Mamata Banerjee

৬০ বছর হলেই আমরা তাঁদের বিদায় দিই না, সরকারি মঞ্চ থেকে দলকেই কি বার্তা দিলেন মমতা?

অভিষেক আগেই জানিয়েছিলেন, তিনি মনে করেন সব পেশার মতো রাজনীতিতেও অবসরের বয়স থাকা উচিত। তার পর মমতাকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘‘বয়স আবার কী!’’ ফের অভিজ্ঞতাকেই গুরুত্ব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২৪ ১৫:২৮
Share:

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

তৃণমূলে বয়সবিধি নিয়ে যখন মন্থন চলছে, তখন রবিবার ডায়মন্ড হারবার থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, তাঁর অবস্থানে তিনি অনড়। কিন্তু সোমবার গঙ্গাসাগরে পৌঁছে সরকারি মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারি আমলাদের দেখিয়ে বুঝিয়ে দিতে চাইলেন, ৬০ বছর বয়স হয়ে গেলেই যে কাউকে বিদায় দিতে হবে, তা রাজ্য সরকার বিশ্বাস করে না। বরং অবসরপ্রাপ্ত আমলাদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানো হয়। যা শুনে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহলে কৌতূহল তৈরি হয়েছে, সরকারি মঞ্চ থেকেই কি মমতা দলকে বার্তা দিতে চাইলেন?

Advertisement

গঙ্গাসাগরে পৌঁছে একাধিক সরকারি প্রকল্পের ভার্চুয়াল উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে ছিলেন রাজ্যের সদ্যপ্রাক্তন মুখ্যসচিব তথা অর্থ উপদেষ্টা হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী, রাজ্যের আর এক প্রাক্তন মুখ্যসচিব তথা মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান পরামর্শদাতা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যয়। তাঁদের কথা বলতে গিয়েই মমতা বলেন, ‘‘আমরা কিন্তু যাঁরা যোগ্য লোক তাঁদের ৬০ বছরে বিদায় দিই না। আমরা তাঁদের কাজকর্ম, পুরো অভিজ্ঞতা নিয়ে পুরো কাজে লাগাই।’’ তার পরেই মমতা বলেন, ‘‘একটা বিরল ব্যাপার হয়েছে।’’ পাশে দাঁড়ানো বর্তমান মুখ্যসচিব ভগবতী প্রসাদ গোপালিককে দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এক সঙ্গে তিন জন কাজ করছেন। দু’জন প্রাক্তন, এক জন বর্তমান মুখ্যসচিব।’’

আমলাদের অবসরের পর তাঁদের মেয়াদ বৃদ্ধি (এক্সটেনশন) করা নতুন বিষয় নয়। কিন্তু মমতা যে ভাবে বয়সের মানদণ্ডের বদলে অভিজ্ঞতাকে বেশি মর্যাদা দিয়েছেন, তাকে অনেকেই শাসকদলের বর্তমান দ্বন্দ্বের সঙ্গে জুড়ে দেখতে চেয়েছেন।

Advertisement

অভিষেক আগেই জানিয়েছিলেন, তিনি মনে করেন সব পেশার মতো রাজনীতিতেও অবসরের বয়স থাকা উচিত। তার পর মমতাকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘‘বয়স আবার কী! মনের বয়সটাই আসল বয়স।’’ এই ‘বৈপরীত্য’ নিয়ে শাসকদলের মধ্যে মত, পাল্টা মত ছিলই। গত ১ জানুয়ারি তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবস থেকে শাসকদলে নবীন-প্রবীণ বিতর্ক নতুন মাত্রা পায়। পরিস্থিতি এমন হয় যে, বছরের প্রথম দিন মমতা-অভিষেক দু’ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বৈঠক করেন। এক দিকে কুণাল ঘোষ, নারায়ণ গোস্বামী, তাপস রায়েরা নবীনদের পক্ষে সওয়াল করেছেন। পাল্টা প্রবীণদের পক্ষে সওয়াল করতে দেখা গিয়েছে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌগত রায়দের।

এই দোলাচল যখন চলছে, তখন ছ’দিন অভিষেক প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করেননি। কিন্তু রবিবার ডায়মন্ড হারবারে বার্ধক্য ভাতা দেওয়ার কর্মসূচিতে গিয়ে অভিষেক ফের তারুণ্যের পক্ষে সওয়াল করেন। সাংসদ বলেন, ‘‘আমি এখন যে কাজ করতে পারছি, তা কি ৭০ বছর হলে করতে পারব?’’ ঠিক তার পরের দিনই মমতা আমলাদের দেখিয়ে বুঝিয়ে দিলেন, তাঁর কাছে প্রবীণ তথা অভিজ্ঞদের পৃথক মূল্য রয়েছে। যা তিনি কাজে লাগাতে চান। সেই কারণে অবসরের পরেও ফের অভিজ্ঞদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনিক স্তরে বললেও রাজনীতিক মহলের অনেকের বক্তব্য, মমতার বার্তা স্পষ্ট। যাঁরা বোঝার তাঁরা নিশ্চয়ই বুঝবেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement