বিপজ্জনক। ময়ূরাক্ষী নদীর নতুন ব্রিজে তোলা নিজস্ব চিত্র।
পূর্তদফতর সারিয়ে দেওয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই কেউ বা কারা ভেঙে দিল ম্যানহোলের ঢাকনা। প্রাণ হাতে নিয়ে সেতু পারাপার করছেন বাসিন্দারা। তাঁদের আশঙ্কা, যে কোনও সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। সাঁইথিয়া ময়ূরাক্ষী নদীর নতুন ব্রিজের ঘটনা।
বাসিন্দাদের দাবি, গত দশ-বারো দিন থেকে ব্রিজের দক্ষিণ দিকে ম্যানহোলটি খোলা অবস্থায় ছিল। পূর্তদফতরকে খবর দেওয়া হয়। শনিবার বিকেলে পূর্ত দফতর থেকে ম্যানহোলটি সারিয়ে দেয়। সোমবার সকাল হতে না হতেই কেউ বা কারা ফের ম্যানহোলটি ভেঙে দেয়। পূর্ত দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার দেবাশিস সরকার বলেন, “খবর পেয়েই সারানো হয়। কারণ ম্যানহোলের মুখ খোলা থাকলে যে কোনও সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। বিশেষ কারণে লোহার পাতের বদলে ম্যান হোলের মুখটা ঢালাই দিয়ে বন্ধও করে দেওয়া হয়। যাতে ঢালাই নষ্ট না হয় বলে ওই ম্যানহোলের চারপাশ বড় পাথর দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছিল। ফের ভেঙে দেওয়ার খবর পেয়েছি। কেন ভাঙল বুঝতে পারছি না।”
স্থানীয় সূত্রে খবর, সাঁইথিয়া নতুন ব্রিজ বা সেতুটির অবস্থা এমনিতেই খারাপ। পুরো সেতুটি খানা খন্দে ভর্তি। সেতুর দু’প্রান্তের রাস্তার সংযোগস্থলগুলির অবস্থাও এককথায় ভয়ঙ্কর। সেতুর দু’ পারের অসংখ্য লোক প্রতিদিন নানা দরকারে পায়ে হেঁটে বা সাইকেলে মটর বাইকে এই সেতু দিয়ে যাতায়াত করেন। তেমনি বহরমপুর, সিউড়ি, রামপুরহাট, রামনগর, মুরালপুর, দুমকা-সহ আরও কয়েকটি রুটের বহু বাস ও ছোট বড় অসংখ্য গাড়ি যাতায়াত করে। বাসিন্দাদের দাবি, ভাড়ি গাড়ি যাতায়াতের কারণেই সেতু বা রাস্তার এই হাল। ব্রীজের উত্তর পারের বাঘডাঙার মিষ্টি ব্যবসায়ি নবকুমার মণ্ডল, সুকুমার মণ্ডল, মানিক সাউরা বলেন, “সেতুটির যা অবস্থা, তাতে এমনিতেই চলাচল করতে ভয় হয়। কিন্তু কিছু করার নেই। কারণ আমাদের ভাত ঘর হল সাঁইথিয়া। কাজেই বিভিন্ন প্রয়োজনে একরকম দু’বেলা যাতায়াত করতে হয়।” সাঁইথিয়ার বাসিন্দা, বিধান ঘোষ, আশিস সাহা, সন্তোষ সাউ, মিঠু শেখরা বলেন, “কি করব, ব্যবসার কারণে দু’বেলা ওপারে যেতে হয়। সেতুর অবস্থা ভীষন খারাপ। গত কয়েকদিন থেকে ম্যানহোল খোলা।”
সাঁইথিয়া হাইস্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী নদীর ওপারের শাউলডিহি গ্রামের বাসিন্দা, শ্রেয়শী মুখোপাধ্যায় ও অদ্রিজা মুখোপাধ্যায়রা বলেন, “ব্রীজের বেশ কিছুটা আগে থেকে রাস্তার এবং ব্রীজের যে কি খারাপ অবস্থা, তা বলে বোঝানো যাবে না। তারপর ম্যানহোল খোলা। ওই পথে চলতে ভয় হয়।” পূর্ত দফতর সুত্রের খবর, ওই খোলা ম্যানহোলে লোহার প্লেটের বদলে ঢালাই দেওয়া হয়েছিল চুরির ভয়ে। তাতেও শেষ রক্ষা করা যায়নি। এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার বলেন, “ম্যানহোলের বিষয়টি থানায় জানানো হয়েছে। ম্যানহোলের পাশাপাশি সেতুর উত্তর পারের দু’ দিকের রাস্তাও কাল পরশুর মধ্যে সারানোর কাজ শুরু করা হবে। বর্ষার পর পাকাপাকি ভাবে সেতুর রাস্তার কাজ করা হবে।”