Heavy rain in Kolkata

রাস্তায় এখনও জলে ডুবে বহু গাড়ি! দুর্যোগ থামতেই ফোনের বন্যা, উদ্ধারকারী সংস্থার মালিকেরা বলছেন, ‘মাথা হ্যাং করে যাচ্ছে’!

শহরের অনেক জায়গা এখনও জলের তলায়। কোথাও মাঝরাস্তায়, কোথাও পার্কিংয়ে এখনও প্রচুর গাড়ি ডুবে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পরিষেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে টোয়িং সংস্থাগুলিকে।

Advertisement

সারমিন বেগম

শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৪:২৪
Share:

শহরের রাস্তাঘাটে এখনও বহু গাড়ি জলে ডুবে। ছবি: পিটিআই।

দুর্যোগ থামতেই ফোনের বন্যা! সোমবার রাত থেকে লাগাতার ফোনে কার্যত দিশাহারা কলকাতার টোয়িং সংস্থাগুলি। রাস্তায় রাস্তায় জলে ডুবে থাকা গাড়ি তুলে দেওয়ার কাতর আর্জি পেতে পেতে মালিকদের কেউ কেউ বলছেন, ‘‘সারা ক্ষণ বেজেই যাচ্ছে ফোন। মাথা হ্যাং করে যাচ্ছে এ বার!’’ গত ২৪ ঘণ্টায় কারও কাছে পাঁচশো-ছ’শো ফোন গিয়েছে, তো কেউ বলছেন, ‘‘কম করে হলেও হাজারটা ফোন এসেছে।’’

Advertisement

সোমবার রাতের ভারী বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত গোটা কলকাতা। শহরের অনেক জায়গা এখনও জলের তলায়। কোথাও মাঝরাস্তায়, কোথায় পার্কিংয়ে এখনও প্রচুর গাড়ি ডুবে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পরিষেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে টোয়িং সংস্থাগুলিকে। কোনও কোনও সংস্থার কাছে তো সোমবার রাত থেকেই ফোন আসা শুরু হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ওই ভারী বৃষ্টিতে তাদের পক্ষে সেই ভাবে পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে বুধবার ভোর থেকে পুরোদমে পরিষেবা দেওয়া শুরু করেছে সংস্থাগুলি।

কলকাতা সংলগ্ন বরাহনগরের এক টোয়িং সংস্থার মালিক রাজীব মণ্ডল বলেন, ‘‘আমাদের গাড়িও তো জলের তলায় ছিল। আজ ভোর থেকে আমরা সার্ভিস শুরু করেছি। রাস্তা, পার্কিং থেকে গাড়ি তুলতে হচ্ছে। রাত ৩-৪টে থেকে মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। এখনও পর্যন্ত হাজারেরও বেশি ফোন এসেছে। কিন্তু আমাদের পক্ষেও তো সম্ভব হচ্ছে না। অন্তত তিন-সাড়ে তিন ঘণ্টা সময় হাতে নিয়ে ফোন করতে হবে।’’

Advertisement

দমদম এব‌ং বেলেঘাটার টোয়িং সংস্থার মালিক অভিষেক শর্মা জানান, সোমবার রাত থেকে এখনও পর্যন্ত পাঁচ-ছ’শো ফোন এসেছে। তবে এই বিপর্যয়ে লাভের মুখও দেখছেন তাঁরা। অভিষেকের কথায়, ‘‘গাড়ি কতটা ডুবে রয়েছে, তার উপর চার্জ নির্ভর করছে। দিনে যেখানে চার-পাঁচ হাজার টাকা আয় হত, এই দুর্যোগের পর সেটা ২৫-৩০ হাজার টাকা হয়ে গিয়েছে। বেশি ফোন আসছে বড় বড় আবাসনের বেসমেন্ট থেকে গাড়ি বার করার জন্য। কিন্তু সেটায় কিছু সমস্যা থাকে। গাড়ি আটকে যায়। এই পরিস্থিতিতে এই কাজও করছি আমরা।’’ একই কথা বলেন বরাহনগরের রাজীবও। তিনি জানান, এমনিতে আড়াই হাজার টাকা নেওয়া হয়। এখন তিন-সাড়ে তিন হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে। কেউ কেউ চার-সাড়ে চার হাজার টাকাও নিচ্ছেন।

লাগাতার ফোন যাচ্ছে গাড়ির বিভিন্ন সার্ভিস সেন্টারগুলিতেও। তাদের কেউ কেউ টোয়িং সার্ভিস দেয়। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জল থেকে গাড়ি তুলে তাদের কাছে পৌঁছে দিতে হচ্ছে। চিনার পার্কের একটি গাড়ি সার্ভিস সেন্টারের কর্মী তনুশ্রী দে বলেন, ‘‘আমাদের কাছেও প্রচুর ফোন আসছে। এত ফোন যে, সামাল দিতে পারছি না।’’ শহরের আর একটি সার্ভিস সেন্টারের মালিক মহেশ সিংহ বলেন, ‘‘সকলের একই কথা— ব্রেকডাউন! গাড়িতে জল ঢুকে গিয়েছে! দোকানে প্রচুর গাড়ি জমে গিয়েছে। এ সব সারাই করতে বেশ কিছুটা সময় লাগবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement