Cooch Behar TMC Clash

তৃণমূলে তৃণমূলে লড়াই, বোমাবাজি, জখম গ্রামের বধূ, আহত নেতার এক আত্মীয়! মন্ত্রীও বললেন, গোষ্ঠীকোন্দল

গোষ্ঠীকোন্দলের কথা কার্যত স্বীকার করে নিয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়নের মন্তব্য, ‘‘কোচবিহার জেলার কিছু নেতার উস্কানিতে এই সমস্ত ঘটনা ঘটছে।’’

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০২৫ ২০:৪৪
Share:

বোমা বিস্ফোরণে জখম বধূ। —নিজস্ব চিত্র।

আবার শাসকদলের গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে। সোমবার দুই পক্ষের লড়াইয়ে উত্তেজনা ছড়াল কোচবিহারে শুকটাবাড়িতে। বোমাবাজিতে জখম হলেন স্থানীয় এক বধূ। আহত হলেন তৃণমূলের প্রাক্তন অঞ্চল সভাপতির এক আত্মীয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁদের দু’জনকেই ভর্তি করানো হয়েছে কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজে। অন্য দিকে, গোষ্ঠীকোন্দলের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা নাটাবাড়ির বিধায়ক উদয়ন গুহ। তিনি দুই পক্ষকে শান্ত হতে আবেদন করেছেন।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে খবর, রবিবার রাত থেকেই তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কোচবিহার-১ ব্লকের শুকটাবাড়ি এলাকা। গন্ডগোলে জড়ায় তৃণমূলের প্রাক্তন অঞ্চল সভাপতি সিরাজুল হক এবং তৃণমূল জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিকের গোষ্ঠী। দুই গোষ্ঠীর মারামারিতে দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। বিস্তর বোমাবাজি হয়েছে রাতে। সকাল হতে না হতেই আবার শুরু হয় বোমাবাজির লড়াই। অভিযোগ, একটি বোমা ফেটে জখম হন স্থানীয় এক মহিলা। আহতের নাম নুরনাহার বেগম। তাঁর পরিবারের দাবি, বাড়ির গেটের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। হঠাৎ বাড়ির সামনে রাস্তায় এসে পড়ে একটি বোমা। বিস্ফোরণে জখম হন তিনি। পা থেকে রক্ত ঝরতে থাকে তাঁর।

অন্য দিকে, সিরাজুলের প্রতিবেশী এন্তাজুল হক সকালবেলা বাজারে যাচ্ছিলেন। সেই সময় তৃণমূলের একটি গোষ্ঠীর লোকজন তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় এবং হাতে আঘাত করেন বলে অভিযোগ। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকেও কোচবিহার মেডিকেল কলেজে ভর্তি করানো হয়েছে। এন্তাজুলের স্ত্রী সাজেনা খাতুন বলেন, ‘‘আমার স্বামী কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন। উনি ভুটানে কাজ করতেন। কিছু দিন আগে বাড়িতে এসেছেন। আজ সকালে বাজারে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ করেই ওঁর উপর হামলা হয়েছে। মাথায় এবং হাতে বড় আঘাত পেয়েছেন।’’

Advertisement

গন্ডগোলের পর কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ চত্বর থেকে সিরাজুলের পুত্র রাশেদ হককে আটক করেছে পুলিশ। রাশেদের অবশ্য দাবি, ‘‘জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিকের নেতৃত্বে ওঁর অনুগামীরা রবিবার রাত থেকেই এলাকায় বোমাবাজি করছে। আমার প্রতিবেশী এন্তাজুল হককে কুড়োল দিয়ে মেরে আহত করেছে। যাঁরা এলাকায় সন্ত্রাস করছেন, তাঁদেরই বিভিন্ন পদ দিয়ে রেখেছেন জেলা সভাপতি।’’

অন্য দিকে, গোষ্ঠীকোন্দলের কথা কার্যত স্বীকার করে নিয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়নের মন্তব্য, ‘‘কোচবিহার জেলার কিছু নেতার উস্কানিতে এই সমস্ত ঘটনা ঘটছে। বর্তমানে যাঁরা জেলার (তৃণমূলের) দায়িত্বে রয়েছেন, রাজ্যের কাছে তাঁদের ছোট করার জন্য ইচ্ছাকৃত ভাবে এই সকল ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। দ্রুত এঁদের চিহ্নিত করে দল থেকে বহিষ্কার করা উচিত।’’

স্বাভাবিক ভাবে এ নিয়ে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। তাদের জেলা সভাপতি অভিজিৎ বর্মণ বলেন, ‘‘এখানে দেখা যাচ্ছে, তৃণমূলের জেলা সভাপতির নেতৃত্বে এলাকায় বোমাবাজি হচ্ছে। ওদিকে পুলিশ-প্রশাসন নীরব দর্শক! গোটা কোচবিহার জেলায় তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলে বিপদে পড়ছেন সাধারণ মানুষ।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement