ধানতলা

জোড়া খুনের কারণ নিয়ে ধন্দে পুলিশ

খুন হয়েছেন দু’জনেই। কী ভাবে তাঁদের খুন করা হয়েছে তা-ও স্পষ্ট। কিন্তু খুনের কারণ কী? ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা পরেও এই প্রশ্নের উত্তর হাতড়াচ্ছে পুলিশ। সোমবার, স্বাধীনতা দিবসের সকালে ধানতলার খালপাড় এলাকার বাড়ি থেকে নয়নতারা বারুই (৪৮) ও সুভাষ বিশ্বাসের (৪৩) দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ধানতলা শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০১৬ ০১:৪১
Share:

সেই বাড়ির সামনে পুলিশ। — নিজস্ব চিত্র

খুন হয়েছেন দু’জনেই। কী ভাবে তাঁদের খুন করা হয়েছে তা-ও স্পষ্ট। কিন্তু খুনের কারণ কী?

Advertisement

ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা পরেও এই প্রশ্নের উত্তর হাতড়াচ্ছে পুলিশ। সোমবার, স্বাধীনতা দিবসের সকালে ধানতলার খালপাড় এলাকার বাড়ি থেকে নয়নতারা বারুই (৪৮) ও সুভাষ বিশ্বাসের (৪৩) দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, দু’জনেরই মাথায় প্রথমে ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়। তারপর আগুন দিয়ে দেহ দু’টি পুড়িয়ে দেওয়ারও চেষ্টা করা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দুষ্কৃতীরা তা করতে পারেনি। তবে দু’জনেরই দেহের বেশ কিছু অংশ পুড়ে গিয়েছে।

রানাঘাটের এসডিপিও ইন্দ্রজিৎ বসু বলেন, “কয়েক জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সোমবার রাতে সুভাষবাবুর স্ত্রীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সব দিকই আমরা খতিয়ে দেখছি। আশা করছি, খুব শীঘ্রই খুনের কিনারা করা সম্ভব হবে।’’ তবে জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, নয়নতারা সুদের কারবার করতেন। তাই এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের প্রথমে মনে হয়েছিল, ব্যবসার কারণেই হয়তো এই খুন। ঘটনার সময় ওই এলাকারই বাসিন্দা সুভাষও ছিলেন। তাই তাঁকেও সরিয়ে দিতে চেয়েছিল দুষ্কৃতীরা।

Advertisement

কিন্তু তদন্তে নেমে পুলিশ নয়তারার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট দেখে চমকে ওঠে। সাকুল্যে সেখানে পড়ে রয়েছে তিন হাজার টাকা। তাছাড়া সেই অ্যাকাউন্টে দীর্ঘ দিন টাকার লেনদেনও হয়নি। ওই আধিকারিকের কথায়, ‘‘এখনও পর্যন্ত আমরা নিশ্চিত নই। তবে ব্যবসা নয়, এই খুনের নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ আছে বলেই মনে হচ্ছে।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, খালপাড় এলাকার বাড়িতে একাই থাকতেন নয়নতারা। সুভাষের বাড়িও ওই এলাকায়। নয়নতারার স্বামী মারা গিয়েছেন বেশ কয়েক বছর আগে। একমাত্র ছেলে থাকেন উত্তরপ্রদেশে। তাঁকে মায়ের মৃত্যুসংবাদ পাঠানো হয়েছে। বেশ কয়েক বছর থেকে নয়নতারার জমিজায়গা দেখাশোনা করতেন সুভাষ। সেই কারণে নয়নতারার বাড়িতে তাঁর যাতায়াত ছিল। রবিবার বিকেলেও ফুল তুলতে যাওয়ার নাম করে তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। তারপর তিনি আর বাড়ি ফেরেননি।

সোমবার সকালে নয়নতারা ঘুম থেকে উঠছেন না দেখে প্রতিবেশীদের সন্দেহ হয়। তাঁরা নয়তারার বাড়ি গিয়ে দেখেন, বাইরে থেকে দরজার ছিটকানি দেওয়া রয়েছে। ইতিমধ্যে স্বামীর খোঁজ করতে মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে ওই বাড়িতে হাজির হন সুভাষের স্ত্রীও। তিনি দরজার ছিটকানি খুলে দেখেন, ঘরের মধ্যে পড়ে রয়েছে নয়নতারা ও সুভাষের রক্তাক্ত দেহ।

সুভাষবাবুর দাদা সুনীল বিশ্বাস বলেন, “নয়নতারাদেবীর সঙ্গে আমাদের পরিবারের খুব ভাল সম্পর্ক। মাঝে মাঝে তিনিও আমাদের বাড়িতে আসতেন। কী কারনে এমন কাণ্ড ঘটে গেল বুঝতে পারছি না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন