বরাবাজার পঞ্চায়েত সমিতি
BJP

বিজেপির পাঁচ সদস্য তৃণমূলে 

তৃণমূলের জেলা সভাপতি গুরুপদ টুডু জানান, এ দিন সমিতির বিজেপি সদস্য মৌমিতা সিংহদেব, নিবারণ মাহাতো, বিশাখা বাউড়ি, সুমিত্রা মাহাতো ও সুমতি মাহাতো তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বরাবাজার  ও পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২০ ০৮:৩২
Share:

দলবদল: পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল কার্যালয়ে শনিবার। নিজস্ব চিত্র।

বরাবাজার পঞ্চায়েত সমিতির পাঁচ বিজেপি সদস্য তৃণমূলে যোগ দিলেন। তাঁদের মধ্যে তিন জন সমিতির কর্মাধ্যক্ষ। তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বিজেপির বরাবাজার ২ মণ্ডলের সহ সভাপতিও। শনিবার পুরুলিয়ায় তৃণমূলের জেলা কার্যালয়ে দলবদলের অনুষ্ঠানটি হয়েছে।

Advertisement

এই ঘটনায় বরাবাজার পঞ্চায়েত সমিতিতে তৃণমূল ও বিজেপির আসন সংখ্যার পুনর্বিন্যাস হয়েছে। বরাবাজার পঞ্চায়েত সমিতির আসন সংখ্যা ২৮। পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল ১৪টিতে জয়ী হয়। বিজেপি ১৩টি ও কংগ্রেস ১টি আসন পেয়েছিল। কংগ্রেসের রামজীবন মাহাতোকে সভাপতি করে বিজেপি সমিতির দখল নেয়।

তৃণমূলের জেলা কো-অর্ডিনেটর তথা জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বরাবাজার পঞ্চায়েত সমিতিতে বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাল। কিছু দিন পরে ওই সমিতি আনুষ্ঠানিক ভাবে আমাদের দলের হয়ে যাবে।’’

Advertisement

তৃণমূলের জেলা সভাপতি গুরুপদ টুডু জানান, এ দিন সমিতির বিজেপি সদস্য মৌমিতা সিংহদেব, নিবারণ মাহাতো, বিশাখা বাউড়ি, সুমিত্রা মাহাতো ও সুমতি মাহাতো তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তবে কয়েক মাস আগে মানবাজারে একটি অনুষ্ঠানে সুমতিদেবীকে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিতে দেখা গিয়েছিল।

তুমড়াশোল পঞ্চায়েত এলাকার লক্ষ্মণপুর গ্রামের বাসিন্দা, ওই পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য মৌমিতা সিংহদেব বলেন, ‘‘এলাকার উন্নয়ন করব বলে মানুষ আমাদের জিতিয়েছেন। কিন্তু সমিতি গঠন হওয়ার পরে উন্নয়ন না হওয়ায় মানুষের প্রশ্নের জবাব দিতে পারছি না। তাই তৃণমূলে এসেছি।’’

তৃণমূলের মুখপাত্র নবেন্দু মাহালি জানান, এ দিন বিজেপির বরাবাজার ২ মণ্ডলের সহ সভাপতি জয়দেব গোস্বামীও তাঁদের দলে যোগ দিয়েছেন। বরাবাজারের তুমড়াশোল গ্রামের বাসিন্দা জয়দেববাবু বলেন, ‘‘বিজেপির রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি ঢুকে গিয়েছে। প্রতিবাদ করলে তৃণমূল বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। দলে গণতন্ত্রের দাবি জানাতে গিয়ে সম্প্রতি সদস্যদের একাংশের হেনস্থার শিকার হয়েছি। সব ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নিলাম।’’

বিজেপির বরাবাজার ব্লক সভাপতি লবসেন বাস্কে অবশ্য জয়দেববাবুর অভিযোগ উড়িয়ে পাল্টা বলেন, ‘‘আমাদের দলে দুর্নীতিগ্রস্তদের ঠাঁই নেই। জেতার পর থেকে তাঁরা তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছিলেন। দল বিরোধী কার্যকলাপ ও শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে আগেও ওই কর্মকর্তা ও সদস্যদের শো-কজ় করা হয়েছে। তার জবাব পাইনি।’’

জেলা বিজেপির সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মানুষ তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছিলেন। পঞ্চায়েত সমিতির ওই সদস্যেরা তো উপলক্ষ মাত্র। তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতি দখলের স্বপ্ন দেখছে। আর একুশের নির্বাচনে আমরা সরকারে আসছি।’’

দু’পক্ষের সদস্য সমান থাকায় বরাবাজার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নির্বাচনের সভায় লটারি করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তাতে কংগ্রেসের রামজীবনবাবুর নাম ওঠে। কিন্তু শংসাপত্র দেওয়া নিয়ে জটিলতায় প্রায় ১০ মাস থমকে ছিল বোর্ড গঠন। শেষ পর্যন্ত হাইকোর্ট নির্দেশে ২০১৯ সালের জুলাইয়ে তিনি দায়িত্ব পান। এ দিন রামজীবনবাবু বলেন, ‘‘আমার কিছু জানা নেই। আদালতে গিয়ে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিলাম। এ বার কী হয়, দেখা যাক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন