রায়গঞ্জে দুর্গ ভাঙল কংগ্রেসের

দাশমুন্সিদের কালিয়াগঞ্জের শ্রীকলোনির দোতলার বাড়িটা ভোটের গণনার দিন গমগম করত। দোতলার বারান্দা থেকে নীচের উঠোন, সবুজ আবিরে ছেয়ে থাকত।

Advertisement

গৌর আচার্য

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০১৭ ০৪:০৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

দাশমুন্সিদের কালিয়াগঞ্জের শ্রীকলোনির দোতলার বাড়িটা ভোটের গণনার দিন গমগম করত। দোতলার বারান্দা থেকে নীচের উঠোন, সবুজ আবিরে ছেয়ে থাকত। তিন দশক ধরে সেই দৃশ্যই দেখতে অভ্যস্ত শ্রীকলোনি এ দিন দেখল, সুনসান পড়ে রয়েছে বাড়িটা, তালাটাও কেউ খোলেননি।

Advertisement

প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির খাস তালুক রায়গঞ্জ যে কংগ্রেসের হাতছাড়া হয়ে গিয়েছে, তা অবশ্য বোঝা যাচ্ছিল রবিবার, ভোটের দিন থেকেই। প্রিয়বাবু, দীপার পরে যাঁর কাঁধে কংগ্রেসের দায়িত্ব ছিল, সেই মোহিত সেনগুপ্ত রবিবারই সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে লড়াই থেকে সরে দাঁড়ান। রায়গঞ্জ অবশ্য বলছে, মোহিতবাবু ভোটের লড়াই থেকে সরে গিয়েছিলেন আরও আগে থেকেই। পুরসভার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার পর যুগ্ম প্রশাসক পদে দায়িত্ব দেওয়া হয় তৃণমূলের জেলা সভাপতি অমল আচার্যকে। তখনই তৃণমূল নানা ওয়ার্ডে অস্থায়ী ক্যাম্প খুলে বাসিন্দাদের ছোটোখাট সমস্যা থেকে শুরু করে বড় বিপদ, সব কিছুরই পাশে দাঁড়াতে শুরু করেন। শুরু হয় শহর জুড়ে এলইডি ভেপার লাইট বসানো, অনলাইনের মাধ্যমে জন্ম, মৃত্যু ও বিভিন্ন লাইসেন্সের পরিষেবা, ভ্রাম্যমাণ শৌচাগার, শহরের সৌন্দর্যায়নের মতো উন্নয়নমূলক কাজ আর তার প্রচার। অমলবাবুর পাশে ছিলেন শুভেন্দু অধিকারীর মতো নেতাও। দু’জনের চেষ্টায় কংগ্রেস ভাঙতে শুরু করে।

আরও পড়ুন: স্বামীকে মারছে প্রেমিক, ‘লাইভ’ শুনল

Advertisement

একই সঙ্গে মোহিতবাবুর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগও উঠতে শুরু করে। বাধ্য হয়ে গা ঢাকা দিতে হয় মোহিতবাবুকে। কংগ্রেস সূত্রে খবর, মোহিতবাবুর অনুপস্থিতিতে আর কেউই দলের হাল ধরতে এগিয়ে আসতে পারেননি। বরং নির্বাচনের এক মাস আগে মানস ঘোষ, নয়ন দাস, সাধন বর্মন, অভিজিৎ সাহা, আলতাফ হোসেন, মৌসুমী সিংহ, বরেন্দ্রনাথ রায় সহ কংগ্রেসের প্রায় ৫০ জন নেতা তৃণমূলে যোগ দেন। নির্বাচনের ঠিক মুখে কংগ্রেসের চার বিদায়ী কাউন্সিলর সন্দীপ বিশ্বাস, আদেশ মাহাতো, বিমলজ্যোতি সিংহ, অসীম অধিকারী ও এক প্রাক্তন কাউন্সিলর দীনদয়াল কল্যাণী তৃণমূলে চলে দেন। সেই ভাঙন সামলে ওঠার মতো সময়, সুযোগ মোহিতবাবু আর পাননি। তিনি নিজেই পরাজিত হলেন একদা শিষ্য অভিজিৎবাবুর কাছে।

২৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৪টি ওয়ার্ড এখন তৃণমূলের। দু’টি কংগ্রেসের। একটি ওয়ার্ড বিজেপির দখলে। সিপিএমের প্রাপ্তি শূন্য। এক কংগ্রেস নেতার কথায়, ‘‘রায়গঞ্জ মনে করছে এইমস পাওয়ার আর কোনও আশাই নেই। বরং বিধানসভায় কংগ্রেসকে জেতানোর পরেও সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল পাওয়া গিয়েছে। এ বার তৃণমূল হারলে সেটুকুও ভবিষ্যতে মিলবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন