আহত বনাম অভিযুক্ত, দু’পক্ষই তৃণমূল

অভিযোগের তির, দলেরই অন্য এক পঞ্চায়েত সদস্যের স্বামীর দিকে। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:৩২
Share:

গুলিবিদ্ধ জালালুদ্দিনের পরিবার।

ডোমকল-হরিহরপাড়া-নওদা। তালিকায় শেষ সংযোজন বহরমপুরের গোবিন্দপুর। আহত এবং অভিযুক্ত দুই-ই তৃণমূল।

Advertisement

বৃহস্পতিবার রাতে গোবিন্দপুরে দুষ্কৃতীদের গুলিতে জখম হয়েছেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যের ভাই। অন্য এক ভাইয়ের মাথায় আঘাত, গুলি নয়, ওয়ানশটারের বাটের।

অভিযোগের তির, দলেরই অন্য এক পঞ্চায়েত সদস্যের স্বামীর দিকে। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক। গ্রামে তল্লাশি চালিয়ে অভিযুক্তদের কাউকে পায়নি পুলিশ। বহরমপুর থানার আশ্বাস, তদন্ত চলছে।

Advertisement

গত কয়েক মাসে, দলের অন্দরে এই হানাহানির চেহারাটা বোমা-গুলি-ওয়ানশটারের হাত ধরে একেবারে সামনে এসে পড়েছে। যেখানে শাসক দলের নেতা কর্মীরা থানায় ছুটছেন দলেরই অন্য পক্ষের নামে নালিশ ঠুকতে। জেলা কংগ্রেসের এক মুখপাত্র জয়ন্ত দাসের টিপ্পনি— ‘‘যে পক্ষ প্রভাবশালী পুলিশ তার হয়ে ঝাঁপাচ্ছে কিংবা নীরব থাকছে!’’ অর্থাৎ, অস্ত্র এবং আঘাতের এই ঘটনা যেন তৃণমূল বনাম তৃণমূল হয়ে চক্রাকারে ফিরে আসছে একই জায়গায়া! বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনা তার ব্যতিক্রম নয়। পঞ্চায়েত সদস্য পারভিনা বিবির দুই ভাই আব্দুল্লা জালালউদ্দিন এবং জিয়ারুল শেখ জখম হয়েছেন। হামলাকারীদের এক জনকে গ্রামের লোকজন ধরে ফেলে বেধড়ক পিটিয়েছেন। গ্রামবাসীদের দাবি, সে বহিরাগত। আহত তিন জনকেই প্রথমে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে জালালউদ্দিন ও জনতার মারে জখম ওই দুষ্কৃতীকে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। গ্রামবাসীদের দাবি, ‘আহত এবং অভিযুক্ত সকলেই তৃণমূলের লোক’!

যদিও জেলাপরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ রাজীব হোসেন বলছেন, ‘‘গোষ্ঠী কোন্দলের অভিযোগ ঠিক নয়। ব্যক্তিগত রেষারেষি থেকে ওই ঘটনা।’’ জেলা সিপিএমের এক এক নেতা ধরিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে নেতাদের কোন্দলের কথা অস্বীকার করতে হয় এটাই রেওয়াজ, পরে দেখবেন ধৃতেরা সকলেই তৃণমূলের।’’

গোবিন্দপুরের আসারুল শেখের স্ত্রী পারভিনা বিবি সিপিএমের টিকিটে জয়ী হয়েও পরে যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূলে। অন্য দিকে ওই গ্রামের অন্য সংসদ থেকে জিনারুল শেখের স্ত্রী সাদেকা বিবি জয়ী হন তৃণমূলের টিকিটে। ক্ষোভের কারণ, ঠিকাদারির কাজ নিয়ে। তার জেরেই চাপা রোষ। যার বহিঃপ্রকাশ গুলিতে।

পুলিশ ডালিম শেখ নামে যাকে খুঁজছে, এলাকায় সক্রিয় তৃণমূল কর্মী হিসেবেই তার পরিচয়। বৃহস্পতিবার ঘটনার পর থেকে ডালিমের বাড়ি তালাবন্ধ। বিরোধীদের কটাক্ষ— হয়তো দলের প্রভাবশালী অংশের ছত্রচ্ছায়া রয়েছে, পুলিশ তাই খুঁজে পাচ্ছে না!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন