মমতার জন্য নীলরঙা তুলির খোঁজ

কোথায় একটা নীল তুলি পাই বলতে পারেন? লালবাগের নতুন আকর্ষণ মোতিঝিলের উদ্বোধন করতে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে ২৮ ফুট উঁচু মিনারের মাথায় চড়ে তাঁর শিল্পী মন যদি চায় ছবি আঁকতে? তখন লাল হ্যান্ডেল-ওয়ালা তুলি বাড়িয়ে দিলে কি আর মাথাটা ঘাড়ে থাকবে?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৫ ০৩:২২
Share:

মুখ্যমন্ত্রী আসবেন। বৈঠকে পুলিশ-প্রশাসন।

কোথায় একটা নীল তুলি পাই বলতে পারেন?

Advertisement

লালবাগের নতুন আকর্ষণ মোতিঝিলের উদ্বোধন করতে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে ২৮ ফুট উঁচু মিনারের মাথায় চড়ে তাঁর শিল্পী মন যদি চায় ছবি আঁকতে? তখন লাল হ্যান্ডেল-ওয়ালা তুলি বাড়িয়ে দিলে কি আর মাথাটা ঘাড়ে থাকবে? তাই নীল তুলির খোঁজে প্রশাসনের কর্তারা বেরিয়ে পড়েছিলেন সোমবার সকাল সকাল।

বহরমপুর শহরের গোরাবাজারে একটি দোকান থেকে প্রশাসনিক কর্তারা কিনেছেন ইজেল, ক্যানভাস, অ্যাক্রেলিক রঙ। কিন্তু তুলি চাইতেই প্রশাসনিক কর্তাদের হাতে ধরিয়ে দোকানদার তুলে দেন লাল তুলি। আঁতকে উঠেছেন কর্তারা। ‘‘এই বয়সে আমাদের চাকরিটা খাবেন?’’ শেষে নীল-সাদা কাচের একটি পাত্র মিলেছে। সেটিকেই তুলি রাখার পাত্র হিসেবে ঘরে মজুত রাখছেন কর্তারা। শেষরক্ষার চেষ্টা আর কী।

Advertisement

কোথায় কী ভাবের উদয় হতে পারে মুখ্যমন্ত্রীর, তার একটা আগাম আঁচ করেছেন কর্তারা। তাই নবাব আলিবর্দির মেয়ে ঘসেটি বেগমের মোতিঝিলের ২৮ ফুট উঁচু মিনারের উপর ৮০০ বর্গ ফুট এলাকা সাজিয়ে তোলা হয়েছে। সেখানে ইজেল রাখার ব্যবস্থা হয়েছে। রয়েছে আঁকার নানা উপকরণ। সেই টঙে রাখা হয়েছে তিনজোড়া সোফা।

তবু সংশয় কাটছে না। আজ মঙ্গলবারের রাত দিদিমনি কোথায় কাটাবেন তা নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে। এক কর্তা জানান, বহরমপুর সার্কিট হাউস ও লালবাগের মোতিঝিল— দু’টিই সাজিয়ে রাখা হচ্ছে। এ দিকে মোতিঝিলে সদ্য-নির্মিত তিনটি কটেজের নামকরণ করা হয়েছে নবাবকুলের তিন চরিত্রের নামে— মুর্শিদকুলি, ঘসেটি ও আলিবর্দি। রাতে মাঝেরটিতে মুখ্যমন্ত্রীর থাকার ব্যবস্থা হয়েছে। কিন্তু সেটির আবার নাম ‘ঘসেটি’। বেগম ঘসেটি তো তাঁর বোনপো সিরাজকে সিংহাসনচ্যুত করার জন্য মিরজাফর ও ইংরেজদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ষড়যন্ত্র করেছিলেন। দেশদ্রোহীই বলা চলে এক হিসেবে। সেই ঘসেটি বেগমের নামাঙ্কিত কটেজে মুখ্যমন্ত্রীর থাকার ব্যবস্থা করলে আবার যদি রেগে যান তিনি? এক প্রশাসনিক কর্তার মগজে সে কথা আসতেই মধ্যের কটেজ থেকে সরে গেল ‘ঘসেটি’ লেখা ফলক। সেখানে ঝোলানো হল ‘মুর্শিদকুলি’।

মুখ্যমন্ত্রী সঙ্গে করে আনছেন মিনি মহাকরণ। সচিব ও কমিশনারদের ডিনারে থাকছে ইলিশ, মটন, চিকেন মিলিয়ে পাক্কা ২৮ রকমের এলাহি পদ। আর মুখ্যমন্ত্রীর জন্য? এক কর্তা বলেন, ‘‘ওটা টপ সিক্রেট। ম্যাডামের খাবারদাবারের জন্য কলকাতা থেকে এসেছে ইভেন্ট ম্যানেজমন্টের একটি দল। তাঁরা মুখে কুলুপ এটেছেন।’’

এ যুগের মুখ্যমন্ত্রীর মান রাখতে পারবে তো সে যুগের বেগমের খাসমহল?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন