health

কোভিডের বাড়তি ভাতা বকেয়া, ক্ষোভ

বেতন বৃদ্ধি, পেনশন-সহ একাধিক দাবিদাওয়া নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরে মঙ্গলবার স্মারকলিপি দিলেন পশ্চিমবঙ্গ আশাকর্মী ইউনিয়নের দুই জেলা শাখার সদস্যেরা।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৫:৫৫
Share:

পুরুলিয়া শহরে। নিজস্ব চিত্র

কোভিড-পরিস্থিতিতে কাজের জন্য অতিরিক্ত এক হাজার টাকা ভাতা দিচ্ছে রাজ্য সরকার। কিন্তু তা-ও জুলাই মাস থেকে বকেয়া রয়েছে আশাকর্মীদের। সেই টাকা অবিলম্বে দেওয়ার দাবি তুললেন পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ার আশাকর্মীরা। সুরক্ষা সরঞ্জামও পাওয়া যাচ্ছে না বলে তাঁদের অভিযোগ। এ ছাড়া, বেতন বৃদ্ধি, পেনশন-সহ একাধিক দাবিদাওয়া নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরে মঙ্গলবার স্মারকলিপি দিলেন পশ্চিমবঙ্গ আশাকর্মী ইউনিয়নের দুই জেলা শাখার সদস্যেরা।
সংগঠনের রাজ্য কমিটির সদস্য অর্চনা খাঁয়ের দাবি, ‘‘গ্রামে-গ্রামে ঘুরে কেউ জ্বরে আক্রান্ত কি না, কেউ কোয়রান্টিন মানছেন কি না, কেই বাইরে থেকে এসেছেন কি না, তা আমাদের মার্চ মাস থেকে খোঁজ নিতে হচ্ছে। প্রতিদিন গ্রামে গ্রামে ঘুরে উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের এএনএম-দের কাছে গিয়ে রিপোর্ট করতে হচ্ছে। সে জন্য অতিরিক্ত মাত্র এক হাজার টাকা ভাতা দেওয়া হচ্ছে। তা-ও গত দু’মাসের টাকা বাকি রয়েছে। সংক্রমণ ক্রমশ বাড়ায় কোভিড আক্রান্তদের বাড়িতেও যেতে হচ্ছে। কিন্তু সুরক্ষা সরঞ্জাম আমাদের দেওয়া হয়নি। আমাদের কথা কেউই ভাবছেন না।’’ তাঁরা স্মারকলিপি দেন পুরুলিয়ার উপমুখ্য স্বাস্থ্যকারিক (৩) পৃথ্বীশ আকুলির হাতে। তিনি বলেন, ‘‘ওঁদের ভাতার জন্য টাকা চাওয়া হয়েছে। তা এলেই আশাকর্মীরা পেয়ে যাবেন। সুরক্ষা সরঞ্জাম অনেকের কাছেই পৌঁছছে, কেউ না পেলে সে ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’
বিষ্ণুপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের লায়েকবাঁধের আশাকর্মী সোমা মুখোপাধ্যায়ের দাবি, “আমরা প্রতি মাসে মাত্র সাড়ে তিন হাজার টাকা বেতন পাই। বাড়ি বাড়ি ঘুরে গর্ভবতী, প্রসূতি ও শিশুদের খোঁজখবর নেওয়া ছাড়াও কিডনি, সুগার, প্রেসার, হার্টের সমস্যা থাকা রোগীর তথ্যও সংগ্রহ করি। কাজের চাপ দিন দিন বাড়ছে।’’ বাঁকুড়ার জয়পুরের এক আশাকর্মী অপর্ণা রায়ের দাবি, “করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার প্রতি মাসে এক হাজার টাকা অতিরিক্ত ঘোষণা করেছিল। তিন মাস দেওয়ার পরে তা আর দেওয়া হয়নি।’’ তাঁদের দাবি, মাসে অন্তত ১৫ হাজার টাকা বেতন, স্থায়ীকরণ, বোনাস, পিএফ, পেনশন ছাড়াও অবসরের সময়ে এক কালীন ১০ লক্ষ টাকা দিতে হবে।
বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জগন্নাথ সরকার বলেন, “করোনা পরিস্থিতিতে বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য-জেলায় মোট ৮৫৬ জন আশাকর্মী কাজ করছেন। তাঁদের কাজ প্রশংসনীয়। তাঁদের স্থানীয় দাবি আমরা মিটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছি। তবে বেতন বৃদ্ধি, পেনশন ইত্যাদি আর্থিক দাবিদাওয়া ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।’’
মাসিক ২১ হাজার টাকা বেতন-সহ নানা দাবিতে বাঁকুড়া স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতরে স্মারকলিপি দেয় পশ্চিমবঙ্গ আশা কর্মী ইউনিয়নের কর্মীরা। ওই সংগঠনের তরফে মিত্রা ভট্টাচার্য, মিতালি পালেরা বলেন, “করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশে গ্রামে গঞ্জে গিয়ে মানুষকে আমরা পরিষেবা দিচ্ছি। কিন্তু আমাদেরই নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে না। অবিলম্বে আমাদের দাবিগুলি স্বাস্থ্য দফতর মান্যতা দিক।” বাঁকুড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফে আশা কর্মীদের দাবিগুলি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন