online education

পোর্টালে বিভ্রাট, বকেয়া পরীক্ষায় বিপাকে কলেজ

চূড়ান্ত বর্ষ ও চূড়ান্ত সিমেস্টারের পরীক্ষার মতো এ বার স্নাতক স্তরের অন্তর্বর্তী সিমেস্টার ও ব্যাকলগের পরীক্ষাতেও অভিযোগের কাঠগড়ায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পোর্টাল।

Advertisement

মধুমিতা দত্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২০ ০৫:০৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

কেউ কেউ জানাচ্ছেন, পোর্টাল খোলেনি। কেউ বা বলছেন, পোর্টাল খুললেও গতি খুবই মন্থর। আবার অনেকের বক্তব্য, কখনও কখনও ঠিকমতো ওটিপি-ই আসছে না। সব মিলিয়ে নম্বর আপলোড করতে দেরি হয়েছে বিস্তর। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে সব নম্বর তোলা সম্ভব হয়নি।

Advertisement

চূড়ান্ত বর্ষ ও চূড়ান্ত সিমেস্টারের পরীক্ষার মতো এ বার স্নাতক স্তরের অন্তর্বর্তী সিমেস্টার ও ব্যাকলগের পরীক্ষাতেও অভিযোগের কাঠগড়ায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পোর্টাল। নম্বর আপলোডের পোর্টাল যথাযথ ভাবে কাজ করেনি বলে অনেক কলেজ থেকেই অভিযোগ উঠছে। এই ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বক্তব্য সোমবার রাত পর্যন্ত জানা যায়নি।

অতিমারির জন্য এ বার চূড়ান্ত বর্ষ ও চূড়ান্ত সিমেস্টারের পরীক্ষার জন্য সময় বেঁধে দিয়েছিল ইউজিসি বা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে সেই সব পরীক্ষা নেওয়ার দায়দায়িত্ব আবার কলেজকে দিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ। সময় মেনে সেই সব পরীক্ষার যাবতীয় দায়িত্ব পালন করতে হিমশিম খেতে হয়েছিল কলেজগুলিকে। সেই বিপুল কর্মভার বহনের পরে আবার অন্তর্বর্তী সিমেস্টার, ব্যাকলগের সব পরীক্ষার দায়িত্বও বর্তায় কলেজগুলির উপরে। অনলাইনে প্রশ্ন করা, পরীক্ষা নেওয়া, খাতা দেখা এবং নম্বর আপলোড করতে হয়েছে। কিন্তু সময় বাড়িয়েও নম্বর আপলোড করার কাজ শেষ হয়নি অনেক কলেজেই।

Advertisement

বিভিন্ন কলেজের বক্তব্য, নম্বর তোলার তালিকায় অনেক ছাত্রছাত্রীর নাম না-থাকায় বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ে জানানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রচুর সংযোজন করে একেবারে শেষ পর্যায়ে নম্বর তোলার তালিকা পাঠিয়েছে। তার উপরে আপলোডের সময় ভুলভ্রান্তির জেরে অনেক কলেজ সংশোধনের জন্য কিছু নম্বর পাঠায় বিশ্ববিদ্যালয়ে। অভিযোগ, নম্বর আপলোডের শেষ দিন ছিল ২৬ ডিসেম্বর, শনিবার। বিশ্ববিদ্যালয় ই-মেল করে বিষয়টি জানিয়েছে সেই শনিবার রাতে! কিন্তু রাত ১২টায় পোর্টাল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নম্বর সংশোধনের কাজ করা সম্ভব হয়নি।

পড়ুয়াদের পরীক্ষায় বসার যোগ্যতা সংক্রান্ত তালিকা পরীক্ষা দেওয়ার আগে প্রকাশিত হয়। কিন্তু কোন পড়ুয়া কোন কোন পরীক্ষা দেবেন, সেই তালিকায় তার উল্লেখ ছিল না। পরীক্ষা ও নম্বর আপলোডের শেষ পর্যায়ে সেই তালিকা সংশোধন করে দেয় বিশ্ববিদ্যালয়। এর ফলে ব্যাপক বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয় বলে অভিযোগ। নম্বর জমা দেওয়ার তালিকায় অনেক ছাত্রছাত্রীর নাম এখনও নেই। তাঁদের নম্বর জমা দেওয়া যায়নি। পোর্টাল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ফোন করেও কোনও উত্তর মিলছে না।

অনেক অধ্যক্ষ জানাচ্ছেন, এ বার ফর্ম পূরণ না-হওয়ায় সমস্যা এতটা জটিল হয়েছে। ব্যাকলগ অর্থাৎ সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষার্থীদের যে-তালিকা বিশ্ববিদ্যালয় পাঠিয়েছে, তাতে বিএ এবং বিএসসি-তে ২০১২ সালের পরীক্ষার্থীরাও রয়েছেন। তাঁদের খুঁজে বার করে পরীক্ষা নেওয়াটা প্রায় দুঃসাধ্য কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। নামখানা কলেজের টিচার ইনচার্জ দয়ালচাঁদ সর্দার সোমবার বলেন, ‘‘পরীক্ষার ফর্ম পূরণ না-হওয়ায় বিষয়টি আরও জটিল হয়ে গিয়েছে। মোট পরীক্ষার্থী নিয়ে বিভ্রান্তি বেড়েছে। এবং সেটা এখনও রয়েছে।’’ নিউ আলিপুর কলেজের অধ্যক্ষ জয়দীপ ষড়ঙ্গীর বক্তব্য নম্বর আপলোডের বিষয়টি অবশ্যই ‘ইউজ়ার-ফ্রেন্ডলি’ হওয়া দরকার ছিল। এখন কলেজ খোলা নেই। অথচ ওটিপি আসত শুধু অধ্যক্ষের মোবাইল ফোনে। এই পরিস্থিতিতে নম্বর আপলোডে খুবই অসুবিধা হয়েছে।

এই বিষয়ে বক্তব্য জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) আশিস চট্টোপাধ্যায় এবং পরীক্ষা নিয়ামক জয়িতা দত্তগুপ্তকে বার বার ফোন ও মেসেজ করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁদের বক্তব্য জানা যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন