জনরোষ: পাইকরে রাস্তা অবরোধ। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
ফের আট বাসিন্দা ডায়রিয়ায় উপসর্গ নিয়ে পাইকর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি হলেন। এই নিয়ে মঙ্গলবার পর্যন্ত পাইকর পশ্চিমপাড়াতেই ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১০১। এর মধ্যে রামপুরহাট সুপার স্পেশ্যালিটি এবং পাইকর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ২৮ জন। বাকিদের চিকিৎসা চলছে বাড়িতেই।
এ দিকে ছাত্রী মৃত্যুর পরে পাঁচ দিন কেটে গেলেও এখনও উত্তেজনা রয়েছে পাইকরে। মঙ্গলবার সকাল আটটা থেকে উত্তেজিত জনতা মুরারই, রঘুনাথগঞ্জ রাস্তা অবরোধ করে। পাইকর রক্ষাকালী তলায় রাস্তার উপরে গ্রামের মহিলা ও পুরুষ একজোট হয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। অবরোধের ফলে রাস্তার দুই পাশে সমস্ত গাড়ি আটকে যায়। গ্রামবাসীর দাবী, অবিলম্বে জল প্রকল্পের ঠিকাদারকে অপসারণ, গ্রামে মেডিক্যাল দল রেখে স্থায়ী চিকিৎসা ব্যবস্থা করতে হবে। যে কোনও বিশৃঙ্খলা রুখতে উপস্থিত ছিল বিশাল পুলিশ বাহিনী।
মৃতার দিদি বর্ষা ভাস্কর বলেন, ‘‘আমার বোন বিনা চিকিৎসায় মারা গিয়েছে। ওর মৃত্যুর তদন্ত করতে হবে। তা ছাড়া পরিশ্রুত জল নিয়ে অভিযোগ থাকা সত্বেও কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। প্রশাসন যতক্ষণ আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত অবরোধ চলবে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, ওই ঘটনায় মৃতার পরিবারের পক্ষ থেকে কোনও লিখিত অভিযোগই করা হয়নি। হয়নি ময়না-তদন্তও। এ দিন উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করতে এলাকায় গিয়ে বিক্ষোভে থাকা লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন বিডিও (মুরারই ২) অমিতাভ বিশ্বাস। হাতের কাছে পেয়ে তাঁকেই নানা বিষয়ে নালিশ জানান বিক্ষোভকারীরা। তাঁদের অভিযোগ, পরিশ্রুত পানীয় জল নিয়ে প্রহসন চলছে। ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ঠিক মতো পরিষেবা মিলছে না। অমিতাভবাবু সব কিছু খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিলে প্রায় এগারোটা নাগাদ অবরোধ ওঠে।
এ দিকে, এ দিন নতুন করে হালদারপাড়ার আট জন ডায়রিয়া নিয়ে ভর্তি হন পাইকর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। মুরারই ২ নম্বর ব্লকের উদ্যোগে হালদার পাড়ায় ভ্রাম্যমাণ জলের গাড়ি পাঠানো হয়। সেই গাড়ি থেকে নেওয়া জলে আবার মরা টিকটিকি মিলেছে বলে দাবি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দা রেবতী হালদার। এই নিয়েও গ্রামে একপ্রস্ত উত্তেজনা ছড়ায়। পাইকর ১ পঞ্চায়েতের প্রধান আব্দুল গণির অবশ্য দাবি, ‘‘ঘটনাটি সম্পূর্ণ মিথ্যে। গ্রামবাসীকে উত্তেজিত করতেই এই সব সাজানো হচ্ছে। জলাধারের কলের মুখ দিয়ে টিকটিকি বেরোতেই পারে না।’’
স্থানীয় সূত্রের খবর, দুপুর তিনটে নাগাদ চিকিৎসক নিয়ে মেডিক্যাল টিম গ্রামে আসে। মুরারই ১ ব্লক থেকে আরও দুটি ভ্রাম্যমান জলাধার নিয়ে আসা হয়।