এ ভাবেই হয়েছে চুরি।—নিজস্ব চিত্র।
পুজোর মুখেই একই রাত্রে পরপর ৩টি দোকানে চুরির ঘটনা ঘটল শিলিগুড়িতে। শনিবার রাতে শিলিগুড়ি থানা ও নিউ জলপাইগুড়ি ফাঁড়ি এলাকায় ঘটনাগুলি ঘটেছে। দুটি সোনার দোকান এবং একটি কাপড়ের দোকানে চুরির ঘটনা ঘটেছে। তবে কোনও জায়গাতেই অবশ্য সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল না। ঘটনায় শহরের ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, তিনটি দোকান মিলিয়ে লক্ষাধিক টাকার চুরি হয়েছে।
শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগমোহন বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। পরিস্থিতির জেরে আজ, সোমবার সকালে শিলিগুড়িতে নিরাপত্তা নিয়ে তড়িঘড়ি একটি বৈঠকও ডেকেছেন পুলিশ কমিশনার। তিনি বলেন, “অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। পুজোর শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে। পুজোর সময় যাতে নিরাপত্তার কোনও ত্রুটি না থাকে, তা থানাগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
পুলিশ জানিয়েছে, শহরের হিলকার্ট রোডের একটি সোনার দোকানে ঢুকতে প্রথমে পাশের একটি কাপড়ের দোকানের দেওয়াল ভাঙে দুষ্কৃতীরা। ওই দোকানের কিছু কাপড় এবং ক্যাশ বাক্স থেকে কিছু টাকা লুঠ করে দলটি। এরপরে তারা দোকানের দোতলায় উঠে পড়ে। সেখান থেকে পাশেরই সোনার দোকানের দেওয়াল ভাঙে দুষ্কৃতীরা। সোনার দোকানে ঢুকে লোহার সিন্দুকগুলিকে গ্যাস কাটার দিয়ে কেটে সমস্ত সোনা ও রূপো বাট নিয়ে নিয়ে গিয়েছে বলে দোকান মালিক রতন দত্ত পুলিশে অভিযোগ করেছেন। রতনবাবু বলেন, “আমার দোকানের ভিতরের অংশে কাজ চলছে। তাই শো-কেসে কিছু ছিল না। সবটাই সিন্দুকে ছিল। সিসিটিভি লাগানোরও কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই ঘটনাটি ঘটে গেল।” পাশের কাপড়ের দোকানের মালিক জগদীশ গিধরা বলেন, “সোনার দোকানে চুরি করার জন্যই সম্ভবত দুষ্কৃতীরা ঢুকেছিল। আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি।”
একই রাতেই শিলিগুড়ির শক্তিগড় এলাকার ৫ নম্বর রোড এলাকার আরেকটি সোনার দোকানেও চুরি হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, এক্ষেত্রেও দোকানের পিছনের দিকের একটি জানালার গ্রিল ভেঙে দোকানে ঢুকেছে দুষ্কৃতীরা। যে বাড়িতে দোকানটি ভাড়া রয়েছে, সেই দোকানের মালিক শ্যামল ঘোষ বলেন, “রাতে আমাদের ঘরের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে দিয়ে চুরি করেছে দুষ্কৃতীরা। রাতেই কিছুই বুঝতে পারিনি। আমার সকালে বিষয়টি টের পাই। লোকজনকে ডেকে দরজা থুলতে হয়েছে।” ওই সোনার দোকানের মালিক দীপেন সরকার লক্ষাধিক টাকার সোনার ঘটনা চুরি হয়েছে বলে পুলিশকে জানিয়েছেন।
উত্তরবঙ্গের ব্যবসায়ীদের সংগঠন ফোসিনের সম্পাদক বিশ্বজিত্ দাস শহরের এই পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “পুজোর মুখে এই ধরণের চুরি বাড়তে থাকে। পুলিশকে আরও সতর্ক থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়াতে হবে। ব্যবসায়ীরা আতঙ্কে আছেন।”