পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র
কেউ হাজির হয়েছেন সকাল ছ’টায়। কেউ এসেছেন ভোর পাঁচটায়। কেউ বা আরও আগে ভোরের আলো ফুটতেই হাজির হয়েছেন মালদহ জেলা পরিষদের দফতরে। তখন দরজায় তালা ঝুলছে, অফিসের সামনে আবেদন পত্র হাতে নিয়ে হাজির জনা ২০ মহিলা-পুরুষ। সোমবার সকাল দশটায় যখন দফতর খুলল সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে হাজার খানেকে।
কেন এসেছেন আপনারা? হরিশ্চন্দ্রপুরের সেতারা বিবি, হবিবপুরের ফুলকুমারী মণ্ডলেরা বলেন, “বন্যার সময় ঘর-বাড়ি ডুবে গিয়ে অনেক ক্ষতি হয়েছিল। সরকারের কাছে আবেদন করলে ক্ষতিপূরণ মিলবে বলে শুনেছি।’’ সেই আবেদন করতেই এ দিন জেলা পরিষদে হাজির হয়েছেন তাঁরা।
যদিও এ দিন আবেদনপত্র জমা করতে পারেননি তাঁরা। পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন ঘোষণা হয়ে যাওয়ায় আর সেই আবেদনপত্র নেওয়া যাবে না বলে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে জেলা পরিষদ। এ দিন অফিস খোলার পরে সেকথা জানতে পেরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন আবেদনকারীরা। জেলা পরিষদের অফিসের দরজার সামনে আবেদনপত্র জমা নেওয়ার দাবিতে ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা। বেঁধে যায় তুমুল হইচই। পুলিশ লাঠি উঁচিয়ে আবেদনকারীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। তারপরেও পরিস্থিতি আয়ত্তে না আসায় নামানো হয় র্যাফ। মাইকিং করে আবেদনপত্র নেওয়া হচ্ছে না বলে জানান জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ।
বন্যার মরসুমে মালদহের ১৫টির মধ্যে ১৪টি ব্লকই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। চাষের জমি, পুকুর ক্ষতি হয়েছিল সবেরই। সম্প্রতি, রাজ্য সরকারের তরফে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের আর্থিক সাহায্য করা হয়। ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যচাষিদের থেকে আবেদন পত্র জমা নেওয়ার কাজ শুরু করে প্রশাসন। পাশাপাশি বন্যায় ক্ষতি হওয়ার কথা জানিয়ে সাধারণ মানুষও জেলা পরিষদে আবেদন করতে শুরু করেন। ভি়ড় এমনই হয় যে পরিস্থিতি সামাল দিতে বাঁশের ব্যারিকেড করে দিতে হয়। গত, শুক্রবার পর্যন্ত আবেদনপত্র জমা নেওয়া হয়েছে। শনি ও রবিবার জেলা পরিষদ বন্ধ ছিল। এরই মাঝে গত শনিবার রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষণা হয়ে যায়।