সকালে: বহরমপুর ছেড়ে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: গৌতম প্রামাণিক।
‘দিদি’ এলেন, বহরমপুর সার্কিট হাউসে রাত্রিবাসও করলেন অথচ সেখানকার চৌকাঠ পেরিয়ে দিদির একান্ত সাক্ষাৎ পেলেন না জেলার দাদারা। তাঁদের এড়িয়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুর্শিদাবাদ থেকে মালদা রওনা দিলেন বুধবার, বেলা বারোটায়।
মঙ্গলবার দুপুর দুটো পঁয়তাল্লিশ মিনিটে কালনা থেকে আকাশপথে বহরমপুরে জনসভা করতে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই জনসভায় দলনেত্রীর বক্তৃতার আগে দুটি মঞ্চের বাছাই করা নেতাদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ছাড়া তেমন বাক্যালাপই হয় নি ‘দিদি’র। বক্তৃতা শেষ করে তিনি বহরমপুর স্টেডিয়াম থেকে সার্কিট হাউস পর্যন্ত গাড়িতে যাওয়ার পথে তাঁর সঙ্গে যাওয়ার অনুমতি মেলেনি কারও। যদিও তাঁকে স্বাগত জানাতে রাস্তার দু’ধারে প্রস্তুত ছিলেন তৃণমূলের কর্মীরা। স্টেডিয়াম ছাড়ার সময়ই দু-একজন অতি উৎসাহী নেতাদের স্পষ্ট বলে দিয়েছিলেন, “এখন কথা হবে না। পরে কথা বলবো। কেউ আসবে না।” সে কথার পরেও রাত ন’টাতেও সার্কিট হাউসের আশেপাশে তৃণমূলের জেলা নেতা, ব্লক নেতা, শহরের নেতা ছাড়াও উঠতি নেতাদেরও ঘুরঘুর করতে দেখেছে পুলিশ।
সার্কিট হাউস সূত্রে জানা যায়, জনসভা শেষ করে মুখ্যমন্ত্রী জেলা শাসক, জেলা পুলিশ সুপারসহ উচ্চপর্যায়ের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন বিকেল চারটের পর। সেখানে জেলার স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিষয়ে বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন। তারপর পৌনে ন’টা নাগাদ এক বাটি ভেজ স্যুপ আর সিদ্ধ তরকারি খেয়ে কপাট আটকে দেন তিনি। তখনই জানিয়ে দিয়েছিলেন সকালে এক কাপ চা খেয়ে মালদা রওনা দেবেন।
আবার সকাল দশটা বাজতে না বাজতেই একে একে নেতাদের আগমন ঘটে নিরাপত্তার ঘেরাটোপে থাকা সেই সার্কিট হাউসের বাইরে। সেখানে একে একে আসতে থাকেন জেলা সভাপতি আবু তাহের খান, চেয়ারম্যান সুব্রত সাহা, অরিত মজুমদার সহ দু-তিনজন নেতা। ভাগীরথীর ওপার থেকে চলে আসেন দুই ভাই রাজীব হোসেন ও সৌমিক হোসেন। আসেন লালবাগের দুই বিক্ষুব্ধ নেতা জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভার প্রশাসক প্রসেনজিৎ ঘোষ, লালবাগ পুরসভার প্রশাসক বিপ্লব চক্রবর্তী। সঙ্গে আসেন মহম্মদ আলীও। যদিও বহরমপুরবাসী নেতা অশোক দাস, মইনুল হাসানদের সেই ভিড়ে দেখা যায়নি। আসেননি খলিলুর রহমানও। অথচ বজ্র আঁটুনি নিরাপত্তায় সার্কিট হাউস থেকে একশ মিটার দূরের হেলিপ্যাড পর্যন্তও দিদির সঙ্গে জেলার দাদাদের হাঁটার অনুমতি ছিল না। তবুও দাদারা দাঁড়িয়ে ছিলেন সার্কিট হাউসের দোর গোড়ায়।
একে অপরকে প্রতি নমস্কার জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যখন হেলিপ্যাডের দিকে এগিয়ে গেলেন তখনও দিদি একা।