সবং-কাণ্ডের প্রতিবাদে অবরোধ উত্তর জুড়েই

সবংয়ে ছাত্র পরিষদের সমর্থককে খুনের অভিযোগে অবরোধে নেতৃত্ব দিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। শনিবার সকালে সবংয়ের ঘটনার প্রতিবাদে বাগডোগরার বিহারমোড়ে পথ অবরোধ করেছিল ছাত্র পরিষদ সমর্থকরা।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৫ ০২:২৪
Share:

শিলিগুড়িতে অবরোধ। —নিজস্ব চিত্র।

সবংয়ে ছাত্র পরিষদের সমর্থককে খুনের অভিযোগে অবরোধে নেতৃত্ব দিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। শনিবার সকালে সবংয়ের ঘটনার প্রতিবাদে বাগডোগরার বিহারমোড়ে পথ অবরোধ করেছিল ছাত্র পরিষদ সমর্থকরা। সেই অবরোধে নেতৃত্ব দিতে পৌঁছে যান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও। উত্তরবঙ্গের ৫ সাংগঠনিক জেলা কংগ্রেস নেতাদের নিয়ে বৈঠক করতে এ দিন শিলিগুড়িতে অধীরবাবুর আসার কথা ছিল। বাগডোগরা বিমানবন্দরে নেমে শিলিগুড়ি যাওয়ার পথে অবরোধে যোগ দেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। বেশ কিছুক্ষণ তিনি নিজে অবরোধের নেতৃত্ব দেন। অধীরবাবু বলেন, ‘‘রাজ্য জুড়েই ছাত্র পরিষদের আন্দোলন চলছে। বিভিন্ন জেলা কংগ্রেসের নেতারা সামিল হয়েছেন। আন্দোলন জারি থাকবে।’’

Advertisement

এ দিন বেলা দেড়টা নাগাদ ছাত্র পরিষদের কর্মী-সমর্থকরা বাগডোগরা কলেজে বনধ করতে গেলে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। অন্তত ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়। বেলা ৩ টা নাগাদ ব্যক্তিগত জামিনে ছাড়া পান। হাসমিচকেও এ দিন সবংয়ের ঘটনার প্রতিবাদে ছাত্র পরিষদের তরফে বিক্ষোভ দেখান। আজ, রবিবার হাসমিচকে ফের বিক্ষোভ আন্দোলনে সামিল হবেন তারা। অবরোধ আন্দোলন হয়েছে উত্তরবঙ্গের অনান্য জেলাগুলিতেও। পরীক্ষা থাকার কারমে জলপাইগুড়ির কয়েকটি স্কুলকে ধর্মঘটের আওতার বাইরে রাখা হয়। বাকি স্কুলগুলিতেও এ দিন পড়ুয়ার সংখ্যা ছিল স্বভাবিকের থেকে অনেক কম। সব স্কুলের সামনেই ধর্মঘট সমর্থকেরা পিকেটিং করেছেন। জলপাইগুড়ির আনন্দচন্দ্র কলেজ, আই কলেজ এবং প্রসন্নদেব মহিলা কলেজের সামনেও বিক্ষোভ দেখিয়েছে ছাত্র পরিষদ।

এ দিন বালুরঘাটে অধিকাংশ স্কুলেই পড়ুয়াদের অনুপস্থিতির কারণে আগেই ছুটি হয়ে যায়। ছাত্র পরিষদ সমর্থকদের পিকেটিঙের ফলে বালুরঘাটের পতিরাম কলেজ এ দিন বন্ধ ছিল। বিকেল ৩ টা নাগাদ জেলা ছাত্র পরিষদ সভাপতি সৌরভ প্রসাদের নেতৃত্বে বালুরঘাটের মঙ্গলপুর হিলিমোড়ে আধঘন্টা পথ অবরোধ করে ছাত্ররা বিক্ষোভ দেখায়। এ দিন দুপুর ১২টা নাগাদ ইংরেজবাজার রথবাড়ি মোড় বরকতের মূর্তির পাশে অবস্থান বিক্ষোভ করে কংগ্রেস ও ছাত্র পরিষদের নেতারা। প্রায় ৩০ মিনিট ধরে বিক্ষোভ চলে। বিক্ষোভে নেতৃত্বে দেন জেলা কংগ্রেসের সাধারন সম্পাদক তথা ইংরেজবাজার পুরসভার কাউন্সিলর নরেন্দ্র নাথ তিওয়ারি। নরেন্দ্রনাথবাবু বলেন, ‘‘শুধু শহরেই নয়, জেলার সমস্ত ব্লকেই আমাদের কর্মীরা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন। লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে।’’

Advertisement

বিক্ষোভ মিছিল দেখা গিয়েছে চাঁচলেও। চাঁচল ও হরিশ্চন্দ্রপুর কলেজে এ দিন স্বাভাবিক পঠন পাঠন হয়নি। এ দিন কলেজ খোলার আগেই দুটি কলেজে তালা ঝুলিয়ে পিকেটিং শুরু করে ছাত্র পরিষদ সমর্থকরা। তবে সামসি কলেজে পিকেটিং করা হলেও কলেজের আভ্যন্তরীন কাজকর্ম হয়েছে বলে কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে। চাঁচলের গোবিন্দপাড়া হাই স্কুল ছাড়া চাঁচলের বাকি স্কুলগুলিতে অবশ্য স্বাভাবিকভাবেই পঠন-পাঠন হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। গোবিন্দপাড়া স্কুল খোলার আগেই বিক্ষোভকারীরা মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ায় শিক্ষক ও পড়ুয়াদের ফিরে যেতে হয়। হরিশ্চন্দ্রপুরে ব্লক কংগ্রেসের তরফে সবংয়ের ঘটনার প্রতিবাদে বিকালে মিছিল ও পথসভা করা হয়। বিক্ষোভ আন্দোলন হয়েছে কোচবিহার এবং উত্তর দিনাজপুরেও।

রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জ, হেমতাবাদ ও ইটাহারের বিভিন্ন হাইস্কুল ও প্রাথমিক স্কুলে এ দিন পঠনপাঠন হয়নি। সকাল ১০টা নাগাদ ছাত্র পরিষদের সমর্থকেরা রায়গঞ্জের বিভিন্ন হাইস্কুল ও কলেজের গেটে সংগঠনের পতাকা লাগিয়ে শিক্ষক শিক্ষিকাদের প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার অনুরোধ করেন। এদিন রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়েও স্বাভাবিক পঠনপাঠন হয়নি। কালিয়াগঞ্জে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান বিক্ষোভ করেছে ছাত্র পরিষদ। রায়গঞ্জ সুরেন্দ্রনাথ কলেজ, ইটাহারের ডক্টর মেঘনাদ সাহা কলেজ ও ডালখোলা কলেজে উপস্থিতির হার কম থাকায় পঠনপাঠন ব্যহত হয়। সন্ধ্যায় ছাত্র পরিষদের তরফে রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের সামনে অস্থায়ী শহিদ বেদিতে সবংয়ের নিহত ছাত্রের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মোমবাতি জ্বালিয়ে খুনের ঘটনার প্রতিবাদ জানানো হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন