দুর্ঘটনাগ্রস্ত ফেরারি গাড়িটা। —নিজস্ব চিত্র।
প্রচণ্ড গতিতে জাতীয় সড়ক দিয়ে ছুটে চলেছিল দামি ফেরারি গাড়িটা। গতি এতটাই বেশি ছিল যে চোখের নিমেষে গাড়িটা বেরিয়ে যাচ্ছিল। কিছু পরেই বিকট শব্দ। স্থানীয়েরা ছুটে এসে দেখেন দুমড়ে-মুচড়ে গিয়েছে গাড়িটা। মৃত্যু হয় চালকের। রবিবার ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার সলপে হাইওয়েতে। চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সজোরে ধাক্কা মারেন সেতুর গার্ডওয়ালে। ওই গাড়িতে আরও এক মহিলা ছিলেন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তিনি এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পুলিশ সূত্রে খবর, ফেরারি গাড়ির চালক শিবাজী রায়ের মৃত্যু হয়েছে। পেশায় ব্যবসায়ী শিবাজীবাবু বালিগঞ্জের বাসিন্দা। প্রতি রবিবারই তিনি ফেরারি গাড়িটা নিয়ে কলকাতা থেকে হুগলি যেতেন। এ দিনও ভোরে রওনা হন। বিদ্যাসাগর সেতু হয়ে কোনা এক্সপ্রেস দিয়ে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক। তারপর দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে ধরে পৌঁছন হুগলির গুড়াপে। সেখানে একটি ধাবায় প্রাতরাশ সেরে এবং সময় কাটিয়ে ফিরে আসেন কলকাতায়। এ দিনও তিনি হুগলি থেকেই ফিরছিলেন। ওই গাড়িতে তাঁর পাশের আসনেই বসে ছিলেন ২০ বছরের এক তরুণী আসনা খুরানা। শিবাজীবাবুর পরিবার সূত্রে খবর, ওই তরুণী তাঁরই এক বন্ধুর মেয়ে। পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন শিবাজীবাবুর অন্যান্য বন্ধুরাও তাঁর সঙ্গে গিয়েছিলেন। তবে তাঁরা আলাদা গাড়িতে ছিলেন। কেউ জাগুয়ার তো কেউ লামবারগিনি গাড়ি নিয়ে গিয়েছিলেন।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, ফেরারি গাড়িটির গতি অনেক বেশি ছিল। ১৬০ কিলোমিটার গতিবেগে ছুটছিল গাড়িটি। আর এই প্রচণ্ড গতিতে ডোমজুড়ের পাকুরিয়া ব্রিজের দিকে আসার সময়ই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন তিনি। সজোরে ধাক্কা মারেন সেতুর গার্ডওয়ালে। গতি খুব বেশি থাকায় কয়েকবার রাস্তার উপরের পাল্টি খায় গাড়িটি। গাড়িটির সামনের অংশ সম্পূর্ণ দুমড়ে-মুচড়ে যায়। ভিতরেই আটকে পড়েন চালক এবং ওই তরুণী।
বিকট শব্দ শুনে স্থানীয়েরা ছুটে এলেও তাঁদের বার করা সম্ভব হয়নি। শেষে দমকল এসে প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় দরজা ভেঙে দু’জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে এসএসকেএমে হাসপাতালে পাঠায়। কিন্তু তত ক্ষণে মারা গিয়েছেন চালকের আসনে থাকা শিবাজীবাবু।
পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত ফেরারি গাড়িটি ক্যালিফোর্নিয়া টি মডেলের। দাম প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা। গাড়িটি অবশ্য শিবাজীবাবুর নামে নেই। কলকাতার একটি সংস্থার নামে গাড়িটির রেজিস্ট্রেশন রয়েছে।