হিমঘর নেই, আলু রাখতে নাকাল চাষি

হাতে গোনা হিমঘর। তাই উৎপাদিত আলু কোথায় রাখা হবে, তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে কৃষকদের। চিন্তিত প্রশাসন ও হিমঘর মালিকরাও। বুধবার বিষয়টি নিয়ে দিনহাটার মহকুমাশাসকের দফতরে আলোচনায় বসেছিলেন হিমঘর মালিকরা।

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:১২
Share:

জমে রয়েছে আলু। — ফাইল চিত্র

হাতে গোনা হিমঘর। তাই উৎপাদিত আলু কোথায় রাখা হবে, তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে কৃষকদের। চিন্তিত প্রশাসন ও হিমঘর মালিকরাও। বুধবার বিষয়টি নিয়ে দিনহাটার মহকুমাশাসকের দফতরে আলোচনায় বসেছিলেন হিমঘর মালিকরা। জেলা প্রশাসনের তরফেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। কৃষি বিপণন দফতর সূত্রে খবর, কোচবিহার জেলায় বারোটি হিমঘরে দেড় লক্ষ মেট্রিক টন আলু রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানে এ বার কমপক্ষে দশ লক্ষ মেট্রিক টন আলু উৎপাদন হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই বাজারে যে আলু উঠেছে তাতে আড়াই থেকে তিন টাকা পাইকারি দরে আলু বিক্রি হচ্ছে। কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথন বলেন, “ওই বিষয়টি আমাদের নজরে রয়েছে। চাষিরা কোনওভাবেই যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হন সে দিকে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।”

Advertisement

উত্তরবঙ্গ হিমঘর মালিক সমিতির সম্পাদক মানিক বৈদ জানান, চলতি মাসের শেষ সপ্তাহ থেকেই হিমঘরগুলি বন্ড দেওয়ার কাজ শুরু করবে। সেক্ষেত্রে যাতে কোনও সমস্যা না হয় সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তাঁরা প্রশাসনের কাছে আর্জি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “চাহিদা অনুসারে হিমঘরের সংখ্যা কম। এবারে ফলন অনেক বেশি হয়েছে। পাশের রাজ্যেও এবারে আলুর ফলন ভাল হয়েছে। তা নিয়েই আমরা চিন্তায় আছি ।”

দিনহাটা মহকুমা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক তথা ফোসিনের সদস্য রানা গোস্বামী এ দিন দিনহাটার মহকুমাশাসক কৃষ্ণাভ ঘোষের সঙ্গে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, “আমরা মহকুমাশাসককে পরিস্থিতির কথা জানিয়েছি। যাতে সুষ্ঠু ভাবে সবকিছু হয় সে ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়ার আবেদন জানিয়েছি।”

Advertisement

কৃষি দফতর সূত্রের খবর, কোচবিহারে এ বার প্রায় তিরিশ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় ফলন অন্যবারের তুলনায় ভাল হয়েছে। নতুন আলু বাজারে উঠতেই দর কমে গিয়েছে। উত্তরবঙ্গ থেকে আলু মূলত যায় অসম, বিহার, ওড়িশা সহ উত্তর পূর্ব ভারতে। হিমঘর মালিকরা দাবি করেছেন, ওই রাজ্যগুলিতেও এ বার আলুর ফলন ভাল। তাই খুব বেশি আলু ভিনরাজ্যে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। এই অবস্থায় প্রত্যেক চাষি আলু রাখার জন্য হিমঘরের নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। বারোটি হিমঘরে ওই আলু রাখা সম্ভব নয়। কোচবিহারের একটি ফার্মাস ক্লাব সাতমাইল সতীশ ক্লাবের সম্পাদক অমল রায় বলেন, “কিছু হিমঘরে বন্ড দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সেখানে ফড়েদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে বলে অভিযোগ আমরা পেয়েছি। যতটুকু আলু রাখা যাবে তা যাতে কৃষকরাই রাখতে পারেন তা দেখা উচিত।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন