Mamata Banerjee

Mamata Banerjee: বাংলা থেকে উদ্বাস্তু উচ্ছেদ নয়: মুখ্যমন্ত্রী

এ দিন নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে এক অনুষ্ঠানে বঙ্গের বিভিন্ন উদ্বাস্তু কলোনির বাসিন্দাদের হাতে পাট্টা তুলে দেয় রাজ্য সরকার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৫:৩৮
Share:

ফাইল চিত্র।

তৃণমূল সরকার যে উদ্বাস্তুদের সহমর্মী, তা বোঝাতে গিয়ে বৃহস্পতিবার পাট্টা বিলির অনুষ্ঠানে বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে বিঁধলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, ‘‘এনপিআর, এনআরসি করে ওরা অধিকার কেড়ে নিতে চায়। বাংলার ২৬১টি উদ্বাস্তু কলোনিকে রাজ্য সরকার আইনি স্বীকৃতি দিয়েছে। তাদের কোনও দিন উচ্ছেদ করা যাবে না। রেলের বা অন্যান্য কেন্দ্রীয় সংস্থার জমিতে কিংবা বেসরকারি জমিতে দীর্ঘদিন বসবাস করলেও উচ্ছেদ করা যাবে না।’’

Advertisement

এ দিন নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে এক অনুষ্ঠানে বঙ্গের বিভিন্ন উদ্বাস্তু কলোনির বাসিন্দাদের হাতে পাট্টা তুলে দেয় রাজ্য সরকার। ওই সরকারি অনুষ্ঠান নিয়ে নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী টুইটে লিখেছেন, ‘‘আমি উদ্বাস্তু কলোনির বাসিন্দাদের পাট্টা বিলির বিরোধী নই। কিন্তু এটা আগে করা হয়নি কেন? এখন নির্বাচনী আচরণবিধি কার্যকর রয়েছে। এই অনুষ্ঠান ২৭ ফেব্রুয়ারির পরে করা উচিত ছিল।’’

রাজ্য নির্বাচন কমিশন সূত্রের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রীর সভা নিয়ে যে-অভিযোগ উঠেছে, সেই বিষয়ে সরকারের কাছ থেকে রিপোর্ট চাওয়া হবে। তবে এই পাট্টা বিলি আগেই হয়ে গিয়েছে। এ দিন শুধু অনুষ্ঠানটাই হয়েছে বলে কমিশন সূত্রের খবর।

Advertisement

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, ২০১৯-এ বঙ্গের উদ্বাস্তু এলাকায় জনসমর্থন পেয়েছিল বিজেপি। কিন্তু ২০২১-এ সেই ভোটব্যাঙ্ক অনেকটাই ধসে গিয়েছে। তৃণমূল সরকার পাট্টা দিয়ে ওই সব এলাকায় নিজেদের সমর্থন দৃঢ় করার পরিকল্পনা করেছে। বিজেপির পক্ষে কোনও ভাবেই পাট্টা বিলির বিরোধিতা করা সম্ভব নয়। তাই আচরণবিধিকে অস্ত্র করছে তারা।

কোনও দলের নাম না-করে মমতা বলেন, ‘‘মতুয়ারাও রাজনীতির শিকার।’’ অনেকের ব্যাখ্যা, এক সময় তৃণমূলের ভোটব্যাঙ্ক হিসেবে বিবেচিত হলেও লোকসভা ভোটে মতুয়াদের বড় অংশ বিজেপির দিকে ঝুঁকেছিল। তাদের ঠাকুরবাড়ির সদস্য সাংসদ এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও হয়েছেন। যদিও ২০২১-এর পরে গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে সেই সদস্যের মন কষাকষি প্রকট হয়। তাই মতুয়া-সমস্যা তুলে পুরনো ভোটব্যাঙ্ক ফেরাতে চাইছেন মমতা।

পাট্টা বিলির মঞ্চ থেকে নানা বিষয়ে কেন্দ্রের দিকে তোপ দেগেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘পিএম কেয়ার্সের টাকা কোথায় গেল?’’ রাজ্যের প্রাপ্য বরাদ্দ কেন্দ্র দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। বলেছেন, ‘‘বিজেপির টাকা তো দিচ্ছে না। এ রাজ্য থেকে জিএসটি, কর, সেস বাবদ টাকা নিয়ে যাবে। কিন্তু দেওয়ার সময় দেবে না!’’ কোভিড টিকার শংসাপত্রে প্রধানমন্ত্রীর ছবি নিয়েও কটাক্ষ করেছেন মমতা। আবার তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে উত্তরপ্রদেশের ভোটের দিন দুই রাজ্যের তুলনাও করেছেন। আবাস যোজনা প্রসঙ্গ টেনে বলেছেন, ‘‘ওই রাজ্যে ২৪ কোটি বাসিন্দা। বাড়ি তৈরি করেছে ৪১ লক্ষ। আমাদের সাড়ে ১০-১১ কোটি বাসিন্দা। ইতিমধ্যেই ৪৫ লক্ষ বাড়ি করেছি। আরও আড়াই লক্ষ করে দেব। উত্তরপ্রদেশে বিজেপির সরকার। তাই বরাদ্দ বেশি। আমাদের বেলায় তো প্রাপ্যই দিতে চায় না!’’ উঠেছে ইতিহাসের বদল ঘটানো থেকে বেকারত্বের হার বৃদ্ধির প্রসঙ্গও। রেল, সেল, এয়ার ইন্ডিয়ার মতো দেশের সম্পদ বিক্রি নিয়েও কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী। ‘‘দেশই যদি বিক্রি হয়ে যায়, তা হলে দেশের জনগণ বাঁচবে কী ভাবে,’’ প্রশ্ন মমতার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন