Coochbehar Government Medical College

হাসপাতালের পদ থেকে সরলেন মিহির

আরও কোণঠাসা হয়ে পড়লেন তৃণমূল বিধায়ক মিহির গোস্বামী। বৃহস্পতিবার কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল তাঁকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৬:২৪
Share:

মিহির গোস্বামী।

আরও কোণঠাসা হয়ে পড়লেন তৃণমূল বিধায়ক মিহির গোস্বামী। বৃহস্পতিবার কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল তাঁকে। তাঁর জায়গায় দায়িত্ব দেওয়া হল প্রাক্তন সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়কে।

Advertisement

সূত্রের খবর, কিছুদিন আগে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন নিগমের চেয়ারম্যানের পদ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল মিহিরকে। তা নিয়ে মিহির অনুগামীরা ক্ষুব্ধও ছিলেন। দলের একটি অংশ অবশ্য দাবি করেছে, দলীয় নেতৃত্ব তরুণ নেতাদের বেশি করে জায়গা দিতে চাইছেন। রাজবংশী ভোটের দিকে লক্ষ্য রেখে পার্থকে কালিয়াগঞ্জে প্রচারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। সব মিলিয়ে দল তাঁকে গুরুত্ব দিচ্ছে বলেই মনে করছেন অনেকে।

পার্থপ্রতিম বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা দায়িত্ব দিয়েছেন তা পালন করব। সবার সঙ্গে আলোচনা করব।” মিহিরবাবু কিছু না বললেও তাঁর অনুগামী কোচবিহার দক্ষিণ বিধাসভার যুগ্ম আহ্বায়ক সাবিদুল ইসলাম বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা সিদ্ধান্ত নেবেন, তা মেনেই আমরা চলব। সমস্ত দিক ভেবেই তিনি নানা দায়িত্ব দিচ্ছেন।” কেউই অবশ্য প্রকাশ্যে ক্ষোভের কথা বলতে চাননি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মিহির অনুগামী বলেন, “মিহির গোস্বামী বর্ষিয়ান তৃণমূল নেতা। তাঁর স্বচ্ছ ভাবমূর্তি নিয়ে অন্যরকম ‘ইমেজ’ আছে। তাই তাঁকেও দায়িত্ব দেওয়া উচিত। পরপর দু’টি জায়গা থেকে সরিয়ে দেওয়ায় অন্যরকম

Advertisement

বার্তা যায়।”

কোচবিহারে তৃণমূলের দলীয় কোন্দল রয়েছে দীর্ঘসময় ধরেই। গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির কাছে হেরে যাওয়ার পরে রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে সরিয়ে দলের জেলা সভাপতি করা হয় বিনয়কৃষ্ণ বর্মণকে। পার্থপ্রতিমকে সেই সময়ই কার্যকরী সভাপতি করা হয়। ওই সময় বিনয়-পার্থের পাশেই দেখা যায় মিহির গোস্বামীকে। তিনি দলীয় রাজনীতিতে রবীন্দ্রনাথ বিরোধী বলেই পরিচিত। অবশ্য কিছুদিন ধরে মিহির ও পার্থের অনুগামীদের বিরোধ প্রকাশ্যে আসে। কোচবিহার দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের দলীয় কর্মসূচি নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে দুইপক্ষের অনুগামীরা অভিযোগ পর্যন্ত জানায়।

এ বারে মিহিরকে সরিয়ে রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পার্থকে দেওয়ায় তা আরও বেড়ে গিয়েছে। তাতে ফের তৃণমূলের কোচবিহার জেলা রাজনীতিতে দ্বন্দ্বের নতুন সমীকরণ তৈরি হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

দলের একটি অংশ অবশ্য দাবি করেছে, দল বা নেত্রী কাউকেই ফেলবেন না। তিনি কিছু জায়গায় ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে দায়িত্ব দিচ্ছেন। যাতে সব জায়গায় কাজের গতি আসে। সামনেই লোকসভা নির্বাচন, তার পরেই বিধানসভার দামামা বেজে যাবে। এই সময় প্রবীণ ও নবীনদের সমানভাবে সামনে রেখে দল ও প্রশাসন সাজিয়ে তুলছেন তিনি।

তাই কিছু ক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথ-বিনয়কৃষ্ণকে যেমন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তেমনই পার্থকেও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মিহির গোস্বামীকে প্রয়োজন মতো কাজের দায়িত্ব দেবেন তিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলা নেতার কথায়, “কোনও পদই কারও জন্য স্থায়ী নয়। আর পদ নিয়ে বসে থেকে লাভ নেই। সেখানে কাজ করতে হবে, নতুবা সরে যেতে হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন