West Bengal Lockdown

বসে গেল ব্যারিকেড, এল দলও

এ দিনই দিল্লি থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার বিশেষ বিমানে বাগডোগরায় এসে পৌঁছয় পাঁচ সদস্যের কেন্দ্রীয় দল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২০ ০৪:২০
Share:

অনবহিত: শিলিগুড়ি পুরসভার ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের রাস্তায় ব্যারিকেড দেওয়া হলেও নজরদারির অভাবে অবাধ যাতায়াত। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

এলাকায় ঢোকা বা বার হওয়ার সব রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পুলিশের তরফে বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড করা হয়েছে, যাতে কেউ এলাকা থেকে বার হতে বা এলাকায় ঢুকতে না পারেন। বন্ধ এলাকার বাজার, দোকানপাট। পুরসভা জীবাণুনাশক ছড়াচ্ছে। বাড়ি বাড়ি সমীক্ষা করছে স্বাস্থ্য দফতর। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, র্যাপিড কিট এলেই পরীক্ষা শুরু হবে। এ ভাবেই সোমবার থেকে শিলিগুড়ির ৪১ নম্বর ওয়ার্ড, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল লাগোয়া একটি আবাসন এবং তার লাগোয়া এলাকার 'কনটেনড' জায়গায় করোনা রুখতে পুলিশ-প্রশাসন সম্পূর্ণ লকডাউন করে দিয়েছে। শিলিগুড়ির উপকন্ঠে জলপাইগুড়ি জেলার মধ্যে থাকা ডাবগ্রামের একতিয়াশাল এলাকাকে ‘কনটেনড’ জ়োন ঘোষণা করে সেখানে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। প্রশাসন সূত্রের খবর, পুলিশ, পুরসভা, পঞ্চায়েত, স্বাস্থ্য দফতর, প্রশাসন সমন্বয় রেখে কাজ শুরু করেছে।

Advertisement

এ দিনই দিল্লি থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার বিশেষ বিমানে বাগডোগরায় এসে পৌঁছয় পাঁচ সদস্যের কেন্দ্রীয় দল। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি ও কালিম্পং জেলা পরিদর্শনের জন্যই তাঁরা। এসএসবি সূত্রে জানা গিয়েছে, বাগডোগরায় নেমে তাঁরা রানিডাঙায় এসএসবি'র গেস্ট হাউজে চলে যান। সব কিছু ঠিক থাকলে মঙ্গলবার তাঁরা তিন জেলা পরিদর্শন করবেন। তবে বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্যের মতভেদের আবহে জেলা প্রশাসন বা জেলা স্বাস্থ্য দফতর এই প্রসঙ্গে কিছু বলতে চায়নি।

কালিম্পংয়ের ওমদেন রোডের বাসিন্দা মহিলার মৃত্যুর পরে তাঁর ঘনিষ্ঠজন ও সংস্পর্শে আসা সকলের হয় চিকিৎসা হয়েছে, নয়তো কোয়রান্টিনে রাখা হয়েছে। প্রায় সবাই সুস্থ। জিটিএ কর্তৃপক্ষের দাবি, কালিম্পংয়ে এই মূহূর্তে কোনও করোনা আক্রান্ত নেই। তার পরেও কেন্দ্রীয় দল পাহাড়ে পরিদর্শনে আসায় মোর্চা সভাপতি বিনয় তামাং বলেন, ‘‘রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করেই কেন্দ্রীয় দল পাঠানো উচিত। করোনা নিয়ে ঐক্যবদ্ধ লড়াই দরকার, রাজনৈতিক লড়াই নয়।’’ তাঁর কথায়, ‘‘ক’দিন আগে কেন্দ্র জানাল, দার্জিলিং ও কালিম্পং স্পর্শকাতর নয়। নতুন করে সংক্রমণের ঘটনা ঘটেনি। আবার সেই সরকার এখন বলছে, দুই জেলায় লকডাউন সঠিকভাবে পালন হচ্ছে না। আমরা বলছি, একযোগে লড়াই চাই। কিন্তু কোনও উদ্দেশ্য নিয়ে করোনা লড়াই করাটা বাঞ্ছনীয় নয়।’’

Advertisement

প্রশ্ন উঠেছে, জলপাইগুড়ি কেন উদ্বেগের তালিকায়? প্রশাসন সূত্রে খবর, শিলিগুড়ি পুরসভার ৪১ নম্বর ওয়ার্ডটি প্রশাসনিক ভাবে জলপাইগুড়ি জেলার মধ্যে পড়ে। সেবক রোড, ইস্কন মন্দির রোড-সহ সর্বত্র রবিবার বিকেল থেকেই বসেছে বাঁশের ব্যারিকেড। এ দিন সকালে পুরসভার দল গিয়ে জীবাণুনাশক ছড়ায় ওয়ার্ডের বেশ কিছু এলাকায়। স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পারিষদ শঙ্কর ঘোষ, কাউন্সিলর উপস্থিত ছিলেন।

মেডিক্যাল কলেজ লাগোয়া আবাসনটি কলমজোত এলাকায়। সেখানে যাতায়াতের রাস্তাগুলিতেও এ দিন ব্যারিকেড বসিয়েছে পুলিশ। দার্জিলিঙের জেলাশাসক এস পুন্নম বলম বলেন, ‘কনটেনড’ এলাকা হিসেবে সমস্ত বিধি নিষেধ জারি করা হয়েছে ওখানে। স্বাস্থ্য পরীক্ষাও হয়েছে। র্যাপিড কিট এলে নমুনা পরীক্ষা শুরু হয়ে যাবে।’’ ওই এলাকা মাটিগাড়া-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে। প্রধান হরেন রায় বলেন, ‘‘বাড়ি বাড়ি যাতে নিত্য পণ্য ও ওষুধ পৌঁছে দেওয়া হয়, তাঁদের ফোন নম্বর সকলকে জানিয়ে দেবে ব্লক প্রশাসন।’’ শিলিগুড়ি পুরসভার ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডেও একই ব্যবস্থা চালু করার কথা। এর মধ্যে বাজারে ভিড় কমাতে এ দিন বিধান মার্কেট বাজার কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের মেলার মাঠে পাঠানো হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement