রামপুরহাটের এসডিপিও এবং অন্য পুলিশ অফিসাদের বিরুদ্ধে থানায় আটকে রেখে হেনস্থা করার অভিযোগ দায়ের করলেন রামপুরহাটেরই মহকুমাশাসক শ্রুতিরঞ্জন মোহান্তি। তিনি ২০১৫ ব্যাচের আইএএস অফিসার। শনিবার মুখ্যসচিব মলয় দে ও স্বরাষ্ট্রসচিব অত্রি ভট্টাচার্যকে লেখা অভিযোগপত্রে তিনি জানিয়েছেন, এখনও তাঁকে পুলিশ হুমকি দিচ্ছে। তাতে তাঁর জীবনের ঝুঁকি রয়েছে।
প্রশাসনের খবর, পুলিশও শুক্রবারের ঘটনা থানায় লিপিবদ্ধ করে রেখেছে। প্রয়োজনে মহকুমাশাসকের (এসডিও) বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ দায়ের করা হতে পারে।
প্রশাসনের খবর, নবান্ন রাত পর্যন্ত এ নিয়ে পদক্ষেপ করেনি। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে রামপুরহাটে গত শুক্রবার পুলিশ ও প্রশাসনিক কর্তাদের মধ্যে যে সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
বীরভূমের জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু এ দিন বলেন, ‘‘যা ঘটে গিয়েছে তা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এটা স্বাভাবিক পরিস্থিতি নয়। বীরভূমের জেলা প্রশাসনের সঙ্গে পুলিশ সদ্ভাব রেখেই কাজ করছে। ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।’’
শুক্রবার নবান্নে পাঠানো অভিযোগে রামপুরহাটের মহকুমাশাসক জানান, বীরভূমের ক্র্যাশার মালিকদের এক প্রতিনিধি দল তাঁর কাছে এসে তোলাবাজির অভিযোগ করে। পাথর খাদান থেকে গাড়ি বেরোলেই তোলাবাজরা টাকা না দিয়ে পাথর নিয়ে যেতে দেয় না। এই পরিস্থিতিতে খাদান বন্ধের হুমকি দেন মালিকেরা। মহকুমাশাসক লিখেছেন, ঘটনার গুরুত্ব বুঝে তিনি রামপুরহাট থানার আইসি’কে ডেকে পাঠান। কিন্তু বারবার ডাকা সত্ত্বেও আইসি আসেননি। এর পর এক জন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটকে সঙ্গে নিয়ে শ্রুতিরঞ্জন থানায় হাজির হন। ১৯৪৩ সালের পুলিশ রেগুলেশন অব বেঙ্গলের ২২(এ) ধারায় ম্যাজিস্ট্রেটকে দেওয়া ক্ষমতাবলে তিনি থানা ‘পরিদর্শন’ও শুরু করেন।
মহকুমাশাসক নবান্নকে লিখেছেন, তখনই থানায় হাজির হন রামপুরহাটের এসডিপিও। তিনি মহকুমাশাসকের থানা ও লকআপ পরিদর্শনের এক্তিয়ার নিয়েই প্রশ্ন তোলেন। তাঁকে থানায় দরজা বন্ধ করে আটকে দেওয়া হয়। গালিগালাজও করা হয়। সরকারি কাজে গিয়ে পুলিশের হাতে এমন হেনস্থার বিহিতও চেয়েছেন এসডিও।
নবান্নর শীর্ষকর্তাদের একাংশের মতে, এসডিও-র থানায় যাওয়ার আগে জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলে নেওয়া জরুরি ছিল। তাতে জটিলতা হত না। তবে নিচুতলার পুলিশ অফিসাররা যে ভাবে এসডিও-কে দরজা বন্ধ করে গালিগালাজ করেছেন তাও উচিত হয়নি। পুলিশ মহলের মতে, এসডিও-র থানা ‘পরির্দশন’ ব্যতিক্রমী ঘটনা। আইসি তাঁর কথা না শুনলে তিনি জেলার পদস্থ পুলিশ কর্তাদের বিষয়টি জানাতে পারতেন।