানিয়েছে। রবিবার তেহট্ট মহকুমা আদালতে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জবানবন্দি দিল নিহত মালা মণ্ডলের সেই সাত বছরের মেয়ে। তিন ভাইবোনের মধ্যে সেই বড়।

Advertisement

এ দিনই সন্ধ্যায় পলাশিপাড়ার রানিনগরে তুঁতবাগান পাড়ার সেই বাড়িতে যায় বিজেপি লিগ্যাল সেলের মহিলা আইনজীবীদের প্রতিনিধি দল। গ্রামবাসীর সঙ্গেও তাঁরা কথা বলেন। পরে লিগ্যাল সেলের কো-কনভেনর সুস্মিতা সাহা দত্ত বলেন, “পুলিশ সঠিক তদন্ত না করলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যায় কিনা তা দেখা হবে।” এই দলটি পলাশিপাড়ায় আসার আগে গণধর্ষণের জেরে মৃত কিশোরীর বাড়ি গিয়ে তার পরিবারের সঙ্গেও দেখা করে। অভিযোগ নেওয়ার ক্ষেত্রে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়। ওই ঘটনার তদন্তভার আপাতত সিবিআইয়ের হাতে।

গত ২ মে রাতে বাড়িতে ঢুকে গলার নলি কেটে খুন করা হয় প্রৌঢ় ভাগচাষি ডমন রাজোয়ার, তাঁর স্ত্রী সুমিত্রা ও তাঁদের বিবাহিত মেয়ে মালা মণ্ডলকে। মালার পাশেই শুয়ে ছিল তার তিন সন্তান। যে কোনও কারণেই হোক, তারা বেঁচে যায়। পরের দিন বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে মালার বছর সাতের বড় মেয়ে জানিয়েছিল, রাতে যারা বাড়িতে ঢুকেছিল তাদের মুখ ঢাকা ছিল, মাথায় পরা ছিল গামছা। ৪ মে পুলিশ পাশের বাড়ির বাসিন্দা, ইটভাটা-কর্মী কৃষ্ণ মণ্ডলকে গ্রেফতার করে। দুই পরিবারের মধ্যে অনেক দিন ধরেই বিবাদ চলছিল।

Advertisement

গোঘাটার যে ইটভাটায় সাফাইকর্মী হিসেবে কাজ করত কৃষ্ণ, রবিবার সকালে সেখানে গিয়ে তার সঙ্গে কাজ করা আরও চার জনের দেখা মেলে। তার মধ্যে নিহত ডমন রাজোয়ারের শ্যালক সত্যেন মণ্ডলও রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘ও যে এ রকম কিছু করতে পারে, তা ভাবা মুশকিল।” কৃষ্ণের এক সহকর্মী সন্টু মণ্ডল বলেন, “যে সোমবার রাতে ঘটনাটা ঘটল, সে দিনও কৃষ্ণ কাজে এসেছিল। দুপুরে ছুটির পরে চলে যায়। ওর ব্যবহারে অস্বাভাবিক কিছু আমরা দেখিনি।” আর এক সহকর্মী তাপস মণ্ডলের কথায়, “আমরা এক সঙ্গে কাজ করি। নিজেদের মধ্যে হাসিঠাট্টা হয়। কৃষ্ণ অবশ্য কখনও হাসিঠাট্টা করত না।” ইটভাটার মালিকদের অন্যতম রহিম বক্স মালিতা বলেন, “কৃষ্ণের মনের মধ্যে কী চলছিল, তা বলা কঠিন। তবে সে দিনের সিসিটিভি ফুটেজ পুলিশকে দেওয়া হয়েছে।”

আপাতত পুলিশের হেফাজতেই রয়েছে কৃষ্ণ। তবে খুনের অস্ত্র এখনও উদ্ধার হয়নি। ঘটনার পুনর্নির্মাণও হয়নি। তবে সিআইডি-র ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে গিয়েছেন। আঙুলের ছাপ বিশেষজ্ঞও এসেছেন। কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) কৃশানু রায় বলেন, “মালা মণ্ডলের বড় মেয়েকে আজ আদালতে গোপন জবানবন্দি দিতে পাঠানো হয়েছিল। প্রাথমিক তদন্তে যা পাওয়া যাচ্ছে তাতে একের বেশি লোক এই খুনে যুক্ত বলে মনে হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন