suri

দ্বিতীয় দিনেও সফল লকডাউন

পুলিশের কড়া নজরদারিতে চেনা ভিড় উধাও। রাস্তাঘাটে লোকজনের উপস্থিতি প্রায় নেই বললেই চলে। দোকান বাজার সব বন্ধ। চলতি সপ্তাহে লকডাউনের দ্বিতীয় দিন, শনিবারও দেখা গেল এমন ছবি। বৃহস্পতিবারের মতোই এ দিনও লকডাউন সফল হয়েছে বলেই মনে করছে পুলিশ প্রশাসন। তবে তার মধ্যেই উদ্বেগ বাড়িয়েছে খোদ জেলা সদর সিউড়িতে মাস্ক না পরার প্রতিবাদ করায় এক বৃদ্ধের প্রহৃত হওয়ার ঘটনা। কেমন ছিল এ দিন জেলার নানা শহরের চেহারা, ঘুরে দেখল আনন্দবাজার। খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হননি কেউ। এদিন লকডাউন উপেক্ষা করে যে সমস্ত মানুষ বিনা কারণে রাস্তায় বেরিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

সিউড়ি শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২০ ০৩:২৯
Share:

তৎপর: রাস্তায় এক বাসিন্দাকে মাস্ক পরিয়ে দিচ্ছে পুলিশ। লাভপুরে। ছবি: কল্যাণ আচার্য

বৃহস্পতিবারের মতোই এ দিনও কার্যত বনধের চেহারা নিয়েছিল জেলা সদর সিউড়ি ও পুরশহর দুবরাজপুর। ওষুধ কিনতে বা বিশেষ প্রয়োজনে যাঁরা এ দিন রাস্তায় নেমেছিলেন তাঁদের প্রত্যেকের মুখে মাস্ক ছিল। সকাল থেকে জেলা সদরের এসপি মোড়, বড়বাগান, চৈতালি মোড়, মসজিদ মোড়, বাসস্ট্যান্ড প্রত্যেকটি এলাকায় পুলিশি তল্লাশির হয়। অকারণ রাস্তায় বেরোলে আইনি পদক্ষেপ করেছে পুলিশ। দুবরাজপুরে রানিগঞ্জ মোরগ্রাম ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক দিয়ে শহরে ঢোকা ও বেরোনের পথ গার্ডরেল দিয়ে বন্ধ করা ছিল।

Advertisement

রামপুরহাট

সাপ্তাহিক লকডাউনের দ্বিতীয় দিনেও প্রথম দিনের মতো সাফল্যের ছবি দেখা গিয়েছে রামপুরহাটে। বাজার বা ছোটখাট চায়ের দোকান থেকে পাড়ার মোড়ে পান বিড়ি সিগারেটের দোকান— সবই বন্ধ ছিল। জাতীয় সড়ক বা প্রধান প্রধান রাস্তায় দু’একজনকে টোটোতে আসতে দেখা যায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে বেশির ভাগই গ্রামাঞ্চল থেকে হাসপাতালে চিকিৎসা করার জন্য টোটোর ভরসায় শহরে এসেছেন। ময়ূরেশ্বরের নানা এলাকাতেও রাস্তাঘাট ছিল ফাঁকা। পথে পুলিশি নজরদারিও চোখে পড়েছে।

Advertisement

বোলপুর

বৃহস্পতিবারের পর শনিবারেও সার্বিক লকডাউন সফল করতে বোলপুরে কড়া ভূমিকায় দেখা গিয়েছে পুলিশ প্রশাসনকে। বাজার ছিল বন্ধ। রাস্তাঘাটও জনমানব শূন্য। লকডাউন সফল করতে এদিন সকাল থেকেই বোলপুর শহরের রাস্তায় দেখা যায় জেলা পুলিশের কর্তাদের। বাসস্ট্যান্ড, শ্রীনিকেতন মোড়, চৌরাস্তা-সহ একাধিক জায়গায় পুলিশের পক্ষ থেকে নাকা চেকিং করা হয়। যাঁরা অহেতুক বাড়ির বাইরে বেরিয়েছিলেন তাঁদের বাড়ি ফিরিয়ে দেওয়া হয়। অলিগলিতে নজর রাখার জন্য পুলিশের বাইক বাহিনী শহরজুড়ে নজরদারি চালায়। কোথাও কোথাও মাস্ক না পরা ও লকডাউন উপেক্ষা করে বাড়ি থেকে বেরোনোর জন্য বোলপুর এবং শান্তিকেতন থানার তরফ থেকে অনেককে আটক করা হয়। এ দিন টাহলদারি ছিল লাভপুরের রাস্তাতেও।

সাঁইথিয়া

সকাল থেকেই বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে মোড়ে নজরদারি শুরু করে পুলিশ। ওষুধের দোকান ছাড়া কোনও দোকান খোলা দেখা যায়নি। অনেককে রাস্তা থেকে ফেরত পাঠিয়ে দেয় পুলিশ। ধান পু্ঁততে যাওয়া শ্রমিকদের ছাড় মিলেছে। এ দিন বিভিন্ন জায়গায় মনসা পুজো থাকলেও প্রশাসন ওই সব পুজোয় আগেই জমায়েত নিষিদ্ধ করেছিল। পুরোহিত ছাড়া সেখানে পুন্যার্থীদের দেখা যায় নি। পুলিশ জানায়, লকডাউন উপেক্ষা করে রাস্তায় বেরনোর অভিযোগে বেশ কিছু বাইক এবং গাড়ি আটক করা হয়েছে৷

মহম্মদবাজার

সমস্ত দোকান, আনাজ বাজার বন্ধ ছিল মহম্মদবাজারে। সকাল থেকেই পুলিশের গাড়িতে মাইক লাগিয়ে বাড়ি থেকে না বেরোনোর প্রচার চালানো হয়। রাস্তায় লোকজনের দেখা মেলেনিবললেই চলে। যাঁরা লকডাউনে বেরিয়েছিলেন তাদের দাঁড় করিয়ে জিজ্ঞাসা করা হয় কেন তাঁরা রাস্তায় বেরিয়েছেন। উপযুক্ত প্রমাণ দেখালে তবেই মিলেছে ছাড়। জাতীয় সড়কেও গাড়ি ছিল না বললেই চলে। খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হননি কেউ। এদিন লকডাউন উপেক্ষা করে যে সমস্ত মানুষ বিনা কারণে রাস্তায় বেরিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে।

মুরারই, নলহাটি

আনাজ বাজার ও এলাকার সমস্ত বাজার বন্ধ ছিল। খাবারের দোকান বন্ধ থাকায় কিছু বাসিন্দার অসুবিধেও হয়েছে। পুলিশ বিভিন্ন এলাকায় রুট মার্চ করে। রাস্তার মধ্যে বিভিন্ন গাড়ির বৈধ কাগজ ও হাসপাতালের কাগজ দেখে রুগীদের ছাড়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন