রূপার সফর স্থগিত, শুরু চাপানউতোর

স্থগিত হয়ে গেল বিজেপি নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের নয়াগ্রামে ত্রাণ বিলির ‘ব্যক্তিগত কর্মসূচি’। শুক্রবার এলাকার ‘বন্যার্ত’দের পাশে দাঁড়ানোর জন্য একান্তই ব্যক্তিগত কর্মসূচি ছিল রূপার। যদিও তিনি এলেন না। বিজেপি-র ঝাড়গ্রাম জেলা নেতৃত্ব জানিয়েছিলেন, নয়াগ্রাম ব্লকের জলমগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের ত্রাণ দেওয়ার জন্য ব্যক্তিগত সফরে এ দিন আসবেন বলে জানিয়েছিলেন রূপা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৫ ০১:৩৬
Share:

স্থগিত হয়ে গেল বিজেপি নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের নয়াগ্রামে ত্রাণ বিলির ‘ব্যক্তিগত কর্মসূচি’। শুক্রবার এলাকার ‘বন্যার্ত’দের পাশে দাঁড়ানোর জন্য একান্তই ব্যক্তিগত কর্মসূচি ছিল রূপার। যদিও তিনি এলেন না। বিজেপি-র ঝাড়গ্রাম জেলা নেতৃত্ব জানিয়েছিলেন, নয়াগ্রাম ব্লকের জলমগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের ত্রাণ দেওয়ার জন্য ব্যক্তিগত সফরে এ দিন আসবেন বলে জানিয়েছিলেন রূপা। দলের নেত্রী তথা অভিনেত্রী আসবেন বলে বৃহস্পতিবার থেকেই নয়াগ্রামের মলম গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছিলেন দলীয় কর্মীরা। কিন্তু শুক্রবার সকালে দলীয় কর্মীরা জানতে পারেন, ‘অসুস্থতা’র কারণে রূপার সফর স্থগিত হয়েছে। বিজেপি-র ঝাড়গ্রাম জেলা সাধারণ সম্পাদক অবনী ঘোষ বলেন, “বৃহস্পতিবার হাবরা-অশোকনগরে বৃষ্টিতে ভিজে রূপাদির শরীরটা ভাল নেই। তাই সফর পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।” অবনীবাবু জানাচ্ছেন, রূপার সফর বাতিল হয়নি। কেবল স্থগিত হয়ে গিয়েছে। পরবর্তী সফরের দিন ঠিক হলেই জানানো হবে।

Advertisement

বিজেপি-র একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার হাবরা-অশোকনগরে যে ঘটনা ঘটেছে, নয়াগ্রামেও সেই একই কায়দায় রূপাকে আটকানোর কৌশল নিয়েছিল স্থানীয় তৃণমূল। বিষয়টি জানাজানি হতে রাতেই বিজেপি-র জেলা নেতৃত্বের একাংশ রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়ে দেন, ব্যক্তিগত সফরে এসেও রূপাকে যদি শাসক দলের হেনস্থার শিকার হতে হয়, তাহলে স্থানীয় কর্মীদের মনোবল ধাক্কা খাবে। কারণ, গত কয়েক মাসে স্থানীয় নেতৃত্বের অনেকে গ্রেফতার হওয়ার পরে নয়াগ্রামে বিজেপি-র সংগঠন অনেকটাই দুর্বল হয়ে গিয়েছে। টানা পাঁচ মাস জেলবন্দি থাকার পরে সম্প্রতি বিজেপি-র নয়াগ্রাম ব্লক সভাপতি অর্ধেন্দু পাত্র ও তাঁর ভাই দলের জেলা কমিটির সদস্য সুখেন্দু পাত্র জামিনে ছাড়া পেয়েছেন বটে। তবে সাংগঠনিক দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠার মুহূর্তে অভিনেত্রীর সফর ঘিরে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে সেটা দলের ভাবমূর্তির বিপক্ষেই যাবে।

দলের অন্দরে শোনা যাচ্ছে, রূপার সফর আটকানোর জন্য খোদ রাজ্য নেতৃত্বের কাছে এমনই নালিশ করে বসেন ঝাড়গ্রামের এক নেতা। তাই তড়িঘড়ি রূপার ব্যক্তিগত সফর স্থগিত হয়ে যায়। কিন্তু এক প্রবীণ বিজেপি নেতার বক্তব্য, “সেটাই চিন্তার। রূপাকে আটকাতে এ দিন নয়াগ্রামের বড়পাট, নিগুই, খাঁকড়ি, ভালিয়াঘাটির মতো এলাকাগুলিতে জমায়েত করে রেখেছিল শাসক দল। ঘন ঘন টহল দিয়েছে পুলিশের গাড়ি। আগামী দিনে রূপা এলে আদৌ এলাকায় ঢুকে দুর্গতদের হাতে ত্রাণ তুলে দিতে পারবেন কি-না সে ব্যাপারে ঘোর সংশয় রয়েছে।” দলের তরুণ প্রজন্মের নেতারা অবশ্য বলছেন, রূপাদি এলাকায় এসে বাধা পেলে দলেরই লাভ। বিজেপি-র ঝাড়গ্রাম জেলা যুব মোর্চার সাধারণ সম্পাদক সুমন সাহু বলেন, “রূপাদিকে নয়াগ্রামে ঢুকতে বাধা দেওয়া হলে এলাকার মানুষ তা কখনই মেনে নেবেন না। জনতাই রূপাদিকে এলাকায় ঢুকিয়ে দেবেন।” যদিও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোত্‌ ঘোষ বলেন, “ওখানে বিজেপি-র কোনও জনভিত্তিই নেই। সেই কারণে ওদের কর্মসূচি স্থগিত করে দিয়ে আমাদের ঘাড়ে মিথ্যা দোষ চাপাচ্ছে। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় কেউ ত্রাণ নিয়ে গেলে আমরা তাঁকে অবশ্যই স্বাগত জানাব, তিনি যে দলেরই হোন না কেন।”

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন