মন্দিরে বিয়ে করবে বলে কনেকে নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিল বর। কিন্তু, কনে নাবালিকা। খবর পেয়েই বর-কনের গাড়ি আটকালেন চাইল্ড লাইনের সদস্যেরা। খবর দেওয়া হল পুলিশ-প্রশাসনকে। শেষ পর্যন্ত প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত মেয়ের বিয়ে দেবেন না, এই মর্মে পুলিশের কাছে মুচলেকা দিলেন মেয়েটির বাবা। সোমবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে রঘুনাথপুর ব্লকের চোরপাহাড়ি গ্রামে।
রঘুনাথপুরের বিডিও সুনীতিকুমার গুছাইত জানান, নাবালিকার বাবা থানায় মুচলেকা দেওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পেশায় দিনমজুর ওই ব্যক্তি এ দিন গোপনে তাঁর নাবালিকা মেয়ের বিয়ে দিচ্ছেন মধ্যপ্রদেশের এক যুবকের সঙ্গে, এই খবর পেয়েই ওই গ্রামে যাচ্ছিলেন আদ্রার চাইল্ড লাইনের কিছু সদস্য। সংস্থাটির কর্মকর্তা মন্টু মাহাতো বলেন, “চিনপিনা রেল গেটের কাছে দু’টি সাজানো গাড়ি দেখে সন্দেহ হওয়ায় জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারি, যে বিয়ে আটকাতে যাচ্ছিলাম আমরা, তারাই আনাড়ার শিব মন্দিরে বিয়ে দিতে গাড়ি ভাড়া করে বেরিয়েছে। তখনই আমরা পুলিশকে খবর দিই।”
খবর পেয়ে সকলকেই রঘুনাথপুর থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই মেয়েটি স্থানীয় মেট্যাল সহর হাইস্কুলের নবম শ্রেণিতে পড়ে। বিডিও জানান, স্কুলে থাকা জন্মের শংসাপত্র অনুযায়ী ওই মেয়েটির বয়স পনেরো বছর। এ দিন থানায় বসে মেয়েটির বাবা বলেন, “অভাবের সংসার হওয়ায় মধ্যপ্রদেশের মোরেনা জেলার আম্বার বাসিন্দা মনোজ ছারি নামে ওই যুবকের সঙ্গে মেয়ের সম্বন্ধ হওয়ায় দেরি না করে বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। পাত্রপক্ষের বিশেষ দাবিও ছিল না।” আম্বায় ছোট ব্যবসা রয়েচে মনোজের। এ দিন কয়েকজন আত্মীয়কে নিয়ে বিয়ে করতে চোরপাহড়ি গ্রামে এসেছিলেন তিনি। তাঁর অবশ্য দাবি, “আঠেরো বছরের কম বয়সের মেয়েকে বিয়ে করায় আইনি বাধা রয়েছে জানতাম না।”
মেয়েটির বাবা বলেন, “সবাই মিলে কম বয়েসে মেয়ের বিয়ে দেওয়ার ক্ষতির দিকগুলি বুঝিয়েছেন। পুলিশের কাছে মুচলেকা দিয়ে জানিয়েছি, প্রাপ্তবয়স্ক না হলে মেয়ের বিয়ে দেব না।” বিডিও বলেন, “ওই মেয়েটি আমাদের জানিয়েছে, সে পড়াশোনা করতে চায়। কিন্তু, অভাবের জন্য বইখাতার সমস্যা আছে। ও যাতে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে, তা দেখব।”