Durga Puja

দুর্গাপুজো পজ়িটিভ, করোনা নেগেটিভ’ বার্তায় শুরু প্রস্তুতি 

হাটতলা সার্বজনীন দুর্গাপুজো প্রতিবারই মাটির সাজের প্রতিমার কারুকার্য এবং বিসর্জন দর্শনার্থীদের কাছে আকর্ষণ করে থাকে।

Advertisement

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় 

রামপুরহাট শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০২০ ০২:৩৮
Share:

তোড়জোড়: রামপুরহাট হাটতলায় প্রতিমা তৈরি। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম

করোনা উদ্বেগ কাটেনি। তবে তার মধ্যেই শুরু হচ্ছে দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি। পাড়াতে একের পর এক গলি থেকে কন্টেনমেন্ট জোনের বাঁশ খুলে নিতেই পাড়ার দুর্গামণ্ডপের বাঁশ বাধা শুরু করছেন রামপুরহাটের পুজো উদ্যোক্তারা। পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া, পাটুলি-সহ মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুর থেকে প্রতিমা তৈরীর শিল্পীদেরও নিয়ে এসেছেন উদ্যোক্তারা। চলছে প্রতিমা তৈরী। বৃষ্টির হাত থেকে প্রতিমা বাঁচাতে মাথার উপর ত্রিপলের ছাউনি তৈরি করা হয়েছে।

Advertisement

দৃশ্যটা রামপুরহাট শহরের হাটতলা এলাকার। হাটতলা সার্বজনীন দুর্গাপুজো প্রতিবারই মাটির সাজের প্রতিমার কারুকার্য এবং বিসর্জন দর্শনার্থীদের কাছে আকর্ষণ করে থাকে। শহরের কেন্দ্র বিন্দুতে হওয়ার জন্য হাটতলা পাড়ার প্রতিমা দর্শনও দর্শনার্থীদের ভিড়ও হয়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে এ বার পুজোর ভাবনা চিন্তাতেও অনেক পরিবর্তন আনতে হয়েছে। এলাকায় ইতিমধ্যে ২১ জন করোনা আক্রান্ত। তবে অধিকাংশই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। তবুও দুর্গাপুজোর আনন্দ থেকে পাড়া প্রতিবেশীরা বঞ্চিত হতে চাননা। তাঁরা বলছেন, ‘‘আমাদের কাছে পুজো পজ়িটিভ, আর করোনা নেগেটিভ। এই ভাবনা থেকেই পুজোর প্রায় আড়াই মাস আগে থেকে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।’’

হাটতলা সার্বজনীন দুর্গাপুজোর মতো শহরে নজর কাড়া দুর্গোৎসব হয় রামপুরহাট ১১ নম্বর ওয়ার্ডে। সেখানে নবীন ক্লাব প্রতি বছরই দর্শনার্থীদের কাছে মণ্ডপ সজ্জা থেকে প্রতিমা নির্মাণে অভিনবত্ব নিয়ে আসার চেষ্টা করে। ১১ নম্বর ওয়ার্ডেও করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। নবীন ক্লাবের দুর্গাপুজোর প্রধান উদ্যোক্তা, ক্লাব সম্পাদক উজ্জ্বল ধীবর করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। তবে তিনি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। করোনা পরিস্থিতিতে পুজোর বাজেটে অনেক কাঁটছাঁট করা হলেও নবীন ক্লাব এ বার তাঁদের পাকা দালানের মণ্ডপে দুর্গাপূজোর প্রস্তুতি শুরু করেছে। নবীন ক্লাব, হাটতলা সার্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটি ইতিমধ্যেই সমাজমাধ্যমে জানিয়েছেন করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও পুজোর প্রস্তুতির কথা।

Advertisement

হাটতলা সার্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটির পক্ষে অমিত মেহেরা, বিকাশ আগরওয়াল, অক্ষয় রায়রা বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতে এ বার বাজেটে অনেক কাঁটছাঁট করতে হয়েছে। প্যাণ্ডেল, আলোকসজ্জা, মণ্ডপসজ্জা, ভোগ খাওয়ানো থেকে বিসর্জন সমস্ত কিছু থেকেই বড় মাপের খরচ বাদ দিতে হয়েছে। কেবলমাত্র প্রতিমার উপর আমাদের প্রতিবারের মতো এ বারও নজর দিতে হয়েছে।’’

উদ্যোক্তারা জানান, এ বারে পূর্ব বর্ধমানের পাটুলি থেকে আসা প্রতিমা শিল্পীরা তাঁদের প্রতিমা তৈরি করবেন। মণ্ডপে স্যানিটাইজ়ার টানেল বসানো থেকে থার্মাল গান ব্যবহার— সবই থাকছে। স্যানিটাইজ়ার দিয়ে হাত ধুয়ে মণ্ডপে সীমিত সংখ্যক দর্শনার্থীদের প্রবেশ করিয়ে দূরত্ব বিধি মেনে চলার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মাস্ক ছাড়া দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। পুজো কমিটির সদস্যরা পুজো উদ্যোক্তাদের নাম দেওয়া মাস্ক ব্যবহার করবে। পুজোর ডালিতে গোটা ফল দিয়ে প্রসাদ নিবেদনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

নবীন ক্লাব দুর্গোৎসব কমিটির অন্যতম উদ্যোক্তা উজ্জ্বল ধীবর বলেন, ‘‘নবীন ক্লাবের পুজো দেখতে রামপুরহাট তথা সারা বীরভূম জেলার মানুষ পুজো মণ্ডপে ভিড় করেন। কিন্তু এ বারে কোভিড পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে পুজোর আয়োজন করতে হয়েছে। তবুও করোনাকে জয় করে সকল দ্বিধাদ্বন্দ্ব ভুলে পুজো হবেই। প্রতিবারের মতো এ বছরও নবীন ক্লাবে অভিনবত্বর ছোঁয়া থাকবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন