জেলার নানা প্রান্তের দৈনিক মাছ বাজারে অন্ধ্রের মাছের চাহিদা বেশ ভাল। ক্রেতারা জানাচ্ছেন, ‘‘এর কারণ মাপ। দাম যতই হোক না কেন, মাপ একটা বড় ব্যাপার।’’ এতে কম ওজনের বা ছোট সাইজের দেশি রুই–কাতলার কদর তেমন নেই। ছোট–মাঝারি মাছ চাষিরাও হতাশ। এ সব ভেবেই উন্নত মাছ চাষের পরিকল্পনা নিতে চলেছে জেলা মৎস্য দফতর। জেলার সব পুকুরে সমবায় প্রথায় মাছ চাষ করার কথা ভাবছে তারা।
বাম জমানা থেকেই মাছ চাষের উদ্যোগ নেওয়ার কথা প্রচার হয়ে আসছে। প্রতি বছরই মীন উৎসব হয় জেলায় জেলায়। অভিযোগ, যে পরিমাণ মাছের চারা ছাড়া হয় তার বহু গুণ প্রচার করা হয়। সেই প্রচার বাম আমলেও ছিল এখনও রয়েছে। এমন পরিস্থিতি হওয়ায় জেলায় উন্নত মাছ চাষেও ঘাটতি রয়েছে।
নতুন এই উদ্যোগ পর্বে ঠিক হয়েছে, বাইরের রাজ্য থেকে উন্নত মানের চারা পোনা এনে চাষিদের দেওয়া হবে। মাছ চাষের জন্য আদিবাসীদের মধ্যে উৎসাহ যোগাতেও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। জেলা মৎস্য দফতর ঠিক করেছে, সিউড়ি ১ নম্বর ব্লকে মল্লিক পুরে ১৩টি গ্রামে ১৮৯টি পুকুরে, রামপুরহাটে ১ নম্বর ব্লকে বনহাট পঞ্চায়েতে ৪টি গ্রামের ৮৪টি পুকুরে ও দুবরাজপুর ব্লকের পদুমা পঞ্চায়েতে ১১৭টি পুকুরে সরকারি ভাবে মাছ চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
জেলা মৎস্য দফতরের উপ-অধিকর্তা সৌরেন্দ্রনাথ জানা বলেন, ‘‘আমাদের জেলায় ৯০ হাজার পুকুর রয়েছে। যার পরিমাণ ২৩ হাজার হেক্টর। কিন্তু জেলার বহু গ্রামে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রচুর পুকুর রয়েছে। সেগুলিতে বাণিজ্যিক ভাবে মাছ চাষ হলে জেলাতে বাইরে থেকে মাছ আমদানি করতে হবে না।’’ এমন মনে করছেন জেলার অনেক মাছ চাষিও। ইলামবাজার লাগোয়া পায়ের গ্রামে ৩ হাজার মানুষ বসবাস করেন। ছোট বড়ো মিলিয়ে সেখানে প্রায় এক হাজারের মতো পুকুর রয়েছে। এক পুকুর মালিক বিশ্বনাথ ঘোষ জানিয়েছেন, ‘‘অধিকাংশ পুকুরে একাধিক মালিকানা রয়েছে। নিজেদের ব্যবহারের জন্য সামান্য মাছ চাষ হয়। সেক্ষেত্রে বড় আকারে চাষের উদ্যোগী হওয়াই যায়।’’
জেলার বাসিন্দা তথা মৎস্য মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, ‘‘মালিকরা সমবায় তৈরি করে মাছ চাষ করলে সকলেরই ভাল হবে।’’ তিনি বলছেন, ‘‘জেলা পরিষদের সংশ্লিষ্ট কর্মাধ্যক্ষকে বলছি। উনিই সব ব্যবস্থা করবেন।’’ মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ নব গোপাল বাউরি বলেন, ‘‘জেলার সব পুকুরে অনুসন্ধান করা হবে। সমবায় প্রথায় মাছ চাষে আকর্ষণীয় প্রকল্প রয়েছে। সেগুলিকে এ বার বাস্তবায়িত করা হবে।’’