Coronavirus

করোনা-রোগী সত্য গোপন করেছেন, দাবি

পুলিশের দাবি, করোনা-আক্রান্ত ২৪ বছরের ওই যুবক প্রথম থেকে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরকে ভুল তথ্য দিয়েছেন।

Advertisement

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০২০ ০১:৫৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

জেলায় শেষ যে করোনা আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মিলেছে, নলহাটির সেই পরিযায়ী শ্রমিকের পুলিশ-প্রশাসনের অগোচরে বাড়ি ফেরার ঘটনা চিন্তায় ফেলেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতরকে। পরিস্থিত এমন যে, এই এক জন রোগীর জন্য একশোরও বেশি জনের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে করোনা-পরীক্ষায় পাঠাতে হবে স্বাস্থ্য দফতরকে। পুলিশের দাবি, করোনা-আক্রান্ত ২৪ বছরের ওই যুবক প্রথম থেকে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরকে ভুল তথ্য দিয়েছেন। যা তাঁদের কাজ আরও জটিল করেছে।

Advertisement

নলহাটি ১ ব্লকের কলিঠা পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা, ওই যুবক রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন পশ্চিম মেদিনীপুরের নাড়াজোল বাজারে। যে হেডমিস্ত্রির অধীনে তিনি কাজ করেন, তাঁর বাড়ি ময়ূরেশ্বর থানা এলাকায়। যুবকের দাবি ছিল, গত ৫ মে সাইকেলে ওই যুবক এবং হেডমিস্ত্রি-সহ ছ’জন বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন। ৭ মে সন্ধ্যায় হেডমিস্ত্রির বাড়িতে সকলে পৌঁছন। ৮ মে সকালে বাড়ি পৌঁছনোর পরে তিনি নিজেই নলহাটি ১ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য যান। পরীক্ষা করার পরে তাঁকে সরকারি নিভৃতবাসে রেখে দেওয়া হয়।

জেলা পুলিশের এক আধিকারিকের যদিও দাবি, ওই যুবক নাড়াজোল থেকে ২৬ এপ্রিল ময়ূরেশ্বরে, হেডমিস্ত্রির গ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন। এবং ৮ মে নয়, বরং ২৭ এপ্রিল নলহাটির গ্রামের বাড়িতে পৌঁছন ওই যুবক। প্রতিবেশীদেরও দাবি, ওই যুবক পুলিশ-প্রশাসনের নজর এড়িয়ে গ্রামে ঢুকেছিলেন। গ্রামে এসে বিভিন্ন লোকের সঙ্গে মিশেছেনও। নলহাটি ১ ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্র সূত্রেও জানা যায়, ওই যুবক ২ মে প্রথমে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এসে জানান, তিনি ঝাড়খণ্ডে শ্রমিকের কাজ করেন। স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে তাঁকে বাড়িতে নিভৃতবাসে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়। ওই যুবকের গ্রামেরই দু’জনের লালারস সংগ্রহ করা হয়েছিল। তাঁদের রিপোর্ট করোনা-নেগেটিভ এসেছিল।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, পরবর্তীতে ওই দু’জন গ্রামে ফিরে বাকিদের জানান, যুবকটি স্বাস্থ্য আধিকারিকদের মিথ্যা বলেছেন। তখন প্রতিবেশীরাই তাঁকে ফের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য চাপ দিতে থাকেন। এই নিয়ে যুবকটির পরিবারের সঙ্গে তাঁদের ঝগড়াও হয়। ৮ মে সকালে যুবকটি দ্বিতীয়বার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এলে ওই যুবকরে লালারস সংগ্রহ করা হয়। তখনও তাঁর শরীরে করোনার কোনও উপসর্গ ছিল না বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর। রবিবার রাতে তাঁর করোনা-পজ়িটিভ রিপোর্ট এসে পৌঁছয় রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলায়।

রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘যুবকটির মিথ্যা বলা পরিস্থিতি আরও জটিল করেছে।’’ তিনি জানান, ওই রোগীর সংস্পর্শে আসা চিকিৎসক থেকে স্বাস্থ্যকর্মী, নার্সিং স্টাফ, ল্যাব টেকনিশিয়ান সব মিলিয়ে মোট ১২ জনের লালারসের নমুনা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও যুবকের স্ত্রী, তিন বছরের মেয়ে, বাবা, মা-সহ ১২ জনের লালারস সংগ্রহ করা হয়েছে। নলহাটি ১ ব্লক সংলগ্ন যে সরকারি নিভৃতবাসে ওই যুবূক ছিলেন, সেখানকার ৮৮ জনেরও লালারস সংগ্রহ করা হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement