Coronavirus

এটা সাহায্য? প্রশ্ন মন্ত্রীর

সাত দিন হতে চলল কেন্দ্রীয় দলটি রাজ্যে এসেছে। প্রথম তিন দিন তাঁরা কোথাও যাননি। রাজ্য সরকারের তরফে অসহযোগিতা নিয়ে তাঁরা শুরু থেকেই প্রশ্ন তুলেছেন।

Advertisement

সৌমিত্র কুণ্ডু

শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২০ ০২:৫০
Share:

খোঁজ: শিলিগুড়ি বিধান মার্কেটের এক দোকানদারের সঙ্গে কথা বলছেন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দলের সদস্যরা। রবিবার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদলের সফরের যৌক্তিকতা নিয়ে এর আগে প্রশ্ন তুলেছে রাজ্য প্রশাসনেরই একাংশ। রবিবার উত্তরবঙ্গের একাধিক মন্ত্রীও সেই প্রসঙ্গ তুলেছেন। করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারকে সহযোগিতা করার মানসিকতা নিয়ে এই প্রতিনিধিদল আসেনি বলেই মনে করছেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। প্রশাসনের একাংশের দাবি, করোনা মোকাবিলা এবং লকডাউন কার্যকর করতে পুলিশ-প্রশাসন থেকে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা অধিকাংশই ব্যস্ত। তাই কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদলকে সঙ্গ দিতে সমস্যাই হচ্ছে। সহযোগিতা না-মেলা নিয়ে রবিবারও উত্তরবঙ্গে আসা প্রতিনিধিদল প্রশ্ন তুলেছে। তবে তাদের কাজকর্মের স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ভিন্ রাজ্য থেকে এখানে তাঁদের আসা নিয়েও এ দিন প্রশ্ন তুলেছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।

Advertisement

পর্যটনমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমার মনে হয় এঁরা রাজ্য সরকারকে সাহায্য করতে আসেননি। বরং অসহযোগিতাই করছেন।’’ আর উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, "এই প্রতিনিধিদল দিল্লির মতো রাজ্য থেকে এসেছেন, যেখানে করোনার প্রকোপ বেশি। বলা যায়, করোনার আঁতুড়ঘর। তাই তাঁদের হোম কোয়রান্টিনে থাকা উচিত। আমি মুখ্যসচিবকে বলছি যাতে, তাঁদের হোমকোয়রান্টিনে রাখা হয়। প্রতিনিধিদলের ওই সদস্যদের লালারসের নমুনা পরীক্ষা করা হোক।’’ মন্ত্রীর দাবি, এ রাজ্যে বিজেপিকে সাহায্য করতে দলটি এসেছে। এ বিষয়ে প্রতিনিধিদলের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। উত্তরবঙ্গে প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে থাকা বিনীত জোশীকে হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ করা হলেও তিনি কোনও উত্তর দেননি। বিজেপির উত্তরবঙ্গের নেতা রথীন বসু বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী অশিক্ষিতের মতো কথা বলছেন। রাজ্যের উচিত কেন্দ্রীয় দলকে সর্বতোভাবে সাহায্য করা।’’

সাত দিন হতে চলল কেন্দ্রীয় দলটি রাজ্যে এসেছে। প্রথম তিন দিন তাঁরা কোথাও যাননি। রাজ্য সরকারের তরফে অসহযোগিতা নিয়ে তাঁরা শুরু থেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। উল্টো দিকে, তাঁদের প্রসঙ্গে প্রশাসনের একটি অংশের বক্তব্য, ওঁরা কবে কোথায় যাবেন, তা-ও কিছু আগাম জানাচ্ছেন না। রবিবারও সকাল থেকে অপেক্ষার পর বেলা সওয়া ১টা নাগাদ সুকনার কাছে নিউ চামটা চা বাগানের কারখানায় যান তাঁরা। লকডাউনে চা বাগানে কিছুটা ছাড় আছে। দলটি দেখতে যায়, কারখানায় বিধি মেনে কাজ হচ্ছে কিনা। কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন প্রতিনিধিরা। সেখান থেকে বিধান মার্কেটের মুরগিহাটিতে যান। মাংসের দোকান, বাজারের ভিতরে মোট তিনটি দোকানে কথা বলেন। দুটো নাগাদ ফেরার সময় কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে মেলার মাঠে বাজার বসেছে দেখে সেখানেও ঢোকেন। ব্যবসায়ী, ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁরা নিয়ম মেনে চলছেন, সেটাও জিজ্ঞাসা করেন। প্রতিদিন এখানে অন্তত দু’হাজার খদ্দের আসেন জেনে পরে আবার আসবেন বলেও জানান প্রতিনিধিরা।

Advertisement

প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে থাকা বিনীত জোশী এর পরে বলেন, ‘‘রাজ্য এখনও সহযোগিতা করছে না। তবে সহযোগিতা চেয়ে অপেক্ষা করছি। সরকারের এগিয়ে আসা উচিত। লকডাউন কঠোর ভাবে কার্যকর করা উচিত।’’ শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি দিয়ে বেশ কিছু তথ্য জানতে চেয়েছেন। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করতে চাইলেও তা হয়নি বলে অভিযোগ তুলেছেন। সেই চিঠির কোনও উত্তর মেলেনি বলেও এ দিন জানান। সে জন্য তাঁরা অপেক্ষা করছেন বলে জানান। তিনি বলেন, ‘‘লকডাউন এখনও বাসিন্দারা ঠিক ভাবে মানছেন না। প্রশাসনের ভূমিকাও যথাযথ নয়। পুলিশ-প্রশাসনের লোকজন বিধিনিষেধ কার্যকর করতে পর্যাপ্ত সংখ্যায় নামেননি। বাজারগুলিতে ব্যবসায়ীরাই কিছু ক্ষেত্রে নিজেরা ব্যবস্থা নিচ্ছে। তা ছাড়া কেউ দেখার নেই।’’

যদিও জেলা প্রশাসন ও পুলিশের তরফে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement