অভিষেকের কাছে নালিশ

রাজ্যের শাসক দলের একটি অংশ অভিযুক্তদের আড়াল করার চেষ্টা করছে। সে কারণেই পুলিশ হাত গুটিয়ে বসে আছে। কোচবিহার জেলা যুব তৃণমূলের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই বিষয়টি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে বলে খবর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৮ ০২:৩৩
Share:

ফাইল চিত্র।

কারও বাবা দিনমজুরি করেন। কারও বাবা টোটো চালক। বাকিদের অবস্থাও অনেকটাই একইরকম। কলেজ পাশ করা সেই যুবকদের বিরুদ্ধেই মাজিদ আনসারিকে গুলি করার অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

ঘটনার দশ দিন পরেও অভিযুক্তদের একজনকেও পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি। অভিযোগ, রাজ্যের শাসক দলের একটি অংশ অভিযুক্তদের আড়াল করার চেষ্টা করছে। সে কারণেই পুলিশ হাত গুটিয়ে বসে আছে। কোচবিহার জেলা যুব তৃণমূলের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই বিষয়টি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে বলে খবর। যুব সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অভিষেক ওই ছাত্রের চিকিৎসার জন্য ১ লক্ষ টাকা দিয়েছেন। ওই টাকা মাজিদের পরিবারের হাতে তুলে দেবেন তাঁরা। এ ছাড়াও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়েও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। পুলিশ অবশ্য কারও অভিযুক্তদের আড়াল করা হচ্ছে, এমন দাবি মানতে চাননি। কোচবিহার জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে। গ্রেফতার তাদের করা হবেই।”

তৃণমূলের কোচবিহার জেলা যুব সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়ের ঘনিষ্ঠ যুব নেতা রাকেশ চৌধুরী জানান, ২১ জুলাইয়ের সভায় যাওয়ার দিন মিছিলে তাঁরা মাজিদ আনসারিকে গুলি করার ঘটনায় অভিযুক্তদের শাস্তি দাবি করেন। পরে জেলা যুব সভাপতি অভিষেকবাবুকে জানান। তিনি বলেন, “গোটা ঘটনা শোনার পরে মাজিদের চিকিৎসার জন্য এক লক্ষ টাকা দিয়েছেন তিনি। ফিরে গিয়েই আমরা ওই টাকা মাজিদের পরিবারের হাতে তুলে দেব। সেই সঙ্গে অভিযুক্তরা দ্রুত গ্রেফতার হবে বলে আমরা আশাবাদী।” গত ১১ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার কোচবিহার স্টেশন মোড়ের কাছে গুলিবিদ্ধ হন মাজিদ আনসারি। মাজিদ কোচবিহার কলেজে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তিনি টিএমসিপির ওই কলেজ ইউনিটের আহ্বায়কের দায়িত্বে রয়েছেন। যাদের বিরুদ্ধে মাজিদকে গুলি করার অভিযোগ উঠেছে তাঁরাও ওই কলেজের প্রাক্তন ছাত্র এবং টিএমসিপি কর্মী।

Advertisement

ওই ঘটনায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে। সংগঠন সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন ধরেই কোচবিহার শহরের একাধিক কলেজে যুব নেতা অভিজিৎ দে ভৌমিক ও টিএমসি কাউন্সিলর শুভজিৎ কুণ্ডুর অনুগামীদের লড়াই চলছিল। শুভজিৎবাবু একটি মামলায় অভিযুক্ত হয়ে পুলিশের খাতায় বর্তমানে ফেরার। অভিযোগ, যারা গুলি করেছে তারা শুভজিৎবাবুর অনুগামী। ঘটনার পরে অভিযুক্তরা তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য মুন্না খানের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। মাজিদ আনসারি অভিজিৎবাববুর অনুগামী বলেই পরিচিত।

মুন্না অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ‘ষড়যন্ত্র’ বলে দাবি করেন। ঘটনার পরে বাইক চালিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। পুলিশ কেন অভিযুক্তদের একজনকেও গ্রেফতারে সমর্থ হল না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মাজিদের পরিবারের দাবি, অভিযুক্তদের একজনের বাড়ি রেলঘুমটিতেই, একজনের বাড়ি নতুনপল্লিতে। একজন থাকেন রেল কলোনির বস্তিতে। আরেকজনের বাড়ি ১ নম্বর কালিঘাট রোডে। পুলিশের এক কর্তা বলেন, “সব কয়টি বাড়িতেই তল্লাশি চালানো হয়েছে কাউকেই পাওয়া যায়নি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন