তিন ছাত্রীর শ্লীলতাহানি, উদ্বেগ স্কুলে

তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির একাধিক ছাত্রীর অভিভাবকদের কথায়, ‘‘একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে সন্তানতুল্য ছাত্রীদের শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণের চেষ্টার মতো গুরুতর অভিযোগ ওঠাটাই উদ্বেগজনক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৮ ১৫:২০
Share:

চতুর্থ শ্রেণির তিন ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছিল স্কুলেরই এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। শনিবার রায়গঞ্জের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই ঘটনা জানাজানি হওয়ার আগেই স্কুল ছুটি হয়ে গিয়েছিল। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে অভিভাবকদের মধ্যে।

Advertisement

গত ৭ এপ্রিল স্কুল ছুটির পর শিক্ষক ব্রজেন দেবশর্মা রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ার বাসিন্দা চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রীকে ক্লাসরুমে আটকে মোবাইল ফোনে অশ্লীল ভিডিও দেখিয়ে শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণের চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। একই দিনে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে একই এলাকার চতুর্থ শ্রেণির আরও দুই ছাত্রীকে দীর্ঘ দিন ধরে স্কুল ছুটির পরে ক্লাসরুমে আটকে রেখে শ্লীলতাহানি করারও অভিযোগ ওঠে। বৃহস্পতিবার এক ছাত্রীর কাকা কর্ণজোড়া পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের করেন।

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়াদের প্রথম ইউনিট টেস্ট ছিল। পরীক্ষা থাকা সত্ত্বেও যৌন নির্যাতনের আতঙ্কে অনেক অভিভাবকই তাঁদের ছেলেমেয়েদের এ দিন স্কুলে পাঠাননি। অনেকে আবার ছেলেমেয়েদের স্কুলে পৌঁছে দিয়ে ছুটি না হওয়া পর্যন্ত দাঁড়িয়ে ছিলেন স্কুলের সামনে। এই স্কুলে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত ৬০ জন ছাত্রী সহ মোট পড়ুয়া সংখ্যা ৮৪ জন। অভিযুক্ত ওই শিক্ষক ছাড়াও আরও দু’জন শিক্ষিকা রয়েছেন। এ দিন ছাত্র ও ছাত্রী মিলিয়ে ৪২ জন পড়ুয়া হাজির ছিল, দাবি স্কুল কর্তৃপক্ষের। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা বলেন, ‘‘ব্রজেনের বিরুদ্ধে তিন ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণের অভিযোগ ওঠায় আতঙ্কে রয়েছেন সমস্ত অভিভাবক। স্কুলে সাধারণ দিনে ৬০-৬৫ জনের মতো পড়ুয়া হাজির থাকে। পরীক্ষার দিনে তো উপস্থিতির হার একশো শতাংশই থাকে। কিন্তু এই ঘটনার পরে আজ, পরীক্ষার দিনেও স্কুলে পড়ুয়াদের উপস্থিতি ছিল ৫০ শতাংশ। শনিবার থেকে ব্রজেন স্কুলে আসছেন না। এমন অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর শাস্তি
দাবি করছি।’’

Advertisement

তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির একাধিক ছাত্রীর অভিভাবকদের কথায়, ‘‘একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে সন্তানতুল্য ছাত্রীদের শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণের চেষ্টার মতো গুরুতর অভিযোগ ওঠাটাই উদ্বেগজনক। নিরাপত্তার অভাবে আমরা আমাদের মেয়েদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছি। অভিযুক্ত শিক্ষককে স্কুল থেকে সরানোর দাবি জানাচ্ছি।’’ উত্তর দিনাজপুরের প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক সুজিতকুমার মাইতি বলেন, ‘‘সরকারি কাজে আমি বাইরে ছিলাম। খোঁজ নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিচ্ছি।’’

জেলাশাসক আয়েশা রানি জানান, প্রশাসন তদন্ত করছে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে দোষ প্রমাণিত হলে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হবে। পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘অভিযুক্ত পলাতক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন