বঙ্গোপসাগরে নতুন করে নিম্নচাপ অঞ্চল তৈরি হতে চলেছে। —নিজস্ব চিত্র।
এক রাতের বৃষ্টিতে পুজোর আগে বিপর্যস্ত কলকাতা এবং শহরতলির জনজীবন। মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১০ জনের। বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া একটি নিম্নচাপ অঞ্চলের কারণেই এই বৃষ্টি বলে জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। তবে এখনই স্বস্তির সম্ভাবনা নেই। কারণ নতুন করে নিম্নচাপ অঞ্চল তৈরি হতে চলেছে। মায়ানমার থেকে ক্রমে বাংলার দিকে সরে আসছে ঘূর্ণাবর্ত। তা নিম্নচাপে পরিণত হবে একেবারে পুজোর মুখে!
হাওয়া অফিস জানিয়েছে, উত্তর ওড়িশা উপকূল সংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের উপর যে নিম্নচাপ অঞ্চলটি ছিল, তা এখনও একই জায়গায় রয়েছে। এর সঙ্গে একটি ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৭.৬ কিলোমিটার উঁচুতে। আরও ১২ ঘণ্টা নিম্নচাপ অঞ্চলটি একই জায়গায় থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। তার পর ধীরে ধীরে শক্তি হারাবে। মায়ানমার উপকূল এবং সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের উপর আরও একটি ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে। এটি ধীরে ধীরে পশ্চিম দিকে সরবে। এর প্রভাবেই ২৫ সেপ্টেম্বর উত্তর বঙ্গোপসাগরে নতুন করে একটি নিম্নচাপ অঞ্চল তৈরি হতে পারে। পশ্চিম দিকে সরতে সরতে এটি ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হবে। দক্ষিণ ওড়িশা ও উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূল সংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম এবং পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরে ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে সক্রিয় থাকবে নিম্নচাপ। তা ২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দক্ষিণ ওড়িশা উপকূল দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করতে পারে। এর প্রভাবে শনিবার দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ অংশে বিক্ষিপ্ত ভাবে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হবে। কোথাও কোথাও হতে পারে ভারী বর্ষণ।
২৫ সেপ্টেম্বর: উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, ঝাড়গ্রাম এবং বাঁকুড়ায় বিক্ষিপ্ত ভাবে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস।
২৬ সেপ্টেম্বর: দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই বিক্ষিপ্ত ভাবে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস।
২৭ সেপ্টেম্বর: দক্ষিণ ২৪ পরগনা, ঝাড়গ্রাম, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুরে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। কলকাতা, হাওড়া-সহ বিভিন্ন জেলায় বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সঙ্গে ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার বেগে বইতে পারে ঝোড়ো হাওয়া। এ ছাড়া, বাকি জেলায় বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি চলবে।
২৮ সেপ্টেম্বর: দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুরে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি, সঙ্গে ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়ার পূর্বাভাস। বাকি জেলায় হাওয়ার বেগ থাকবে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা।
২৯ এবং ৩০ সেপ্টেম্বর: দক্ষিণবঙ্গের অনেক জেলাতেই বিক্ষিপ্ত ভাবে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে।
উত্তরবঙ্গের ক্ষেত্রে বৃহস্পতিবার দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি এবং উত্তর দিনাজপুরে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। শুক্রবার সেই সতর্কতা রয়েছে কোচবিহারেও। তবে শনিবার উত্তরবঙ্গের সব জেলাতেই কমবেশি বৃষ্টি হতে পারে। ২৮ থেকে ৩০ তারিখ পর্যন্ত উত্তরে কোথাও আবহাওয়া সংক্রান্ত সতর্কতা নেই। তবে দু’-একটি জায়গায় বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
২৪ সেপ্টেম্বর, বুধবার থেকে ২৮ সেপ্টেম্বর, রবিবার পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা উপকূলঘেঁষা উত্তর ও মধ্য বঙ্গোপসাগরের উপর ঝোড়ো হাওয়া বইবে। বেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ৩৫ থেকে ৪৫ কিলোমিটার। দমকা হাওয়ার বেগ পৌঁছে যেতে পারে ঘণ্টায় ৫৫ কিলোমিটার পর্যন্তও। ফলে সমুদ্র উত্তাল থাকার সম্ভাবনা। ২৮ তারিখ পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। জারি হয়েছে লাল সতর্কতা।