তাণ্ডব: কুশমণ্ডির দেহাবন্ধে গ্রামে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয় শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
এক যুবতীকে নির্যাতনের পরে কেটে গিয়েছে পাঁচ দিন। এর মধ্যেও সব অভিযুক্তকে কেন পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি, সেই ক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠল দক্ষিণ দিনাজপুরের কুশমণ্ডির দেহাবন্ধ এলাকা। শুক্রবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ তির ধনুক নিয়ে ওই গ্রামে চড়াও হন কয়েকশো জন। ওই যুবতীকে নির্যাতনে অভিযুক্ত রামপ্রবেশ শর্মা ও তাঁর আত্মীয়দের বাড়ি ভাঙচুর করে আগুন জ্বালিয়ে দেন তাঁরা। পুলিশের সামনেই তাণ্ডব চলে। টিনের ছাউনি দেওয়া চারটি বাড়ি ও দু’টি কাঠের গুদাম এবং খড়ের ছাদ দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে। পুলিশকে চুপ করে থাকতে দেখে আতঙ্কে গ্রাম ছাড়া অনেকেই।
প্রায় দেড় ঘণ্টা বাদে গঙ্গারামপুর থেকে দমকলের দু’টি ইঞ্জিন গিয়ে পৌঁছয়। তার আগেই ঘরবাড়ি আগুনে পুড়ে যায়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, এসডিপিও-র নেতৃত্বে বিরাট বাহিনী নিয়ে গিয়ে কুশমণ্ডি থেকে দেহাবন্ধ যাওয়ার রাস্তা ব্যারিকেড করে রাখে। ফলে সাংবাদিকরা আটকে পড়েন। তবে জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদী জানান, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছেন।
শনিবার রাতে কুশমণ্ডির ওই যুবতীকে গণধর্ষণ করে তাঁর যৌনাঙ্গে ধাতব কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়। তারপর থেকে প্রায় ২০ ঘণ্টা ধরে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় নির্যাতিতা সেতুর নীচে পড়ে ছিলেন। রবিবার বিকেলে তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়। গ্রেফতার করা হয় রামপ্রবেশ ও আন্ধারু বর্মনকে। তবে সব অভিযুক্ত এখনও ধরা পড়েনি বলে দাবি।
এ দিন আদিবাসী সংগঠন মাঝিপরগনা গাঁওতার সম্পাদক বাবুলাল মার্ডি অভিযোগ করেন, ‘‘এর আগেও মালদহ এবং উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে মহিলাদের উপরে অত্যাচার হয়েছে। পুলিশ দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় না।’’ তাঁর দাবি, মুখ্যমন্ত্রী জেলায় এসে পুলিশকে ভর্ৎসনা করে কুশমণ্ডির ঘটনায় দোষীদের সকলকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়ে গেলেও এখনও কেবল দু’জন ধরা হয়েছে। তাই তাঁরা বিক্ষোভ দেখান বলে দাবি করেছেন বাবুলাল।