ঝুঁকি: বিপদ জেনেও বাসের ছাদে চেপেই পরীক্ষা দিতে চললেন পরীক্ষার্থীরা। ছবি: নিজস্ব চিত্র
রাজ্য সরকারের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী পদে নিয়োগের পরীক্ষা সফল করতে প্রস্তুতি চূড়ান্ত, আগেই জানিয়েছিল জেলা প্রশাসন। সেটা যে নিছক কথার কথা নয় প্রমাণ মিলল শনিবারেই। পাশ করল প্রশাসন।
পর্যাপ্ত পরিবহণ ব্যবস্থা, পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছানোর দিক নির্দেশ করার জন্য সহায়তা কেন্দ্র। প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রে স্বাস্থ্য কর্মী ও পার্যাপ্ত পুলিশের উপস্থিতিতে জেলার ২৮৭টি পরীক্ষাকেন্দ্রে নির্বিঘ্নেই পরীক্ষা দিলেন কমবেশি ১ লক্ষ পরীক্ষার্থী।
তবে নানুরের নিমড়া থেকে বাইকে ইলামবাজারের ঘুড়িষা যাওয়ার পথে দুই পরীক্ষার্থী পথ দুর্ঘটনার জখম হন। এবং আধার-সহ উপযুক্ত পরিচয় পত্র সঙ্গে না আনায় কয়েকজন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় বসতে পারেননি।
প্রশাসন সূত্রে খবর, দুপুর আড়াইটে থেকে পৌনে চারটে পর্যন্ত পরীক্ষার সময় নির্দিষ্ট ছিল সেটাই অনেক সুবিধা করে দিয়েছে। নিজের নিজের পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছানোর জন্য পরীক্ষার্থীরা হাতে পর্যাপ্ত সময় পেয়েছেন।
তাই মাধ্যমিকের প্রায় তিনগুন পরীক্ষার্থী একদিনে পরীক্ষায় বসলেও রাস্তায় যানজট দেখা যায়নি। জেলাসদর সিউড়িতে বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছানোর জন্য সকাল থেকেই পরীক্ষার্থীরা পৌঁছাতে শুরু করেন ট্রেনে ও বাস। অনেকে বাইক বা প্রাইভেট গাড়ি নিয়েও পরীক্ষাকেন্দ্রে আসেন। গোটা শহর জুড়ে পুলিশের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো।
স্টেশন বাসস্ট্যাণ্ড, মসজিদ মোড় সহ শহরের বিভিন্ন ব্যস্ত মোড় গুলিতে পরীক্ষার্থীদের রাস্তা দেখাতে ছিল পুলিশি সহয়াতা কেন্দ্র। দুবরাজপুর খায়রাশোল রাজনগরের প্রত্যন্ত এলাকার স্কুলগুলিতে পৌঁছানোর জন্য তৎপর ছিল প্রশাসন ও পুলিশ। রামপুরহাট থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরের নলহাটি থানার টিঠিগ্রাম থেকে বেশ কয়েকজন পরীক্ষার্থীরা জানান, তারা সকাল ৯ টার সময় বাড়ি থেকে বেড়িয়ে মুর্শিদাবাদ জেলার পাঁচগ্রাম থেকে বাস ধরে দুপুর বারোটার আগে পরীক্ষাকেন্দ্রের সামানে জড়ো হয়েছেন।
জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী জানিয়েছেন, ‘‘পরিবহণ, বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য এবং পুলিশ নিয়ে বৈঠকে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া নিশ্চিত হয়েছিল। সবই পরিকল্পনা মাফিক হয়েছে।’’ তবে শুধু প্রশাসন নয়, এই গরমে পরীক্ষার্থীদের জন্য পানীয়জলের ব্যবস্থা করতে জলসত্র খুলে ও পরীক্ষাকেন্দ্রে যাওয়ার নির্দেশ দিতে সহযোগিতায় হাত বাড়ালেন শাসকদলের কর্মীরাও। বোলপুর-সহ জেলার বিভিন্ন প্রান্তে এমন ছবি নজরে এসেছে।
এ দিন রামপুরহাট মহকুমায় মোট পরীক্ষার্থী ছিল ৩২, ৩৯৬ জন। রামপুরহাট এবং পুরশহর নলহাটি ছাড়াও মুরারই, মল্লারপুর, কোটাসুর, ময়ূরেশ্বরের মতো গ্রামাঞ্চলের স্কুল গুলিতেও পরীক্ষার্থীদের হাজিরা ছিল ৯০ শতাংশ বলে জানিয়েছেন মহকুমাশাসক সুপ্রিয় দাস।
পুলিশি সহয়াতা কেন্দ্র করা হয়েছিল রামপুরহাটের বিভিন্ন জায়গায়। একই ছবি বোলপুরেরও। অন্যান্য দিনের মতো যাতে যানজট না হয়ে সেটা এড়াতে তৎপরতা ছিল পুলিশের। বোলপুরের নীচুপট্টি, বোলপুর হাইস্কুল ও বিবেকানন্দ স্কুলে প্রচুর পুলিশ কর্মী মোতায়েন ছিল।
বাড়ি থেকে পরীক্ষাকেন্দ্রে আসাতে তেমন কোনও অসুবিধা হয়নি জানাচ্ছেন মল্লারপুর থেকে দুবরাজপুরের একটি স্কুলে পরীক্ষা দিতে আসা মৌসুমী মণ্ডল।
এবং সাঁইথিয়ার মাঠপলসা থেকে আসা চাঁদ বাউড়িরা। ফেরা নিয়ে অবশ্য চিন্তিত ছিলেন দুই পরীক্ষার্থীই। তৃণমূল প্রভাবিত জোলা বাসমালিক সমিতির-সহ সম্পাদক তন্ময় পৈতণ্ডী বলছেন, ‘‘কোনও পরীক্ষার্থীর বাড়ি ফিরতে অসবিধা হয়েছে খবর নেই।’’