কাটমানি নালিশে পঞ্চায়েতে ঢুকতে বাধা

কমিটির অন্যতম সদস্য তথা যুব তৃণমূল নেতা আনিসুর রহমানের দাবি, ইতিমধ্যেই প্রশাসন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ৫টি সরকারি উন্নয়নমূলক প্রকল্পে ৬ লক্ষ ৮৮ হাজার টাকার দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৯ ০২:৪৬
Share:

বিন্দোলে পঞ্চায়েত কার্যালয়ের সামনে অবস্থান। নিজস্ব চিত্র

একটানা আন্দোলন সত্ত্বেও আর্থিক দুর্নীতি ও কাটমানি নেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে উত্তর দিনাজপুর প্রশাসন আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছে না, এই অভিযোগে অভিযুক্তদের রায়গঞ্জ ব্লকের বিন্দোল পঞ্চায়েত কার্যালয়ে ঢুকতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল বিন্দোল নাগরিক কমিটি। সোমবার থেকে পঞ্চায়েতের তৃণমূলের অভিযুক্ত প্রধান, প্রধানের স্বামী ও পঞ্চায়েতের চার জন কর্মীর পঞ্চায়েত কার্যালয়ে ঢোকা রুখতে ওই কার্যালয়ে সামনে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। কমিটির সদস্যরা এ দিন বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত অবস্থান বিক্ষোভ করেন। এ দিন অবশ্য অভিযুক্তরা পঞ্চায়েতের কার্যালয়ে যাননি।

Advertisement

কমিটির অন্যতম সদস্য তথা যুব তৃণমূল নেতা আনিসুর রহমানের দাবি, ইতিমধ্যেই প্রশাসন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ৫টি সরকারি উন্নয়নমূলক প্রকল্পে ৬ লক্ষ ৮৮ হাজার টাকার দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, ‘‘প্রশাসন যত দিন না পর্যন্ত তদন্ত শেষ করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা না নিচ্ছে, তত দিন অবস্থান বিক্ষোভের মাধ্যমে অভিযুক্তদের পঞ্চায়েত কার্যালয়ে ঢুকতে দেওয়া হবে না।’’

কমিটির চার সদস্য তৃণমূল নেতা খলিলুর রহমান, সিপিএম নেতা মোস্তাক আলি, বিজেপি নেতা প্রাণ বর্মণ ও কংগ্রেস নেতা ফরিদ বক্সের দাবি, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবিতে এবং তাঁরা দোষী প্রমাণিত হলে গ্রেফতারের দাবিতে দেড় মাস ধরে কমিটির সদস্যরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যে একাধিক বার পঞ্চায়েত কার্যালয় ও রায়গঞ্জের বিডিও অফিসে বিক্ষোভ ও জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, প্রশাসন গোড়া থেকেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্তে গড়িমসি করে তাঁদের আড়ালের চেষ্টা করছে।’’

Advertisement

রায়গঞ্জের বিডিও রাজু লামা বলেন, ‘‘জেলা প্রশাসন ঘটনার তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। তদন্ত শেষ হলেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

বিন্দোল পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান লায়লা খাতুন, তাঁর স্বামী মনসুর আলিও যুব তৃণমূলের নেতা। গত দু’মাসে বিন্দোল নাগরিক কমিটির তরফে একাধিক বার লায়লা, মনসুর ও পঞ্চায়েতের কর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে জেলাশাসকের কাছে ১০০ দিনের প্রকল্প-সহ পঞ্চায়েতের বিভিন্ন প্রকল্প থেকে টাকা তছরুপের লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ জানানো হয়। কমিটির অভিযোগ, অভিযুক্তরা ১০০ দিনের প্রকল্প-সহ বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প থেকে ১ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা তছরুপ করেছেন। ১০০ দিনের কাজ ও সরকারি সুবিধা দেওয়ার বিনিময়ে তাঁরা পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকার বহু বাসিন্দার কাছ থেকে কাটমানি খেয়েছেন।

লায়লা ও মনসুর বলেন, ‘‘বেআইনি ভাবে ঠিকাদারির কাজের বরাত না পেয়ে পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হচ্ছে। প্রশাসন নিরপেক্ষ তদন্ত করলেই সব স্পষ্ট হয়ে যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন