গুরু-নির্দেশে ভাঙল বিয়ে, গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হবু কনে

রবিবার ভোরে ঘর থেকে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না জড়ানো অবস্থায় ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় ওই তরুণীর। দত্তপুকুর থানার মধুপুর এলাকার ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত তরুণীর নাম পায়েল ঘোষ (২৫)।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

 হাঁসখালি ও বনগাঁ শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৮ ০২:১৬
Share:

মৃতা: পায়েল ঘোষ। ধৃত: সুমিত অধিকারী।

তরুণ-তরুণীর মধ্যে বেশ কিছু দিনের প্রেম। দু’বাড়ির মতে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল অগ্রহায়ণ মাসে। কিন্তু এক গুরুদেবের কথা অনুযায়ী বিয়ে বাতিল করেছিলেন হবু বর। অভিযোগ, তাতেই আত্মঘাতী হন হবু কনে।

Advertisement

রবিবার ভোরে ঘর থেকে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না জড়ানো অবস্থায় ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় ওই তরুণীর। দত্তপুকুর থানার মধুপুর এলাকার ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত তরুণীর নাম পায়েল ঘোষ (২৫)। ওই ঘটনায় পায়েলের ভাই সৌরভ হবু বর সুমিত অধিকারীর বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ এ দিনই সুমিতকে গ্রেফতার করেন। তাঁর বাড়ি নদিয়ার হাঁসখালি থানার বগুলা এলাকায়। পায়েলের দেহ ময়না তদন্তের জন্য বারাসত জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পায়েল একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্মী ছিলেন। বাড়িতে বাবা-মা ও ভাই রয়েছেন। বাবা রামপ্রসাদ অসুস্থ। কাজকর্ম করতে পারেন না। পায়েলই সংসার চালাতেন।

Advertisement

পুলিশ জানায়, বছর খানেক আগে তার সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় সুমিতের পরিচয় হয়। সেখান থেকে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। দুই পরিবারের লোকজন বিয়ের কথাবার্তা পাকা করেন। ওই যুবক তেমন কোনও কাজকর্ম করত না। তবুও সবকিছুই ঠিকঠাক চলছিল। হঠাৎ সুমিত বিয়ে করতে অস্বীকার করে পায়েলকে।

আরও পড়ুন: সফল বদল হৃদ্‌যন্ত্রের, আত্মবিশ্বাসী মেডিক্যাল

পায়েলের এক দাদা পার্থ বলেন, ‘‘সুমিত বোনকে জানায় ওর গুরুদেব ভাগ্যগণনা করে নাকি বলেছেন এখন বিয়ে হলে যুবকের ক্ষতি হবে। বিয়ে টিকবে না।’’ এরপরেই সুমিত বিয়ে করতে অস্বীকার করে বলে অভিযোগ।

পায়েলের ভাই সৌরভ পুলিশকে জানিয়েছেন, এই নিয়ে সুমিতের সঙ্গে প্রায়ই দিদির ফোনে ঝগড়া হত। সুমিত দিদিকে মরতে বলেছিল। সুমিতই ফোনে তাঁর দিদিকে মরতে প্ররোচনা দিয়েছেন বলে সৌরভের অভিযোগ।

মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার গভীর রাত পর্যন্ত পায়েলের সঙ্গে সুমিতের ফোনে কথা হয়। ভোরে প্রচণ্ড শব্দে ঘুম ভেঙে যায় বাবা-মায়ের। তাঁরা দেখেন, গলায় ফাঁস লাগানো পায়েল খাটের উপর পড়ে রয়েছেন। পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ওই ঘটনার পর পায়েলের বাড়ির লোকজন সুমিতকে ফোনে করে পায়েল হাতের শিরা কেটে ফেলেছে বলে ডাকেন। খবর পেয়ে সুমিত এলাকায় এলে তাকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

পুলিশকে সুমিত জানিয়েছে, তার গুরুদেব বলেছিল এখন বিয়ে করলে ক্ষতি হবে। এক বছর পর ফের গুরুদেব সবকিছু বিচার করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাতেন।

এলাকার বাসিন্দারা জানান, আসলে সুমিত পায়েলকে বিয়ে করতে চাইছিল না বলেই এই বাহানা শুরু করে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন