তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। —ফাইল চিত্র।
তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে গ্রেফতার করল ইডি। মুর্শিদাবাদের কান্দির আন্দিতে তাঁর গ্রামের বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি সোমবারও ইডিকে দেখে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন বলে অভিযোগ। এমনকি, আবার নিজের মোবাইল ফোন বাড়ির পিছন দিকের ঝোপে ফেলে দেন। তাঁর বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সঙ্গে অসহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার সকাল থেকে এসএসসি দুর্নীতি মামলায় রাজ্যের একাধিক জায়গায় হানা দিয়েছে ইডি। মুর্শিদাবাদে জীবনকৃষ্ণের বাড়ি ছাড়াও তাদের দল গিয়েছে রঘুনাথগঞ্জে, তৃণমূল বিধায়কের শ্বশুরবাড়িতে। এ ছাড়া আন্দি মহীষ গ্রামের এক ব্যাঙ্ক কর্মীর বাড়িতেও তল্লাশি চালানো হচ্ছে। ইডি গিয়েছে বীরভূমের সাঁইথিয়ায়। সেখানে ন’নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর মায়া সাহার বাড়িতেও সোমবার সকাল থেকে তল্লাশি চলছে। সম্পর্কে মায়া জীবনকৃষ্ণের পিসি।
বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণকে এর আগে ২০২৩ সালের ১৭ এপ্রিল গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। সে বারও তাঁর বাড়িতে হানা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সংস্থা। অভিযোগ, কেন্দ্রীয় আধিকারিকদের দেখে জীবনকৃষ্ণ দু’টি মোবাইল ফোন বাড়ির পাশের পুকুরে ছুড়ে ফেলে দিয়েছিলেন। তিন দিন ধরে তল্লাশি চালিয়ে, পুকুরে ডুবুরি নামিয়ে, জল ছেঁচে সেই মোবাইল উদ্ধার করা হয়। যদিও তার থেকে ভাল করে তথ্য উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এর পর ১৩ মাস জেলে ছিলেন জীবনকৃষ্ণ। পরে সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিন পান। জেল থেকে বেরিয়ে তিনি বিধানসভাতেও গিয়েছিলেন। আদালত তাঁকে তদন্তে সহযোগিতা করতে বলেছিল। কিন্তু সোমবার আবার তাঁর বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ উঠল।
অভিযোগ, সোমবার সকালে ইডি যখন জীবনকৃষ্ণের বাড়িতে পৌঁছোয়, তখন পিছন দিকের দরজা দিয়ে তিনি পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। তিন কেন্দ্রীয় আধিকারিক ধাওয়া করে তাঁকে ধরে ফেলেন এবং বাড়ির ভিতর নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। বাইরে বেরিয়ে মোবাইল ফোন ফেলে দিয়েছিলেন জীবনকৃষ্ণ। প্রথমে তা বোঝা যায়নি। পরে ইডি বুঝতে পারে এবং বাড়ির পিছন দিকের ঝোপে নর্দমা থেকে মোবাইল উদ্ধার হয়। অভিযোগ, এর পরেও দু’টি মোবাইলের পাসওয়ার্ড বলতে চাননি বিধায়ক।
পুরুলিয়ায় ইডির একটি দল হানা দিয়েছে এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলার অন্যতম অভিযুক্ত প্রসন্ন রায়ের শ্বশুরবাড়িতেও। প্রসন্ন এখন জেলে। অভিযোগ, তিনি এসএসসি নিয়োগের ‘মিডলম্যান’ হিসাবে কাজ করতেন। এর আগে তাঁর অনেক সম্পত্তি ইডি বাজেয়াপ্ত করেছিল। কয়েক বছর আগে প্রসন্নের শ্বশুরবাড়ির তিন বোন একসঙ্গে প্রাথমিকে শিক্ষকের চাকরি পান বলে অভিযোগ। সেই সূত্রে ইডির অভিযান কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।