সংবর্ধনা ঘিরে দলেই বিতর্ক

সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তুষার ভট্টাচার্য এ দিন বিষ্ণুপুরে সংবর্ধনা দেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে। রবিবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ দুর্গাপুর যাচ্ছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৯ ০২:০৮
Share:

দিলীপ ঘোষের সঙ্গে বিষ্ণুপুরের বিধায়ক। নিজস্ব চিত্র

সাফল্যের পর এবার বাঁকুড়ায় গেরুয়া শিবিরে সমাসন্ন অস্বস্তি! রবিবেলার ঘটনাক্রম সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে বলে মনে করছেন বিজেপি নেতা-কর্মীদের একাংশ।

Advertisement

সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তুষার ভট্টাচার্য এ দিন বিষ্ণুপুরে সংবর্ধনা দেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে। রবিবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ দুর্গাপুর যাচ্ছিলেন। তাঁর গাড়ি বিষ্ণুপুর ঢোকার পরে পথেই তাঁকে সম্মর্ধনা জানান তুষারবাবু। যা শুনে বেজায় চটেছেন বিজেপির বিষ্ণুপুর জেলা সভাপতি স্বপন ঘোষ।

তুষারবাবুর উদ্দেশে স্বপনবাবুর সাফ কথা, ‘‘পুলিশ সূত্রে জানতে পারি দিলীপবাবুকে বিষ্ণুপুর শহরে এনে সম্মর্ধনা দেবেন তুষারবাবু। রাস্তায় যা ইচ্ছা করুন। বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলাস্তরে আমাকে না জানিয়ে কিছু করা যাবে না।’’ সঙ্গে সংযোজন, ‘‘সংগঠনের সঙ্গে অলোচনা হয়েছে। তাঁরা বলেছেন, তিনি (তুষারবাবু) যেখানে যোগ দিয়েছেন সেখানেই কাজ করুন। বিষ্ণুপুরে বিজেপির দলীয় কার্যালয়ে ঢোকার চেষ্টা করলে মেনে নেবে না বিজেপি কর্মীরা।’’

Advertisement

তুষারবাবু অবশ্য স্বপনবাবুর মন্তব্যের পাল্টা কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। শুধু বলেছেন, ‘‘দিলীপবাবুর সঙ্গে আমার কথা হয়। বিষ্ণুপুরের তরফে তাঁকে সংবর্ধনা দিতে চেয়েছিলাম। তিনি দুর্গাপুর যাওয়ার পথে বিষ্ণুপুরে তাঁকে সংবর্ধনা দিয়েছি। কয়েকজন তৃণমূল কর্মীও আজ বিজেপিতে যোগ দিলেন ।”

স্বপনবাবুকে না জানিয়ে দলের রাজ্য সভাপতিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়েছে জেলা বিজেপি। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের টিকিটে জিতে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন তুষারবাবু। পরে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। লোকসভা ভোটের পর দিল্লিতে গিয়ে তুষারবাবু বিজেপিতে যোগ দেন। বিজেপি সূত্রের খবর, তুষারবাবুর বিজেপিতে যোগদান মেনে নিতে পারেননি দলের বিষ্ণুপুরের নেতাকর্মীদের বড় অংশ। এ প্রসঙ্গে স্বপনবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘তুষারবাবু বিজেপিতে যোগ দেওয়ার বিষয়েও আমি কিছুই জানতাম না। তাঁকে কে অনুমতি দিয়েছে, তা-ও জানি না।’’ অতঃপর বিষ্ণুপুরের বিধায়কের উদ্দেশে তাঁর তীর্যক মন্তব্য, ‘‘তুষারবাবুর দশা লক্ষ্মণ শেঠের মত হবে।” প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ লক্ষ্মণবাবু দল থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পর নিজের দল গঠন করেছিলেন। পরে তিনি যোগ দেন বিজেপিতে। তার পর বিজেপিও ত্যাগ করেন লক্ষ্মণবাবু। লোকসভা ভোটের আগে তিনি যোগ দেন কংগ্রেসে।

এ দিনের ঘটনা কি বিষ্ণুপুরে বিজেপি সংগঠনের কাছে অস্বস্তিদায়ক নয়?

স্বপন ঘোষের উত্তর, “আগামী ৪ জুন রাজ্য বিজেপির বৈঠক হওয়ার কথা। বৈঠকেই সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে।”

তুষারবাবুর পথ ধরে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন বীরভূমের লাভপুরের তৃণমূল বিধায়ক মণিরুল শেখ। তাঁকে দলে নেওয়ায় ক্ষুব্ধ বীরভূম জেলা বিজেপির একাংশ। প্রকাশ্যেই তাঁরা ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন।

এবার কি অসন্তোষ ছড়াল বাঁকুড়াতেও। ‘‘ভবিষ্যৎই বলবে,’’ উত্তর এক বিজেপি নেতার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন