গ্রেফতার সাকিব (বাঁ দিকে)। — নিজস্ব চিত্র
প্রেমের ফাঁদ পেতে দুই নাবালিকাকে পাচারের ছক কষেছিল বাংলাদেশি এক যুবক। শেষরক্ষা হল না। পাচারের আগেই নাবালিকা-সহ ওই যুবককে গ্রেফতার করল পুলিশ। শুক্রবার গভীর রাতে মালদহের ইংরেজবাজার শহরের রথবাড়ি এলাকার ঘটনা।
ধৃত সাকিব শেখের বাড়ি বাংলাদেশের রাজশাহী জেলার নাজিরপুর থানার নওগা গ্রামে। শনিবার ধৃতকে ১০ দিনের হেফাজতে চেয়ে মালদহ জেলা আদালতে পেশ করেছে পুলিশ। বিচারক ৬ দিনের পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করেছেন। উদ্ধার হওয়া বহরমপুরের বাসিন্দা দুই নাবালিকাকে তুলে দেওয়া হয়েছে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির হাতে। জানা গিয়েছে ধৃত সাকিব বহরমপুর থানার মুক্তিনগরের উস্তিয়া গ্রামে বেআইনি ভাবে এক ব্যক্তির বা়ড়িতে ভাড়া থাকত।
হিলি সীমান্ত দিয়ে ওই দুই নাবালিকাকে নিয়ে বাংলাদেশে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল বলে পুলিশের জেরায় স্বীকার করেছে ওই যুবক। মালদহের পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, ‘‘ধৃতকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করা হবে। ঘটনায় আরও কেউ জড়িত রয়েছে বলে অনুমান।’’
ইংরেজবাজারের রথবাড়ি স্ট্যান্ডে শুক্রবার রাত ১২টা নাগাদ দুই নাবালিকাকে নিয়ে এক যুবককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে সন্দেহ হয় পুলিশের। সেই সময় ইংরেজবাজার থানার টহলরত পুলিশ ওই যুবককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই কান্নায় ভেঙে পড়ে ওই দুই নাবালিকা। তারপরই যুবককে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। রাতেই দুই নাবালিকাকে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির হাতে তুলে দেওয়া হয়। দুই নাবালিকার ফোন নম্বর নিয়ে তাদের পরিবারের লোকেদের খবর দেয় পুলিশ। দিনমজুরের পরিবারের মেয়ে ওই দু’জন বহরমপুরের হাতিনগর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে পাঠরতা। খবর পেয়ে মালদেহ আসেন ওই দুই নাবালিকার পরিবারের লোকেরা। তাঁরা বলেন, ‘‘পুলিশের তৎপরতায় আমরা মেয়েদের ফিরে পেলাম। আমরা চাই পুলিশ ওই যুবককে শাস্তি দিক।’’ পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকাল ১০টা নাগাদ সাইকেল নিয়ে ওই দুই ছাত্রী স্কুলে যাওয়ার জন্য বের হয়। বিকেলের পরেও বাড়ি ফিরে না আসায় আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে খোঁজ খবর শুরু করে পরিবার। বহরমপুর থানাতেও নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়েছিল বলে দাবি পরিবারের।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত সাকিব জেরায় জানিয়েছে নবম শ্রেণির পড়ুয়া ওই নাবালিকার সঙ্গে সপ্তাহখানেক আগে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে ওঠে তার। মালদহে আত্মীয়ের বাড়িতে ঘুরতে আসার নাম করে শুক্রবার অষ্টম শ্রেণিতে পাঠরতা বান্ধবীকে সঙ্গে নিয়ে ওই মেয়েটি সাকিবের সঙ্গে বহরমপুর থেকে বাসে করে রাতে মালদহে নামে।