মধু সরকার। ছবি: নারায়ণ দে
আবার অস্বাভাবিক মৃত্যু হল ভিন্ রাজ্যে কাজের খোঁজে যাওয়া এই রাজ্যের এক শ্রমিকের। আলিপুরদুয়ারের বাসিন্দা ওই যুবকের নাম মধু সরকার (২২)। তাঁর বাড়ির লোকেদের অভিযোগ, পরিচিতদের কাছে তাঁরা জানতে পেরেছেন, মধুর দেহে আঘাতের চিহ্ন ছিল। মুখে রক্তের দাগ ছিল। এ মাসের গোড়াতেই রাজস্থানে কুপিয়ে, পুড়িয়ে খুন করা হয় মালদহের বাসিন্দা আফরাজুল শেখকে। ক্যামেরাবন্দি সেই হত্যাকাণ্ডের ছবি দেখে শিহরিত হয়েছিল গোটা দেশ। আর এ বারের ঘটনা খোদ মোদীর রাজ্যে।
মধুর মৃত্যুর খবর জানার পরে দেহ রাজ্যে আনার ব্যাপারে প্রশাসনকে সক্রিয় হতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিবার সূত্রের খবর, যেখানে মধু কাজ করতেন, ভারুচ জেলার সেই তারাপোরা কাঠের কলটি আঙ্কলেশ্বর থানার অধীনে। সেখান থেকে দেহ এ দিনই রওনা দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সংসদে সরব হওয়ার কথাও ভাবছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। ভিন্ রাজ্যে বাঙালি শ্রমিকরা যে আক্রান্ত হচ্ছেন, তা নিয়ে চিন্তায় শাসকদল। আফরাজুলের ঘটনার পরে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই ডাক দিয়েছিলেন, বাইরে কাজে যাওয়া বাঙালি শ্রমিকরা ফিরে আসুন। সরকার কাজের ব্যবস্থা করবে।
আলিপুরদুয়ার শহর লাগোয়া নর্থপয়েন্টের বাসিন্দা মালা সরকারের দুই ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে মধুই বড়। ফেব্রুয়ারিতে বড় বোনের বিয়ে। সে জন্য টাকা জমাচ্ছিলেন মধু। তখনই বাড়ি আসার কথা ছিল তাঁর। বৃহস্পতিবার শেষবার ছেলের সঙ্গে টেলিফোনে কথা হয় মালার। তিনি বলেন, “রাতে কথা বলার সময় আশপাশে চিৎকার শুনেছিলাম। মধু বলে, অন্য শ্রমিকরা মদ খাচ্ছে। শুক্রবার সকাল থেকে মধুর ফোন বন্ধ ছিল। আমাদের পড়শি মুন্সি মুর্মুও ওখানে থাকেন। সোমবার সকালে তিনিই ফোন করে জানান, মধু মারা গিয়েছে। ওর দেহে আঘাতের চিহ্নও ছিল।’’ গুজরাত পুলিশ স্থানীয় দুই বাসিন্দাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
আরও পড়ুন: এ কোন কেষ্ট! ধমক খেয়ে হঠাৎ যেন ‘বোষ্টম’ হয়েছেন ‘দবঙ্গ’ নেতা
আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার আভারু রবীন্দ্রনাথ জানান, গুজরাত পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।