সিপিএমের পঞ্চায়েত সদস্যের উপস্থিতিতে সালিশির মাধ্যমে মিটমাটের চেষ্টা হয়েছিল। শর্তে রাজি না হওয়ায় নবম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে প্রতিবেশী যুবককে গ্রেফতার করল কোতোয়ালি থানার পুলিশ। রবিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের ডেঙ্গুয়াঝার এলাকার গোমস্তাপাড়ায়। অভিযোগ, নাবালিকা গর্ভবতী হয়ে পড়লে যুবক তাকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে গর্ভপাতও করায়। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত সন্তোষ রায় পেশায় চা শ্রমিক। পঞ্চায়েত সদস্য অবশ্য সালিশির ঘটনার দায় অস্বীকার করেছেন। ছাত্রীর পরিবারের দাবি, সামাজিক লজ্জার কথা ভেবে সন্তোষের কাছে আড়াই বিঘা জমি চেয়ে তাঁরা ঘটনাটি চাপা দিতে চেয়েছিলেন।
কোতোয়ালি থানার মহিলা সেলের আইসি কেএল শেরপা জানান, তদন্ত শুরু হয়েছে। ওই ছাত্রীর মা তিন মেয়েকে নিয়ে গোমস্তাপাড়ায় থাকেন। দু’সপ্তাহ আগে জানতে পারেন বড় মেয়ে গর্ভবতী। মেয়েকে প্রশ্ন করে সন্তোষের কথা জানতে পারলেও যুবক ঘটনার কথা অস্বীকার করে বলে অভিযোগ। এমনকী সে মারধরেরও হুমকি দেয়। অভিযোগ, এর পর মঙ্গলবার ছাত্রীকে সে জোর করে হাসপাতালে নিয়ে গর্ভপাত করায়। পুলিশ আরও জানিয়েছে, পেশায় ব্যান্ড বাদক ছাত্রীর বাবা বর্তমানে দ্বিতীয় বিয়ে করে থাকেন লাটাগুড়ি সংলগ্ন ক্রান্তি মোড়ে। সাত মাস আগে এক আদিবাসী তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার হলেও সম্প্রতি জেল থেকে জামিনে ছাড়া পেয়েছেন। তাঁর দাবি, গত চার মাস ধরে তাঁর মেয়ের সঙ্গে সম্তোষের সম্পর্ক। পুলিশ সূত্রের খবর, শনিবার ছাত্রীর বাবা-মা সন্তোষকে বাড়িতে ডেকে আনেন। তাঁদের দাবি, প্রতিবেশী এবং সিপিএম পঞ্চায়েত সদস্যের উপস্থিতিতে তাকে বলা হয়, মেয়ের নামে আড়াই বিঘা জমি কিনে দেওয়া হলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হবে না। সে রাজি না হলে পঞ্চায়েত সদস্য তাঁদের থানায় যেতে বলেন। সিপিএমের ওই পঞ্চায়েত সদস্য ফ্রান্সিস বরা বলেন, “ছাত্রীর বাবার কাছে ঘটনাটি শুনে ওঁদের থানায় যেতে বলি। পাড়ার লোকজনও একই কথা বলেছিল। কিন্তু ওঁরাই গড়িমসি শুরু করেন।”
এ দিকে গ্রেফতার হওয়ার পরে সন্তোষ দাবি করে, ছাত্রীর ইচ্ছায় তাঁদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক তৈরি হয়। কিন্তু ছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা হয়েছে অন্য কারও সঙ্গে সহবাসের কারণে। জোর করে গর্ভপাত করানোর অভিযোগ অস্বীকার করে সে বলে, “ওর মায়ের চাপে হাসপাতালে গিয়ে গর্ভপাতের ব্যবস্থা করি। তখন সন্তান কার, তা পরীক্ষা করতে বলেছিলাম। ওঁরা রাজি হননি।”