ভাঙাতে হবে ২৯ জন, পাল্টা চ্যালেঞ্জ অধীরের

বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের নির্বাচিত ৪৪ জন বিধায়কের মধ্যে পাঁচ জন ইতিমধ্যে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। শাসক দলের দাবি, তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেছেন কংগ্রেসের আরও অন্তত পাঁচ বিধায়ক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৬ ০৪:১০
Share:

বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের নির্বাচিত ৪৪ জন বিধায়কের মধ্যে পাঁচ জন ইতিমধ্যে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। শাসক দলের দাবি, তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেছেন কংগ্রেসের আরও অন্তত পাঁচ বিধায়ক। এমনকী তৃণমূলের তরফে কেউ কেউ রাজনৈতিক তর্কে এ কথাও উস্কে দিচ্ছেন যে, কংগ্রেসের মোট ১৫ জন বিধায়ক দল ভেঙে এলেই বিধানসভায় প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদাও খুইয়ে ফেলবে তারা!

Advertisement

কিন্তু এই আশা যে ‘দূরাশা’ তা সংবিধানের দশম তফসিলের ধারা ব্যাখ্যা করে এ বার তুলে ধরতে নামলেন অধীর চৌধুরী-অরুণাভ ঘোষরা। এবং তার মাধ্যমে আদতে দলের ভাঙন রোধে মরিয়া চেষ্টায় নামলেন রাজ্য কংগ্রেস নেতৃত্ব।

শুক্রবার প্রদেশ কংগ্রেস দফতরে এক সভায় অধীরবাবু বলেন, ‘‘যাঁরা ভাবছেন কংগ্রেসের এক তৃতীয়াংশ বিধায়ককে তৃণমূল ভাঙিয়ে নিতে পারলেই খেল খতম, তাঁরা ভুল ভাবছেন। সংবিধানের দশম তফসিল অনুযায়ী, কোনও রাজনৈতিক দলের দুই তৃতীয়াংশ সদস্য যদি একসঙ্গে অন্য রাজনৈতিক দলে যোগ দেন, এক মাত্র তবেই তাঁদের বিধায়ক পদ খারিজ হবে না। অর্থাৎ দলবদল করে বিধানসভার সদস্যপদ ধরে রাখতে হলে কংগ্রেস থেকে অন্তত ২৯ জন বিধায়ককে একসঙ্গে ভাঙাতে হবে। যা অসম্ভব।’’

Advertisement

অধীরবাবুর সঙ্গে ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ। নির্বাচন কমিশনের বিধি দেখিয়ে তিনি আবার হুঁশিয়ার করে বলেন, ‘‘যে বিধায়করা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন, তাঁরা নিজে থেকে বিধায়ক পদ ছেড়ে ভোটে না লড়লে আগামী দিনে আইনি পথেই তাঁদের বিধায়ক পদ খারিজের ব্যবস্থা করা হবে।’’ বিধানসভার স্পিকার ‘দলবদলু’ বিধায়কদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে কী ভাবে আইনি পথে তাঁদের বিধায়ক পদ খারিজ করা যায়, তা নিয়ে আইনি-লড়াইয়ের ভার মান্নানের উপরেই ছেড়ে দিয়েছেন অধীরবাবু। কংগ্রেস সূত্রের মতে, দলবদল সংক্রান্ত একটি মামলায় সম্প্রতি হায়দরাবাদ হাইকোর্ট তেলঙ্গনার স্পিকারকে নোটিশ দিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে আবেদনের সময় সেই প্রসঙ্গও তুলে ধরবে কংগ্রেস।

যদিও পর্যবেক্ষকদের মতে, দলত্যাগী কংগ্রেস বিধায়কদের সদস্য পদ খারিজ করার ব্যাপারটা সহজ নয়। তাঁরা তৃণমূলে সামিল হলেও বিধানসভায় যদি কংগ্রেসের হুইপ অমান্য না করে তা হলেই তাঁদের সদস্য পদ থাকবে। দলত্যাগের জন্য এখনই ভোটে লড়তে হবে না। আসলে কংগ্রেসের ভাঙন ঠেকাতেই অধীর চৌধুরী-আবদুল মান্নানরা কৌশলে দলীয় বিধায়কদের এই সব হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন। তবে কংগ্রেস নেতৃত্বের মতে, সংবিধানের ব্যাখ্যা করার অধিকার সর্বোচ্চ আদালতের রয়েছে। এক জন কংগ্রেস বিধায়ক তৃণমূলের মঞ্চে উঠে যাচ্ছে, তাদের পার্টি অফিসে গিয়ে বসছে, অথচ তার সদস্য পদ খারিজ হবে না, এই অনিয়ম দীর্ঘ দিন চলতে পারে না। গণতন্ত্রের জন্য তা ক্ষতিকারক। তাই আশা করা হচ্ছে, দেশের সর্বোচ্চ আদালতে গিয়ে এর নিদান পাওয়া যাবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement