রাতভর বৃষ্টিতে দার্জিলিঙের রাস্তায় ধস। —নিজস্ব চিত্র।
এক রাতের বৃষ্টিতে দার্জিলিঙের পরিস্থিতি ভয়াবহ। মিরিকে লোহার সেতু ভেঙে পড়ে অন্তত ন’জনের মৃত্যু হয়েছে। সুখিয়ায় মারা গিয়েছেন সাত জন। এ ছাড়া বিজনবাড়িতে এক জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। একাধিক রাস্তায় ধস নেমে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। আটকে পড়েছেন পর্যটকেরা। সিকিম এবং কালিম্পঙের সঙ্গে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। উদ্ধারকাজ চলছে।
মিরিক-দুধিয়ার মাঝে লোহার সেতু ক্ষতিগ্রস্ত। —নিজস্ব চিত্র।
উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি হবে, আগেই জানিয়েছিল আলিপুর আবহাওয়া দফতর। দার্জিলিঙে অতি ভারী বর্ষণের সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। সেইমতো শনিবার রাত থেকে বৃষ্টি শুরু হয়। সকাল পর্যন্ত টানা বর্ষণে বিপর্যয় ঘটে গিয়েছে। তিস্তার জল বেড়ে উঠে এসেছে জাতীয় সড়কে। তিস্তাবাজারের কাছে ২৯ মাইল ভালুখোলায় তিস্তার জল উঠে বন্ধ হয়ে গিয়েছে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। এ ছাড়া, রাতে মিরিক এবং দুধিয়ার মাঝের লোহার সেতুর একাংশ বৃষ্টিতে ভেঙে গিয়েছে। তার ফলে শিলিগুড়ি থেকে মিরিকের যোগাযোগ বন্ধ। এমনকি, দার্জিলিং শহরের সঙ্গেও যোগাযোগ বিঘ্নিত হয়েছে, যা বেশ বিরল।
মিরিক থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কার্শিয়াং) বলেন, ‘‘মিরিকে পাঁচটি মৃতদেহ ইতিমধ্যে আমরা উদ্ধার করেছি। দু’টি দেহ আগে উদ্ধার করা হয়েছে। সুখিয়ায় আরও চার জনের মৃত্যুর কথা শুনেছি। উদ্ধারকাজ চলছে। তবে আবহাওয়ার কারণে তাতে খুব সমস্যা হচ্ছে। রোহিণীর রাস্তা পুরো বন্ধ। দিলারামের দিকটাও বন্ধ। মিরিকে যাঁরা আটকে আছেন, তাঁদের বার করার চেষ্টা করছি আমরা। বাসিন্দাদেরও উদ্ধার করা হচ্ছে।’’ পরে মোট ১৩ জনের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করে পুলিশ। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
রাস্তায় উঠে এসেছে নদীর জল। —নিজস্ব চিত্র।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, দিলারামের কাছে রাস্তায় ধস নেমেছে। দার্জিলিঙে যাতায়াতের প্রধান সড়ক সেই কারণে অবরুদ্ধ। এ ছাড়া, কালিম্পং এবং সিকিমের দিকে যাওয়ার রাস্তা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। দুর্যোগে দিশাহারা বন্যপ্রাণীরাও। জঙ্গল থেকে গ্রামের দিকে চলে আসছে তারা। দু’টি হরিণ উদ্ধার করা হয়েছে। একাধিক নদী বইছে বিপদসীমার উপর দিয়ে।
দার্জিলিঙে যাঁরা ঘুরতে যান, তাঁদের কাছে পরিচিত নাম রোহিণী রোড। শনিবার রাতের বৃষ্টিতে সেই রাস্তার অবস্থাও করুণ। রাস্তার একাংশ ধসে নদীর দিকে নেমে গিয়েছে। জিটিএ-র তরফে দুর্যোগ নিয়ে একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে রবিবার সকালে। সেখানে বলা হয়েছে, পর্যটকদের জন্য আপাতত রক গার্ডেন এবং টাইগার হিল বন্ধ। দুর্যোগে পর্যটকদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।